Advertisement
E-Paper

অফিসে আগুন, ভেঙে পড়ল বহুতলের ছাদ

সকালে সবে একে একে খুলেছিল অফিসগুলি। আচমকাই কর্মীরা দেখলেন, বাড়ির এক পাশের পাঁচতলা থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। আচমকাই জোরে কিছু ফাটার শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে নীচে নেমে আসেন সকলে। এর পরেই বাড়িটির পাঁচতলার ওই অংশে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৭
বিধ্বংসী: জ্বলছে বহুতলের পাঁচতলার অফিস। শুক্রবার, চৌরঙ্গি রোডে। নিজস্ব চিত্র

বিধ্বংসী: জ্বলছে বহুতলের পাঁচতলার অফিস। শুক্রবার, চৌরঙ্গি রোডে। নিজস্ব চিত্র

সকালে সবে একে একে খুলেছিল অফিসগুলি। আচমকাই কর্মীরা দেখলেন, বাড়ির এক পাশের পাঁচতলা থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। আচমকাই জোরে কিছু ফাটার শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে নীচে নেমে আসেন সকলে। এর পরেই বাড়িটির পাঁচতলার ওই অংশে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।
শুক্রবার সকালে এমনই বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গেল চৌরঙ্গি রোডের একটি বহুতলের পাঁচতলার অফিস। দমকলের ১২টি ইঞ্জিন প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। আগুনের তীব্রতায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে পাঁচতলার ঘরটির ছাদ। যদিও এ ঘটনায় কোনও হাতাহতের খবর নেই। প্রাথমিক তদন্তে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিটের ফলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে প্রথম আগুন লেগেছিল। তা থেকেই সারা ঘরে আগুন ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু-সহ পুলিশ ও দমকলকর্তারা।
৬০ নম্বর চৌরঙ্গি রোডের ওই ‘মুখার্জি বিল্ডিং’-এর তিনটি ব্লক রয়েছে। রাস্তার সামনের দিকের ‘এ’ ব্লকটি ছ’তলা। পাশে বিশপ লেফ্রয় রোডের দিকে ‘সি’ ব্লকে রয়েছে একটি অনুষ্ঠান বাড়ি। ওই দু’টি ব্লকের পিছনের অংশটি ‘বি’ ব্লক। তারই পাঁচতলায় সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ আগুন লাগে। এ এবং বি ব্লক মিলিয়ে মোট ১৩টি অফিস রয়েছে। একটি অফিসের কর্মী নান্টু সেন বলেন, ‘‘সবে অফিসে ঢুকেছি। আচমকাই দেখি, ধোঁয়া বেরোচ্ছে। এর পরেই ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে। নিজেরা বেরিয়ে আসার পাশাপাশি আর যে কয়েক জন অন্য অফিসে এসেছিলেন, তাঁদেরও ডেকে নিয়ে নীচে নেমে আসি।’’
বি ব্লকের পাঁচতলায় অন্দরসজ্জার একটি অফিস রয়েছে। তার নীচের তলায় একই মালিকের একটি মাল্টিমিডিয়া সেন্টার রয়েছে। সেখানকার এক ছাত্র বিক্রম সাহা বলেন, ‘‘ধোঁয়া বেরোচ্ছে দেখে উপরে গিয়ে দেখি, একটি এসি পুড়ে গিয়েছে। ঘটনাটি জানাতে
স্যরদের ফোন করছিলাম। তার মধ্যে এসি-টা ফেটে গেল। দেখি দাউদাউ করে আগুন ধরে গেল ফল্‌স সিলিংয়ে। এর পরে আমরা সকলে নীচে নেমে আসি।’’ এ দিন ওই মাল্টিমিডিয়া সেন্টারের অনেক ছাত্রছাত্রীকে বহুতলের নীচে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ওই বহুতলেই টায়ার সংস্থার অফিস রয়েছে শঙ্খ দত্ত নামে এক যুবকের। তিনি জানান, ধোঁয়া ও ফায়ার অ্যালার্ম বাজতে দেখে তিনি দমকল ও পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ভবানীপুর থানার পুলিশ ও দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন প্রথমে ঘটনাস্থলে আসে।
কলকাতা পুরসভার ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের বহু পুরনো ওই বহুতলের বি ব্লকের সিঁড়ি দিয়ে প্রথমে পাঁচতলায় পৌঁছন দমকলকর্মীরা। তাঁরা জানান, ঘরে প্রচুর কাঠের জিনিস থাকায় আগুন সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় কাউন্সিলর অসীম বসু জানান, সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ
দমকলকর্মীরা জল ঢালার সময়েই আগুনের তাপে ছাদটিও ভেঙে পড়ে। ফাটল ধরে যায় দেওয়ালেও। এর পরেই দমকলকর্মীরা সি ব্লকের অনুষ্ঠান বাড়িটির ছাদে গিয়ে সেখান থেকে জল দিতে শুরু করেন। আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকায় ঘটনাস্থলে আসেন দমকল দফতরের ডিজি জগ মোহন এবং কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খলিদ। গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় বিশপ লেফ্রয় রোডে। ভেঙে পড়া কংক্রিটের চাঁইয়ের নীচে আগুন রয়েছে কি না, দেখতে কাজ শুরু করে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরও।
ঘটনার পরে গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। তিনটি ব্লকেই কাউকে উপরে উঠতে দেওয়া হয়নি। এ ব্লকের ছ’তলায় থাকে ৭-৮টি পরিবার। সেখানকার বাসিন্দা মণীশ সিংহ জানান, কালো ধোঁয়ার আর আগুনের তাপের জেরে ঘরে থাকা যাচ্ছিল না। তখনই সব বাসিন্দারা সিঁড়ি বেয়ে নীচে এসে রাস্তায় বসে পড়েন। এ দিন ঘটনাস্থলে এসে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘এসি থেকেই আগুন লেগেছে বলে শুনেছি। ফলস্ সিলিং, আসবাবপত্র থাকাতেই আগুন আরও ছড়িয়েছে। তবে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেছে। বিল্ডিংয়ের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কী ছিল এবং নির্মাণের নকশা কী রয়েছে, সবই খতিয়ে দেখা হবে।’’

Fire Accident Exide Chowringhee Road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy