Advertisement
E-Paper

Swimming: ফ্রি স্টাইলেই জল তোলপাড় সত্তরোর্ধ্ব প্রতিযোগীর

কলেজ স্কোয়ার সুইমিং ক্লাবের ইন্ডোরে মূলত বাচ্চাদের সাঁতার শেখানো হয়। রবিবার সেখানে ছিল কচিকাঁচাদের সাঁতার প্রতিযোগিতা।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২২ ০৬:৪৪
অনুপ্রেরণা: কলেজ স্কোয়ারের সুইমিং পুলে রত্না মিত্র। রবিবার।

অনুপ্রেরণা: কলেজ স্কোয়ারের সুইমিং পুলে রত্না মিত্র। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

বয়স তো সংখ্যা মাত্র।

বাকি চার প্রতিযোগী সাঁতার কেটে অপর প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছেন তত ক্ষণে। তবু সুইমিং পুলের চতুর্থ লেনেই আটকে রয়েছে দর্শকদের চোখ। কারণ, সেই লেন দিয়ে তখনও জল তোলপাড় করে এগিয়ে চলেছেন তিনি। ফ্রি স্টাইলে সাঁতার কেটে কলেজ স্কোয়ারের পুলের শেষ প্রান্তে যখন পৌঁছলেন ৭৬ বছরের প্রতিযোগী রত্না মিত্র, দর্শক মহলে তখন হাততালির ঝড়।

কলেজ স্কোয়ার সুইমিং ক্লাবের ইন্ডোরে মূলত বাচ্চাদের সাঁতার শেখানো হয়। রবিবার সেখানে ছিল কচিকাঁচাদের সাঁতার প্রতিযোগিতা। তাদের জন্যেই বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল সাঁতারের লেনগুলি। বয়স অনুযায়ী ছোটদের ভাগ করে সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে মহিলাদের জন্যেও রাখা হয়েছিল একটি বিভাগ। তাতে অবশ্য বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা ছিল না। সেই বিভাগেই প্রতিযোগী হিসাবে নাম দিয়েছিলেন সত্তরোর্ধ্ব রত্নাদেবী। আর যাঁদের সঙ্গে সাঁতার-যুদ্ধে নেমেছিলেন, সেই বাকি চার প্রতিযোগী অবশ্য তাঁর চেয়ে বয়সে অনেকটাই ছোট।

কেমন লাগল এ দিনের অভিজ্ঞতা? জল থেকে উঠে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধার জবাব, ‘‘ওদের সঙ্গে পারব না জানতাম। কিন্তু প্রতিযোগিতাটা ছিল নিজের সঙ্গে। কত কম সময়ে পুরো সুইমিং পুল, অর্থাৎ ২২ মিটার শেষ করতে পারি সেটাই দেখলাম। আমার আর একটু তাড়াতাড়ি শেষ করা উচিত ছিল।’’

তবে সবার শেষে জল থেকে উঠলেও এ দিন তাঁকে ঘিরেই ছিল দর্শকদের আগ্রহ ও কৌতূহল। ক্লাব কর্তা সন্তোষ দাস বললেন, ‘‘যে বয়সে রত্নাদেবী সাঁতারে নামলেন, সেটা আমাদের ক্লাবের একটা রেকর্ড বলা যেতে পারে। উনি দেখিয়ে দিলেন, এই বয়সেও সাঁতার কাটলে কতটা ফিট থাকা যায়।’’

কলেজ স্কোয়ারের কাছে, লেবুতলা পার্কের বাসিন্দা রত্নাদেবীর স্বামী দীপককুমার মিত্রও এ দিন ছিলেন দর্শকদের মধ্যে। স্ত্রী যখন জল তোলপাড় করে এগিয়ে চলেছেন, তখন পাড়ে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে সমানে উৎসাহ জুগিয়ে চলেছিলেন পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, বছর একাশির দীপকবাবু। বললেন, ‘‘এই বয়সে ওর সাঁতারের নেশা পেয়ে বসেছে। রোজ কলেজ স্কোয়ারে সাঁতার অনুশীলনে আসা চাইই। এ ভাবেই এখনও ফিট আছে ও।’’

এ দিনের সবচেয়ে বয়স্ক প্রতিযোগী রত্নাদেবীর জলে নামা শুরু অবশ্য ৬৫ বছর বয়সে! হঠাৎ? রত্নাদেবী বলছেন, ‘‘বয়সটাকে কখনই কিছু মনে হয়নি আমার। দুই মেয়ে। ছোট মেয়েকে যখন সাঁতার শেখাতে আসতাম, তখন থেকেই ইচ্ছে ছিল যে নিজেও শিখব। কিন্তু নানা কারণে তখন হয়ে ওঠেনি। এখন মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, হাতে প্রচুর সময়। তাই ছোট থেকে মনের মধ্যে পুষে রাখা ইচ্ছে পূরণের সুযোগ পেলাম ৬৫ বছর বয়সে এসে।’’

রত্নাদেবী জানাচ্ছেন, প্রেশার, সুগার, থাইরয়েডের মতো সমস্যা রয়েছে তার। তবে সাঁতার কেটে সেগুলি নিয়ন্ত্রণে থাকে। করোনার কারণে গত দু’বছর জলে নামা হয়নি তাঁর। ফলে অসুখগুলিও ফের মাথাচাড়া দিচ্ছিল। তাই পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই ফিরেছেন জলের চেনা জগতে। দীপকবাবু আবার লেবুতলা থেকে প্রতিদিন ভোরে ধর্মতলা পর্যন্ত হেঁটে যান। বলছেন, ‘‘ও সকালে হাঁটতে যায় না আমার সঙ্গে। তবে প্রতিদিন বিকেলে ওর সাঁতারে আসা চাই-ই।’’

swimming pool College Square pool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy