E-Paper

নিছক দুর্ঘটনাই? মানতে নারাজ অনামিকার বাবা

যাদবপুরের কোনও সান্ধ‍্য অনুষ্ঠানে শিক্ষাঙ্গনে মদ‍, গাঁজা সেবন বা নেশা করার রীতি কার্যত সবার জানা। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সব ছাত্রছাত্রীই নেশায় অভ‍্যস্ত নন। হঠাৎ করে কোনও কিছুর প্রভাবে আচ্ছন্ন হয়েও বিপদ ঘটতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৩৯

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা এক মিনিটে যাদবপুরে আর্টসের ইউনিয়ন রুমের পাশের চিলতে গলিতে অনামিকা মণ্ডল ঢুকছিলেন বলে সিসি ক‍্যামেরার ফুটেজে দেখতে পেয়েছে পুলিশ। এর মিনিট ১০-১২ বাদে আরও জনা তিনেক ছাত্রছাত্রীকে ওই দিকে যেতে দেখা যায় বলে দাবি। আনুমানিক ১০টা ২০-২১ মিনিটে ছাত্রীর দেহ ঝিল থেকে তোলা হয় বলে তদন্তকারীদের অনুমান। কিন্তু মেয়ে হঠাৎ কী ভাবে ঝিলের জলে পড়ে গেলেন, এর সদুত্তর এখনও মেলেনি বলে মনে করছেন অনামিকার মা-বাবা।

বেলঘরিয়ার বাড়িতে এ দিন ওই ছাত্রীর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ২২ বছরের অনামিকার বাবা অর্ণব মণ্ডলের কথায়, “আমার মেয়ে শান্ত, ভদ্র স্বভাবের। মেয়ের আচরণ নিয়ে আমাদের সমস‍্যা ছিল না। একটি ধীরস্থির মেয়ের হঠাৎ করে কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটবে, বা ও জলে ঝাঁপ দেবে সেটা আমাদের বিশ্বাসযোগ্য ঠেকছে না।” মেয়ের কনুইয়ের উল্টো দিকে ছড়ে যাওয়া দাগ দেখেছেন মা-বাবা। অর্ণবের প্রশ্ন, “ওকে কেউ ধাক্কা মারল কি না বা কে ওকে ঝিলের ধারে ডেকে নিয়ে গেল, সেটাও জানতে হবে!” পুলিশের নথিতে এখনও পর্যন্ত শুধু অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা লেখা থাকলেও তাঁদের যাবতীয় সন্দেহ পুলিশকে জানাতে চান অনামিকার বাবা। তিনি বলেন, “সবে মেয়ের কাজ মিটল। অবশ‍্যই আমাদের যা সন্দেহ তা পুলিশকে বলব।”

যাদবপুরের কোনও সান্ধ‍্য অনুষ্ঠানে শিক্ষাঙ্গনে মদ‍, গাঁজা সেবন বা নেশা করার রীতি কার্যত সবার জানা। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সব ছাত্রছাত্রীই নেশায় অভ‍্যস্ত নন। হঠাৎ করে কোনও কিছুর প্রভাবে আচ্ছন্ন হয়েও বিপদ ঘটতে পারে। সিসি ক‍্যামেরায় ওই তরুণীর হাঁটাচলার ভঙ্গি বা ‘গেট প‍্যাটার্ন’ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অর্থাৎ হাঁটাচলার ভঙ্গিতে কোনও অসঙ্গতিও যাচাই করা হচ্ছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ সাবার্বান) বিদিশা কলিতা এ দিন ময়না তদন্তের চিকিৎসক নিয়ে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। একটি বাঁশ ডুবিয়ে জলাশয়ের গভীরতা মেপে দেখা হয়। কোথায় ওই তরুণী পড়েছিলেন, সেটাও দেখা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। বিকেলে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।

ওই সন্ধ‍্যায় অনামিকার সঙ্গীদের কয়েক জনের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলেছে। যাদবপুরের ড্রামা ক্লাবের সদস‍্যদের সঙ্গেও তদন্তকারীরা কথা বলেছেন। মেয়েটির ফোন পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। সংশ্লিষ্ট ডিসি বলেন, “তদন্তে সব দিকই আমরা খতিয়ে দেখছি।” ছাত্র সংগঠন ডিএসএফের বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতের অনুষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও কেন ভবনগুলির শৌচাগার খোলা ছিল না, সে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে এই দুর্ঘটনা ঘটত না বলে তাদের অভিমত।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jadavpur University Student Death Jadavpur University police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy