Advertisement
E-Paper

বারবার বলেও কেন নেই নজর-ক্যামেরা

জি ডি বিড়লার ঘটনার পরে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে রানিকুঠির ওই স্কুলে একই রকম অভিযোগ উঠেছিল। তার পরেও ওই স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসেনি। শুধু স্কুলে নয়, স্কুলবাসেও ক্যামেরার নজরদারি নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১১
বিক্ষোভ: স্কুলের বাইরে ভেঙে পড়েছে অভিভাবকদের ভিড়। সামাল দিতে ডাকতে হয়েছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

বিক্ষোভ: স্কুলের বাইরে ভেঙে পড়েছে অভিভাবকদের ভিড়। সামাল দিতে ডাকতে হয়েছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

আদালত থেকে সরকার, সব পক্ষের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রতি বছরই অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের বৈঠকে প্রসঙ্গটি ওঠে। তবু কাজের কাজ কিছু হয় না। বৃহস্পতিবার জি ডি বিড়লা স্কুলের ঘটনা ফের সেই প্রশ্নটাকেই সামনে এনে দিয়েছে— অধিকাংশ স্কুলে কেন প্রাথমিক নিরাপত্তার ব্যবস্থাটুকুও থাকবে না?

অথচ, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, স্কুল এবং স্কুলবাসে পর্যাপ্ত সংখ্যায় সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকলে নিরাপত্তা অনেকটাই আঁটোসাঁটো করা যায়। অন্তত পর্যাপ্ত নজরদারির সুযোগ বেশি থাকে।

জি ডি বিড়লার ঘটনার পরে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে রানিকুঠির ওই স্কুলে একই রকম অভিযোগ উঠেছিল। তার পরেও ওই স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসেনি। শুধু স্কুলে নয়, স্কুলবাসেও ক্যামেরার নজরদারি নেই।

অনেক অভিভাবকেরই অভিযোগ, স্কুলে যেমন সিসি ক্যামেরার নজরদারি নেই, তেমন এই গোত্রের স্কুলগুলির উপরে সরকারেরও কোনও নজরদারি নেই। সরকারের কেউ অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি।

তবে সব স্কুলেই অবস্থাটা এমন নয়। লা মার্টিনিয়ার বয়েজ ও গার্লস স্কুলে প্রায় সাড়ে সাতশো সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ক্যালকাটা বয়েজ স্কুলের প্রতিটি ক্লাসে ও বারান্দায় ১২০টি ক্যামেরা দিনরাত নজরদারি চালাচ্ছে। রামমোহন মিশন হাইস্কুলেও ৫২টির মতো সিসি ক্যামেরা কাজ করে চলছে। সম্প্রতি ধূপগুড়ির নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন, আর্মি পাবলিক স্কুল, ঝাড়গ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের মতো স্কুলেও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। তবে বহু স্কুল এমনও আছে, যেখানে সিসি ক্যামেরার নামগন্ধ নেই।

বিভিন্ন স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন, এমন এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘মূলত প্রতিটি ক্লাসরুম, বারান্দা, শৌচালয়, প্রবেশপথ, পড়ুয়াদের হস্টেলে ও ঢোকার পথে ক্যামেরা লাগানো হয়।’’ এতে পরীক্ষার সময়ে নকল ধরা যায় সহজে। সাধারণ সময়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়ারা কী করছেন— তা ক্যামেরায় ভেসে ওঠে। আবার স্কুল চত্বরের কোনও জায়গায় যাওয়া নিষেধ থাকলেও কেউ যদি নিয়ম ভাঙে, তা হলে ক্যামেরার সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেই ছবি পৌঁছে যাবে কর্তৃপক্ষের মোবাইলে। এমনকী, সীমারেখা অতিক্রম করলে অ্যালার্মও বাজতে শুরু করবে।

কী রকম খরচ হয় সিসি ক্যামেরা লাগাতে?

একটি ভাল মানের নজরদারি ক্যামেরার দাম চার-সাড়ে চার হাজার টাকা। ক্লাসরুমে বসানোর জন্য দু’টি ক্যামেরার খরচ আট হাজার টাকা। ক্লাসে ৪০ জন পড়ুয়া থাকলে তারা এককালীন ২০০ টাকা দিলেই ক্যামেরার দাম উঠে আসবে। একটি গোটা স্কুলে সিসি ক্যামেরা লাগাতে সাড়ে চার থেকে সাত লক্ষ টাকা খরচ হয়। এই টাকা খরচ করে এক বার সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরে বিদ্যুতের বিল ছাড়া আর তেমন খরচ নেই। কারণ, তিন বছরের মধ্যে কিছু সমস্যা হলে তা বিনা খরচে সংস্থাই ঠিক করে দেয়। ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের থেকে বেতন বাবদ বেসরকারি স্কুলগুলি যে পরিমাণ টাকা নেয়, তাতে এককালীন খরচ করে অনায়াসে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে নেওয়া যায়। আর নিরাপত্তার কারণে অভিভাবকেরা তাতে আপত্তি করবেন বলেও মনে হয় না।’’

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘বাসে জিপিএস এবং সিসি ক্যামেরা থাকলে যে কোনও অভিভাবক বাসের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন। এমনকী, নির্দিষ্ট সময়ে তাঁর সন্তান কী করছে, তা-ও জানতে পারবেন।’’

স্কুলের মতোই বাসে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়েও গড়িমসি রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। এক কর্তা বলেন, ‘‘এখন অধিকাংশ স্কুলবাসেই সিসি ক্যামেরা আছে। তবে যারা বসায়নি, তাদের আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে তা করে ফেলতে হবে। সঙ্গে বসাতে হবে জিপিএস-ও।’’

Sexual Assault জি ডি বিড়লা স্কুল GD Birla School G.D. Birla Centre for Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy