Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Health

Swasthya Sathi: প্রতিশ্রুতি বিমার টাকা দিতে হবে হাসপাতালকেই! অর্থসঙ্কটের আশঙ্কা

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য দু’ভাবে বিমার টাকা দেওয়া হয়। এক, সাধারণ বিমা ও দ্বিতীয়, প্রতিশ্রুতি বিমা স্কিমে।

প্রতীকী ছবি।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৭:৩৭
Share: Save:

‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের জন্য রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির ইতিমধ্যেই কোটি কোটি টাকা বকেয়া হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এ বার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রতিশ্রুতি বিমায় (অ্যাশিয়োরেন্স স্কিম) টাকা না-পাওয়ায় সরকারি হাসপাতালগুলির উপরেও চাপছে কোটি কোটি টাকা ঋণের বোঝা। অভিযোগ, নিত্যদিনের খরচ সামলে ঋণ মেটাতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এ নিয়ে চাপা প্রতিবাদ দানা বাঁধছে হাওড়া-সহ বেশ কয়েকটি জেলার স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে। এ ভাবে চললে দ্রুত সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়বে বলেই মনে করছেন একাধিক জেলা স্বাস্থ্যকর্তারা।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য দু’ভাবে বিমার টাকা দেওয়া হয়। এক, জেনারেল ইনশিয়োরেন্স বা সাধারণ বিমা এবং দ্বিতীয় পদ্ধতি হল, অ্যাশিয়োরেন্স বা প্রতিশ্রুতি বিমা স্কিমে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে দুটো স্কিমেই টাকা পাওয়া যায়। জেলা হাসপাতালগুলির বক্তব্য, প্রথম দিকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সাধারণ বিমার আওতায় বেশি রাখা হত। পরে ৯৫ শতাংশ কার্ডই প্রতিশ্রুতি বিমার আওতায় আনা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি বিমার টাকা দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু একাধিক জেলার স্বাস্থ্য দফতরের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে সরকারি হাসপাতালগুলিকে রাজ্য এই বিমার খাতে মাঝে মাঝে টাকা দিচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই মুহূর্তে ওই টাকা দেওয়া যাবে না। সব টাকা জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিকেই মেটাতে হবে।

সরকারের এই ঘোষণায় কার্যত মাথায় হাত পড়েছে বিভিন্ন জেলার হাসপাতালগুলির। কারণ, এর অর্থই হল, সরকারি হাসপাতালের পরীক্ষাগারে যে হেতু সব রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই, তাই বেসরকারি পরীক্ষাগার থেকে পরীক্ষা করাতে বা ভর্তি হওয়া রোগীর জন্য বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কিনতে প্রয়োজনীয় অর্থ সরকারি হাসপাতালকেই মেটাতে হবে। এমনকি, রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোর সময়ে পথের খরচ বাবদ যে ২০০ টাকা দেওয়া হয়, তা-ও এখন থেকে হাসপাতালকেই মেটাতে হবে।

জেলা স্তরের সরকারি হাসপাতালের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বেসরকারি পরীক্ষাগার ও ওষুধ সংস্থার কাছে এক-একটি হাসপাতালের কয়েক কোটি টাকা করে বকেয়া হয়ে গিয়েছে। ওই সংস্থাগুলির কাছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কয়েক কোটি টাকা বকেয়া থাকায় গত ছ’মাস ধরে একাধিক ওষুধের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছিল। ফলে সমস্ত সরকারি হাসপাতালে ওষুধের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। এখন তা মিটলেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের প্রতিশ্রুতি বিমার টাকা হাসপাতালের কোষাগার থেকে দিলে ফের মুখ থুবড়ে পড়বে সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো। এক সরকারি হাসপাতালের কর্তাও বলছেন, ‘‘এ ভাবে চললে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আগামী দিনে তীব্র সঙ্কটে পড়বে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি। তীব্র অর্থসঙ্কটের জেরে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবাও ব্যাহত হবে।’’

এই অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের অ্যাশিয়োরেন্স স্কিমের টাকা যে রাজ্য সরকার দেবে না, সেটা আগেই জেলাগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা অন্য স্কিম থেকে দেওয়া হবে। তবে এর জন্য জেলার সরকারি হাসপাতালগুলির অনেক ঋণ হয়ে গিয়েছে, এ কথা ঠিক নয়। আমরা মাঝে মাঝে টাকা দিচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Health Insurance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE