Advertisement
১১ মে ২০২৪

পুজোর সময়ে ভেঙে দেওয়া হাম্প ফিরল দুর্ঘটনার পরে 

বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থলের কাছে তড়িঘড়ি হাম্প বসানো হলেও শোভাবাজার মোড় থেকে বাগবাজার পর্যন্ত রবীন্দ্র সরণির বাকি অংশের অবস্থা রয়ে গিয়েছে আগের মতোই।

এ ভাবেই ভাঙা হয়েছে হাম্পগুলি। ছবি: সুমন বল্লভ

এ ভাবেই ভাঙা হয়েছে হাম্পগুলি। ছবি: সুমন বল্লভ

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:২৭
Share: Save:

প্রতিমা নিয়ে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছিল। বাধা পাচ্ছিল বিসর্জনের শোভাযাত্রাও। তাই দুর্গাপুজোর আগেই ভেঙে ফেলা হয়েছিল শোভাবাজার মোড় থেকে বাগবাজার পর্যন্ত রবীন্দ্র সরণির উপরে থাকা একের পর এক হাম্প। মাসখানেক আগে ওই রাস্তাতেই লরির ধাক্কায় এক বৃদ্ধা গুরুতর জখম হন। এর পরেই পুজো কেটে যাওয়ার মাসখানেক পরেও কেন ওই হাম্প ফের তৈরি হয়নি, তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয়দের একটি অংশ। অবশেষে বিক্ষোভের মুখে পড়ে ওই রাস্তায় রাতারাতি বসানো হল বেশ কয়েকটি হাম্প।

বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, দুর্ঘটনাস্থলের কাছে তড়িঘড়ি হাম্প বসানো হলেও শোভাবাজার মোড় থেকে বাগবাজার পর্যন্ত রবীন্দ্র সরণির বাকি অংশের অবস্থা রয়ে গিয়েছে আগের মতোই। দুর্গাচরণ ব্যানার্জি স্ট্রিটের এক দোকানদার শম্ভুনাথ পালের অভিযোগ, ‘‘কোথাও ভেঙে ফেলা হাম্প পিচ রাস্তার সঙ্গে সম্পূর্ণ মিশে গিয়েছে। কোথাও আবার ট্র্যাফিক পুলিশের বসানো প্লাস্টিকের হাম্প মাঝখান থেকে ভেঙে রাস্তার এক ধারে পড়ে। তার উপর দিয়েই বেপরোয়া গতিতে ছুটছে গাড়ি।’’ তেমন ভাবেই বেপরোয়া লরির ধাক্কায় ওই দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।

তাঁরা জানান, ওই দিন দুর্গাচরণ ব্যানার্জি স্ট্রিট পার হচ্ছিলেন এলাকারই বাসিন্দা, রাধারানি খাঁড়া নামে বছর সত্তরের এক বৃদ্ধা। রবীন্দ্র সরণি থেকে ওই পথে আসা একটি মালবাহী লরি ডান দিকে দুর্গাচরণ ব্যানার্জি স্ট্রিটে ঢোকার মুখে তাঁকে ধাক্কা মারে। লরির সামনের চাকা বৃদ্ধার পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। স্থানীয়েরাই তাঁকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি এখনও সেখানেই ভর্তি। লরির চালককে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্থানীয়দের দাবি, রবীন্দ্র সরণি দিয়ে ঢোকা ভারী লরি দুর্গাচরণ ব্যানার্জি স্ট্রিট দিয়ে গিয়ে গঙ্গাপাড়ের রাস্তা ধরে। সেই পথেই মালবাহী লরি যায় আর্মেনিয়ান ঘাটের গুদামগুলির দিকে। দিনে প্রচুর লরি চললেও ওই রাস্তায় থাকে না ট্র্যাফিক পুলিশ। ভেঙে ফেলা হয়েছিল হাম্পও।

কলকাতা পুরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ওই এলাকা। স্থানীয় কাউন্সিলর পার্থ মিত্র বলেন, ‘‘একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে দেখে তিনটি হাম্প বসানোর ব্যবস্থা করিয়েছি। আরও কয়েকটি বসানোর কথা।’’ পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে তাঁর বক্তব্য, ‘‘রবীন্দ্র সরণির ওই অংশটি শ্যামবাজার ও জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের অন্তর্গত। প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সুবিধা করে দিতে পুলিশই পুজোর আগে ওই হাম্পগুলি ভেঙে দিয়েছিল। তার পরে আর তৈরি করায়নি। গার্ডরেল দিয়ে দিতে বলেছিলাম বারবার। তা-ও দেয়নি।’’ কিন্তু বিপদ বুঝে তিনিই বা আগে হাম্প বসানোর জন্য উদ্যোগী হলেন না কেন? পার্থবাবুর কাছে সেই উত্তর মেলেনি।

এ প্রসঙ্গে জোড়াবাগান ও শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hump Accident Durga Puja 2019
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE