দাউদাউ: জ্বলছে হাওড়ার ফোর্ট উইলিয়াম চটকল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
সারা সপ্তাহ কাজের পরে কারও আয় ৪০০ টাকা। কেউ হাতে পান ২০০। তবে রবিবার সপ্তাহ শেষের সেই আয় নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারলেন না হাওড়ার ফোর্ট উইলিয়াম চটকলের বেশ কয়েক জন শ্রমিক। কারণ, এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ ওই চটকলে আগুন লাগে। দ্রুত ছড়িয়ে পড়া সেই আগুনে বহু সামগ্রীর পাশাপাশি ছাই হয়ে যায় তাঁদের সপ্তাহভরের উপার্জনও। যামিনী মান্না নামে এক শ্রমিক বললেন, ‘‘যে আলমারিতে আমরা জিনিসপত্র রাখি, সেটাও পুড়ে গিয়েছে। আজই এ সপ্তাহের দু’শো টাকা হাতে পেয়েছিলাম।’’ তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
এ দিন সকালে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে ফোর্ট উইলিয়াম চটকল থেকে। জানা যায়, কারখানার ব্যাচিং বিভাগে আগুন ধরে গিয়েছে। ওই বিভাগে প্রচুর চট মজুত থাকায় মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মিলের নিজস্ব অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা চালু করে প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন কর্মীরাই। কিন্তু আগুন বাগে আনা যায়নি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের চারটি ইঞ্জিন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ।
ওই সময় মিলে কর্মরত এক শ্রমিক জানান, সকালের দিকে তাঁরা দশ জন কাজ করছিলেন। হঠাৎ ধোঁয়া দেখে ছুটে বেরোনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তত ক্ষণে ব্যাচিং বিভাগ দাউদাউ করে জ্বলছে। নিজেরাই জল দিয়ে এবং মিলের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা চালু করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও পেরে উঠছিলেন না। শেষে দমকলের চারটি ইঞ্জিন প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুনের জেরে রাত পর্যন্ত মিলের উত্তাপ ছিল যথেষ্ট বেশি। সেখানকার এক কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের মিলের একটা অংশ অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে। আমরা যে আলমারিতে পোশাক রাখি, সেটাও পুড়ে যায়। সেখানেই ছিল এ দিন পাওয়া টাকা।’’
ওই চটকল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চার হাজার লোক সেখানে কাজ করেন। অগ্নিকাণ্ডের জেরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার স্পষ্ট হিসেব এখনও মেলেনি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর বলেই মনে করছেন কর্মীরা। পাশাপাশি কীসের থেকে আগুন লাগল, তা-ও জানা যায়নি। তদন্তের পরে দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। দমকলের হাওড়ার স্টেশন অফিসার বিনয়কুমার বর্মণ বলেন, ‘‘এই মিলের ওয়্যারিং বহু পুরনো। দ্রুত বদলানো প্রয়োজন। মনে হচ্ছে, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy