Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Ushoshi Sengupta

রাতের কলকাতায় একদল যুবকের হাতে প্রাক্তন ‘মিস ইন্ডিয়া’র হেনস্থা, গ্রেফতার ৭

অভিযোগে ঊষসী জানিয়েছেন, সোমবার কাজ শেষ করে বাইপাসের ধারের একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে এক সহকর্মীর সঙ্গে উব্‌রে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত তখন পৌনে ১২টা। এক্সাইড মোড় থেকে গাড়ি এলগিন রোডের দিকে যেতেই একটি বাইক এসে উব্‌রে ধাক্কা মারে।

মডেল-অভিনেত্রী ঊষসী সেনগুপ্ত।

মডেল-অভিনেত্রী ঊষসী সেনগুপ্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৯ ১৯:১৬
Share: Save:

কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে মাঝরাতে একদল যুবকের হাতে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুললেন মডেল-অভিনেত্রী ঊষসী সেনগুপ্ত। যে উব্‌রে চড়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন, তাতে ধাক্কা মারার পাশাপাশি চালককে মারধর করা এমনকি বেশ কয়েক কিলোমিটার ধাওয়া করে এসে তাঁকে গাড়ি থেকে টেনে নামানোর চেষ্টাও করা হয়। হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় মোবাইল। পুলিশের কাছে জানাতে গেলে এটা এই থানার বিষয় নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়— এমনটাও অভিযোগ করেছেন তিনি। পুলিশ যদিও অভিযোগ পেয়ে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা হল— শেখ রাহিত, ফারদিন খান, শেখ সাবির আলি, শেখ গনি, শেখ ইমরান আলি, শেখ ওয়াসিম, আতিফ খান।

অভিযোগে ঊষসী জানিয়েছেন, সোমবার কাজ শেষ করে বাইপাসের ধারের একটি পাঁচতারা হোটেল থেকে এক সহকর্মীর সঙ্গে উব্‌রে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত তখন পৌনে ১২টা। এক্সাইড মোড় থেকে গাড়ি এলগিন রোডের দিকে যেতেই একটি বাইক এসে উব্‌রে ধাক্কা মারে। এর পরে উব্‌র থামতেই ওই বাইকচালক এবং তাঁর বন্ধুরা এসে ঝামেলা শুরু করেন। তাঁরাও অন্য কয়েকটি বাইকে যাচ্ছিলেন। উব্‌রচালককে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে ঘটনাস্থলে অন্তত ১৫ জন যুবক ছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ঊষসী।

এই অভিযোগের কথা ফেসবুকেও লিখেছেন তিনি। সেখানে ঊষসী লিখেছেন, ‘‘আমি গাড়ি থেকে নেমে ভিডিয়ো করতে শুরু করি। দৌড়ে ময়দান থানায় যাই। এক অফিসার দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ওটা ভবানীপুর থানার ঘটনা। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করি, আপনি চলুন, না হলে ড্রাইভারকে মেরে ফেলবে। উনি গিয়ে ওদের বলেন, ঝামেলা করছ কেন? ওরা অফিসারকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। সব কিছু মিটে যাওয়ার পর ভবানীপুর থানা থেকে দু’জন অফিসার গিয়েছিলেন। আমি ভেবেছিলাম আজ সকালে পুলিশে জানাব।’’

আরও পড়ুন: জাত তুলে নিগ্রহ প্রমাণিত হলেই কড়া শাস্তি: পার্থ

কিন্তু এর পরও দুর্ভোগ শেষ হয়নি তাঁদের। লেক গার্ডেন্সে ঊষসী তাঁর সহকর্মীকে নামাতে যান। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারেননি, ওই যুবকেরা বাইকে চেপে তাঁদের পিছু নিয়েছিলেন! লেকগার্ডেন্সে উব্‌র থামতেই তিনটে বাইকে চড়ে আসা ছ’জন যুবক ঊষসীকে গাড়ি থেকে টেনে নামানোর চেষ্টা করেন। তিনি গাড়ি থেকে নেমে আসতেই তাঁকে ওই ভিডিয়ো ডিলিট করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ঊষসী লিখছেন, ‘‘পাশের পাড়াতেই আমি থাকি। ভয় পেয়ে চিত্কার করি। বাবা-বোনকে ফোন করি। সেই চিৎকার শুনে ওই যুবকেরা পালিয়ে যায়।’’

ঊষসীর অভিযোগ, পুলিশের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়েও তাঁকে হেনস্থা হতে হয়েছে। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমি চারু মার্কেট থানায় যাই। ওখান থেকেও আমাকে বলা হয় ভবানীপুর থানাই একমাত্র ব্যবস্থা নিতে পারবে।’’ তিনি লিখেছেন, ‘‘অনেক বাদানুবাদের পর চারু মার্কেট থানা একটি এফআইআর নেয়। কিন্তু উব্‌রচালক আলাদা অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে পুলিশ জানায়, একই অভিযোগে দুটো এফআইআর নেওয়া আইন বিরুদ্ধ।’’

আরও পড়ুন, পথহারা ভিন্‌দেশি পরিবার, মিলিয়ে দিলেন পুলিশকর্মীরা

চারুমার্কেট থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঊষসীর এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করার পর খতিয়ে দেখা হয় ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। তার পরেই ওই ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের দাবি, ওই উব্‌রটি তাঁদের এক বন্ধুর বাইকে এসে ধাক্কা মারে। তাতে বাইকটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাইক সারানোর ক্ষতিপূরণ চাওয়াকে কেন্দ্র করেই বচসার সূত্রপাত। মারধর এবং হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁরা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের সকলের বাড়ি আনোয়ার শাহ রোড, যাদবপুর এলাকায়।

ঊষসী ২০১০-এ ‘মিস ইন্ডিয়া’র খেতাব জিতেছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে কলকাতার প্রতিনিধিত্বও করেছেন তিনি। এ দিন বারংবার তাঁর সঙ্গে চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে ফেসবুকে নিজের অভিযোগের কথা লিখে ঊষসী সেখানে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এ কোন কলকাতা?’

(শহরের সেরা খবর, শহরের ব্রেকিং নিউজ জানতে এবং নিজেদের আপডেটেড রাখতে আমাদের কলকাতা বিভাগ পড়ুন।)

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE