Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Murder

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন একবালপুরের তরুণী, বলছে পুলিশ

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় সাবাকে ফোন করে ডেকে পাঠায় রোহিত। সেই সময়ে রোহিতের স্ত্রী আঞ্জুম বাড়িতে ছিলেন না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১৬
Share: Save:

সাবা খাতুন ওরফে নয়নার সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক ছিল শেখ সাজিদ ওরফে মহম্মদ সাজিদ ওরফে রোহিতের। কিন্তু সাজিদ তাঁকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় ব্ল্যাকমেল করতেন সাবা। আর সেই কারণেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে রোহিত। তবে খুনের পরে নিজেকে বাঁচাতে এবং পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে থানায় নিজেই ফোন করে সে। একবালপুরের তরুণী খুনের ঘটনায় রোহিতকে গ্রেফতারের পরে এমনই তথ্য মিলেছে বলে জানালেন তদন্তকারীরা। রোহিতের পাশাপাশি তার স্ত্রী আঞ্জুম বেগমকে দেহ লোপাটের চেষ্টায় সাহায্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার আদালতে ধৃতদের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজত হয়।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত বুধবার রাত আড়াইটে নাগাদ একবালপুর থানার ৭এফ, এমএম আলি লেনের সামনের ফুটপাত থেকে সাবার বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, রোহিতই ফোন করে বাড়ির সামনে একটি বস্তা পড়ে থাকার কথা জানিয়েছিল। পরে পুলিশ এলে দাবি করে, সিগারেট কিনে ফেরার সময়ে সে বস্তাটি পড়ে থাকতে দেখে। রোহিত আরও জানায়, তাতে ভারী কিছু রয়েছে সন্দেহ হওয়ায় এগিয়ে গিয়ে তার মধ্যে আঙুল দেখতে পায় সে। এর পরেই সে পুলিশে খবর দেয়। ওই ঘটনাতেই শনিবার গভীর রাতে ডেন্ট মিশন রোড এবং ডক্টর সুধীর বোস রোডের মোড় থেকে রোহিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রবিবার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তার স্ত্রীকে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, গত বুধবার সন্ধ্যায় সাবাকে ফোন করে ডেকে পাঠায় রোহিত। সেই সময়ে রোহিতের স্ত্রী আঞ্জুম বাড়িতে ছিলেন না। তিনি ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, সাবা রোহিতের বাড়ি এলে দু’জনে প্রথমে বিয়ার পান করেন। তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। তার পরে সাবা রোহিতকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। তাতে রোহিত রাজি না হলে সাবা ৭০ হাজার টাকা দাবি করেন। পুলিশের দাবি, রোহিত জেরায় জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে দু’জনের মধ্যে গোলমাল শুরু হলে সে রাগের মাথায় সাবাকে গলা টিপে খুন করে। তার পরেই দেহটি কী করে লোপাট করা যায়, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে সে। শেষে আঞ্জুমকে ফোন করে ডেকে পাঠায়।

আরও পড়ুন: খড়ের নৌকায় জলে-খড়ি দুই বাঙালি পর্বতারোহীর

এক তদন্তকারী কর্তা জানাচ্ছেন, ফোন পেয়ে আঞ্জুম একাই ফিরে আসে। দু’জনে মিলে একটি বস্তায় সাবার দেহ পুরে সেটি সেলাইও করে ফেলে। গভীর রাতে বস্তাটি অন্যত্র ফেলে আসবে বলে তারা অপেক্ষা করতে থাকে। এর মধ্যে বাপের বাড়ি থেকে শিশুসন্তানকে নিয়ে এসে, তাকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়েও দেয় ওই দম্পতি। রাত বাড়লে দু’জনে মিলে বস্তাবন্দি দেহটি নিয়ে দূরে ফেলে আসার জন্য বেরোয়। কিন্তু নীচে পৌঁছনোর পরে সেখানে তিন যুবক চলে আসায় ভয় পেয়ে বস্তাটি বাড়ির বাইরের ফুটপাতে রেখেই দু’জনে উপরে উঠে যায়।

পুলিশ সূত্রের খবর, পরে ফের নীচে নেমে আসে রোহিত। সে পাড়ার একটি দোকান থেকে দু’বার সিগারেট কিনে আনে। রাত আড়াইটে নাগাদ সে নিজেই একবালপুর থানায় ফোন করে বস্তা পড়ে থাকার কথা বলে।

তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ তার কথা মেনেও নেয়। পরে সাবার মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করে পুলিশ দেখে, তিনি রোহিতের সঙ্গেই শেষ বার কথা বলেছিলেন। আশপাশের লোকজনের থেকেও পুলিশ রোহিতের সঙ্গে সাবার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানতে পারে। শেষে রোহিতকে আটক করে জেরা করতে শুরু করলে সে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Extramarital affairs EKBALPUR
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE