পথ-বিধি ভঙ্গ পুলিশেরও। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
নিজের সুরক্ষা নয়, কেবলমাত্র জরিমানা থেকে বাঁচতে কারও মাথায় ওঠে ভাঙা হেলমেট। কেউ ফিতেবিহীন হেলমেট লাগিয়েই চালান মোটরবাইক। আবার কেউ হেলমেটের ফিতে থাকলেও তা ঠিক করে লাগান না। আর এই অসচেতনতার ফলেই হেলমেট পরা সত্ত্বেও দুর্ঘটনায় মৃত্যু হচ্ছে বাইকচালক বা আরোহীর।
হেলমেটহীন বাইকচালকদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেলেও অনেক ক্ষেত্রেই ঠিক ভাবে হেলমেট ব্যবহার না করা বাইক-আরোহীদের বিরুদ্ধে তাদের গা-ছাড়া ভাব লক্ষ করা যায় বলে অভিযোগ। অনেকেই সুরক্ষার কথা না ভেবে কার্যত পুলিশি জরিমানা বা হয়রানি থেকে বাঁচতেই যেমন তেমন হেলমেটে মাথা ঢেকে পথে নামেন। তাতে না থাকে সামনের চোখ ঢাকা কাচ, না থাকে ফিতে থেকে শুরু করে অন্যান্য সুরক্ষার বন্দোবস্ত।
বাইক দুর্ঘটনার জেরে প্রাণহানি কমাতে গত ডিসেম্বরেই হেলমেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক। তাতে চলতি বছরের জুন থেকে সেই নির্দেশ বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়। নির্দেশিকায় জানানো হয়, বাইক-আরোহীদের বুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস) স্বীকৃত এবং ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড মার্ক (আইএসআই) দেওয়া হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। এই বিধি না মানলে পুলিশ ট্র্যাফিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা বা জরিমানা করার পাশাপাশি ওয়েস্ট বেঙ্গল মোটর ভেহিকলস্ অ্যাক্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেই পুলিশের নজরদারির অভাব চোখে পড়ছে বলে অভিযোগ। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অগস্ট পর্যন্ত ঠিক ভাবে হেলমেট না পরার জন্য ৮১৬ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীদের একাংশই স্বীকার করে নিচ্ছেন, আইনভঙ্গকারীদের সংখ্যা আদতে অনেক বেশি। রুবি মোড়ের এক ট্র্যাফিক পুলিশের কথায়, ‘‘হেলমেট পরার উপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়। কিন্তু ভাল মানের হেলমেট ঠিক ভাবে পরা হয়েছে কি না, সেটা সব সময়ে দেখা হয় না। তা হলে প্রতিটি বাইককে দাঁড় করিয়ে পরীক্ষা করতে হবে! সেটা সব সময়ে সম্ভব নয়।’’ আর এই ‘সম্ভব নয়’-এর ফাঁক গলেই বেরিয়ে যাচ্ছেন বাইকচালকদের একাংশ।
বিষয়টি চিন্তায় রাখছে ট্র্যাফিক কর্তাদেরও। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘এটি মূলত সচেতনতার অভাব। ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে ঠিক হেলমেট ব্যবহারে উপরে জোর দেওয়া হয়। এই বিষয়ে প্রচার চালানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। সচেতনতা বাড়লেই সমস্যা কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy