Advertisement
E-Paper

চার ‘গোয়েন্দা মা’য়ের জন্য সন্তান ফিরে পেলেন সরস্বতী

চার মায়ের গোয়েন্দাগিরি আর এক মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল সন্তানকে। টিনা সাধুখাঁ, রেখা দাস, সোমা জানা ও টুম্পা দাস— মুরারিপুকুর এলাকার এই চার মায়ের সতর্ক চোখ আর উপস্থিত-বুদ্ধিতেই সন্তান হারানোর আট ঘণ্টার মধ্যে তাকে ফিরে পেলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি সরস্বতী নস্কর।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০১:৪২
গোয়েন্দা-মা। ওই চার জন। ছবি: শৌভিক দে

গোয়েন্দা-মা। ওই চার জন। ছবি: শৌভিক দে

চার মায়ের গোয়েন্দাগিরি আর এক মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিল সন্তানকে।

টিনা সাধুখাঁ, রেখা দাস, সোমা জানা ও টুম্পা দাস— মুরারিপুকুর এলাকার এই চার মায়ের সতর্ক চোখ আর উপস্থিত-বুদ্ধিতেই সন্তান হারানোর আট ঘণ্টার মধ্যে তাকে ফিরে পেলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি সরস্বতী নস্কর। চার মহিলাই সরস্বতীর শ্বশুরবাড়ির পাড়ায় থাকেন। আর হাসপাতাল থেকে যে মহিলা সরস্বতীর শিশুটিকে চুরি করেছিলেন বলে অভিযোগ, সেই চিন্ময়ী বেজও থাকেন ওই পাড়ায়।

কী ভাবে চিন্ময়ীর বাড়িতে সরস্বতীর শিশুকে পাওয়া গেল? বুধবার ওঁরা জানান, কিছু দিন ধরে চিন্ময়ী বলছিলেনে, তিনি সন্তানসম্ভবা। মঙ্গলবার বিকেলে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে চিন্ময়ীকে বাড়িতে ঢুকতে দেখেই সন্দেহ হয় টিনার। সকালেও চিন্ময়ীকে পাড়ায় দেখা গিয়েছে। বিকেলের মধ্যে ছেলে কোলে কী ভাবে বাড়িতে এলেন? রেখা, সোমা আর টুম্পাকে নিয়ে চিন্ময়ীর বাড়িতে যান টিনা। সন্তান কোথায় হল, চার জনেই আলাদা করে চিন্ময়ী ও তাঁর শাশুড়ি ভারতী বেজকে জিজ্ঞাসা করেন। এক-এক বার, এক-এক রকম উত্তর মেলে। ‘‘ওরা কখনও বলে, ট্যাক্সিতে বাচ্চা হয়েছে। কখনও বলে, বেলেঘাটা শিশু হাসপাতালে হয়েছে। কখনও বলে, হাসপাতালের সামনেই ছেলে হয়ে গিয়েছে। এতেই মনে হয়, কোথাও গণ্ডগোল আছে,’’ বলেন রেখা।

সন্দেহের কারণ আরও ছিল। রেখা বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা মা। সন্তান জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে মা এবং সন্তানের শারীরিক অবস্থা কেমন থাকে, তা জানি। শিশুটিকে দেখে সে দিনই জন্মেছে বলে মনে হচ্ছিল না। চিন্ময়ী যে ভাবে হাঁটাচলা করছিল, তা দেখে আমাদের সন্দেহ বেড়ে যায়।’’

আরও পড়ুন: পেটে বালিশ বেঁধে ঘুরত, গর্ভপাত ঢাকতেই শিশু চুরি করেছিল চিন্ময়ী

ওই সন্তানই যে সরস্বতীর, তা কখন বুঝলেন? মঙ্গলবার সোমার স্বামী নিজেই নস্কর পরিবারের সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজে ছিলেন। তিনি ফোনে শিশু চুরির বিষয়টি বাড়িতে জানান। বলেন, যে মহিলা শিশু চুরি করেছে, তার ছবি টিভিতে দেখাচ্ছে। ‘‘আমরা টিভি দেখে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ ফের বেজ-বাড়িতে যাই। তখনই দেখি, চিন্ময়ীর আলনায় সবুজ রঙের শাড়িটা টাঙানো,’’ বললেন সোমা।

তখন বাড়িতে এক ডাক্তার এসে দেখছিলেন শিশুটিকে। তাঁরও শিশুটিকে সদ্যোজাত বলে মনে হয়নি। তা শুনেই টুম্পারা শিশুটিকে আবার দেখতে চান। জুটে যান পাড়ার আরও মহিলা। শিশুটির শুকিয়ে যাওয়া নাড়ি দেখে আর দেরি করেননি কেউ। খবর যায় স্থানীয় কাউন্সিলর আর পুলিশে।

শিশুটিকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব খুশি চার জন।

Four women baby rescue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy