—প্রতীকী চিত্র।
পোস্টারে বড় বড় করে লেখা, ‘সব থেকে বড় হোলি পার্টি।’ স্থান হিসাবে দেওয়া শহরের এক নামজাদা পার্কের নাম। বেলার দিক থেকে শুরু হওয়া কয়েক ঘণ্টার পার্টিতে থাকছে দেদার খাওয়াদাওয়া, অফুরান পানীয়ের ব্যবস্থা। বিজ্ঞাপনী পোস্টারের নীচে রয়েছে, দু’জনের প্রবেশের জন্য মোটা ছাড় দিয়ে ‘এন্ট্রি ফি’-র উল্লেখ।
দিনকয়েক আগে সামাজিক মাধ্যমে এমনই পোস্টার দেখে উৎসাহী হন যাদবপুরের এক যুবক। পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ওই যুবকের কথায়, ‘‘সামাজিক মাধ্যমে পাওয়া পোস্টারের নীচে লিঙ্ক ছিল। সেখানে ক্লিক করতেই একটি গ্রুপে যোগ করানো হয়। পরে বলা হয়, হোলি পার্টির টিকিট পেতে টেলিগ্রাম গ্রুপের লিঙ্কে ক্লিক করে পার্টির প্রবেশমূল্য দিতে হবে।’’ তখনই সাইবার প্রতারকদের ফাঁদে পড়েছেন বুঝতে পেরে সে পথে আর এগোননি যুবক। লিঙ্কে ক্লিক না করেই গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
রঙের উৎসবের দিনকয়েক আগে থেকে হোলি পার্টির পাসের প্রলোভন দেখিয়ে শহরে সক্রিয় হয়েছে সাইবার প্রতারকেরা। কখনও টিকিটের মূল্যে মোটা ছাড়ের কুপন, কখনও পার্টিতে বিনামূল্যে পানীয়ের কুপনের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা যদিও গোটাটাকেই প্রতারণার ‘মোড়ক বদল’ বলে জানাচ্ছেন। সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘যে কোনও উৎসবের আগেই তাল মিলিয়ে সাইবার প্রতারণার ধরন বদলায় প্রতারকেরা। পুজো থেকে শুরু করে বর্ষবরণ— যে কোনও বড় উৎসবের আগে ধরন বদল হয়। হোলির আগে যে হেতু এমন পার্টির চাহিদা থেকে, তারই সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকেরাও। এ ক্ষেত্রে সাবধান না হলেই বিপদ।’’
দোল বা হোলিকে কেন্দ্র করে শহরে একাধিক পার্টির আয়োজন হয়। কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে টিকিট সংগ্রহ করে কমবয়সিদের মধ্যে সেই পার্টিতে যাওয়ার চাহিদাও থাকে প্রতি বছর। সেখানে থাকে খাওয়াদাওয়া, নাচ-গান হুল্লোড়ের আয়োজন। সেই সুযোগ নিয়েই সাইবার প্রতারকেরা সক্রিয় হচ্ছে বলে মনে করছেন লালবাজারের বিশেষজ্ঞেরা। ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এই নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে বলেও কর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ কর্তারা জানাচ্ছেন, যে কোনও ধরনের অস্বাভাবিক ছাড়, বিনামূল্যের পুরস্কার জেতার প্রলোভনের আড়ালে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধ লুকিয়ে থাকে। এই নিয়ে পুলিশের তরফে বার বার সচেতন করার প্রয়াসও চলছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘যে হেতু পুলিশের তরফে বিভিন্ন ভাবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করায় জোর দেওয়া হয়েছে, তাই সাইবার প্রতারকেরা বার বার অপরাধের মোড়ক বদলানোর চেষ্টা করছে। তবে সাইবার অপরাধ বন্ধে অভিযোগের দ্রুত তদন্তের পাশাপাশি সচেতনতার প্রচার চালু থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy