দাউ দাউ করে জ্বলছে স্টিফেন কোর্ট। ফাইল চিত্র।
দাউ দাউ করে জ্বলছে স্টিফেন কোর্ট। বাঁচার মরিয়া চেষ্টায় সাততলা থেকে লাফ মেরেছিলেন বছর একুশের সৌরভ বারিক। বাঁচেননি। মৃত্যু হয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে।
২০১০ সালের ২৩ মার্চ। পার্ক স্ট্রিটের স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের পরে কেটে গিয়েছে ১২ বছর, একটি যুগ। সৌরভ যে-সংস্থায় কাজ করতেন, এত দিনেও সেই রাওয়তসন্স ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড থেকে কোনও ক্ষতিপূরণ মেলেনি বলে অভিযোগ করলেন সৌরভের বাবা শৈলেন বারিক। ইছাপুরের বাসিন্দা শৈলেনবাবুর দাবি, ওই সংস্থার তরফে কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছিল, স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারানো কর্মীদের পরিবারকে ১২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
রাওয়তসন্স ইঞ্জিনিয়ার্স সংস্থার অ্যাকাউন্টস বিভাগে কাজ করতেন সৌরভ। স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডে সৌরভ-সহ ওই সংস্থার সাত জন মারা যান। অগ্নিকাণ্ডের পরে ওই সংস্থার অফিস উঠে গিয়েছে ফুলবাগান থানা এলাকার একটি শপিং মলের সাততলায়। শৈলেনবাবুর অভিযোগ, ‘‘এই ১২ বছরে একাধিক বার ওই সংস্থার দরজায় কড়া নেড়েও ফল হয়নি। সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।’’
সংস্থার অ্যাকাউন্ট্যান্ট আমোদ খাণ্ডেলওয়াল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘ওই অগ্নিকাণ্ডে আমাদের সংস্থার সাত জন কর্মী প্রাণ হারান। তাঁদের প্রত্যেকের পরিবার পিএফ, গ্র্যাচুইটি পেয়ে গিয়েছে। সরকারের তরফে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা হলা হয়েছিল। মৃতদের পরিবার সেটাও পেয়ে গিয়েছে। এ ছাড়া কারও আত্মীয়স্বজনকে অতিরিক্ত কিছু দেওয়া হয়নি।’’ সংস্থার তরফে বিজ্ঞাপন দিয়ে মাথাপিছু ১২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণার কথাও অস্বীকার করেছেন খাণ্ডেলওয়াল। তাঁর দাবি, ‘‘আমি জোর দিয়ে বলছি, এমন কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি।’’ এর পরে খাণ্ডেলওয়াল জানান, এই বিষয়ে যা বলার, তা ডিরেক্টরই বলতে পারবেন। ওই সংস্থায় ফোন করে ডিরেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাওয়ায় সংস্থার তরফে বেলা ২টোর পরে ফোন করতে বলা হয়। ৩টে নাগাদ ফোন করা হলে জানানো হয়, ডিরেক্টরেরা কেউ আসেননি। তার পরে বাব বার ফোন করেও কোনও সাড়া মেলেনি।
তবে মোটেই দমে যাচ্ছেন না শৈলেনবাবু। জানিয়েছেন, তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। ‘‘আমি লড়ে যাব। আমার ২১ বছরের একমাত্র জলজ্যান্ত ছেলেটা...,’’ গলা বুঝে আসে তাঁর। স্টিফেন কোর্টের আগুন আজও জ্বলছে পুত্রহারা পিতার বুকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy