Advertisement
E-Paper

জঞ্জাল সাফের দুই ছবি পুজোর দুই সরোবরে

রবিবার পুজো মেটার পরে বেলা বারোটা নাগাদ রবীন্দ্র সরোবরে গিয়ে দেখা গেল, জলাশয়ের ধারে পড়ে থাকা পুজোর সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ছটপুজোর পরে সরোবরের জলে যে ফুল, পাতা এবং প্লাস্টিক ভাসছিল, পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে সেগুলিও।

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২২
সাফসুতরো: ছটপুজোর পরে পরিষ্কার করা হয়েছে রবীন্দ্র সরোবর চত্বর ও জলাশয়ে পড়ে থাকা পুজোর উপচার এবং অন্য আবর্জনা। সোমবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

সাফসুতরো: ছটপুজোর পরে পরিষ্কার করা হয়েছে রবীন্দ্র সরোবর চত্বর ও জলাশয়ে পড়ে থাকা পুজোর উপচার এবং অন্য আবর্জনা। সোমবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

প্রশাসন এক। অথচ দূষণ রোধে তারই দুই রূপ দেখল শহর। ছটপুজো শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রবীন্দ্র সরোবরে বর্জ্য অপসারণ হলেও পুরোপুরি পরিষ্কার হল না সুভাষ সরোবর এলাকা।

রবিবার পুজো মেটার পরে বেলা বারোটা নাগাদ রবীন্দ্র সরোবরে গিয়ে দেখা গেল, জলাশয়ের ধারে পড়ে থাকা পুজোর সামগ্রী সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ছটপুজোর পরে সরোবরের জলে যে ফুল, পাতা এবং প্লাস্টিক ভাসছিল, পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে সেগুলিও। পুজো চলাকালীন সরোবরের জলে দুধ এবং ঘি ভাসতে দেখা যাওয়ায় তা কতটা দূষিত হয়েছে, সেই পরীক্ষার জন্য জলের নমুনা সংগ্রহ করেছে পরিবেশ দফতর। তার রিপোর্ট অবশ্য এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ।

ঠিক এর বিপরীত ছবি দেখা গিয়েছে সুভাষ সরোবরে। পুজো মেটার এক দিন পরে সোমবার ওই এলাকায় গিয়ে চোখে পড়ল, এখনও রয়ে গিয়েছে সরোবরে নামার জন্য তৈরি করা বাঁশের অস্থায়ী সিঁড়ি। রবিবার পুরকর্মীদের জলাশয় থেকে আবর্জনা তুলতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও এ দিন বেশ কিছু জায়গায় পাড়ের কাছে ভেসেছে প্রদীপ, তেল, পুজোর ফুল-পাতা, প্লাস্টিক থেকে শুরু করে থার্মোকল। বিশেষত

মেট্রো রেলের উড়ালপুল সংলগ্ন এলাকা, বাইপাস সংলগ্ন এলাকা এবং সরোবর থেকে বেলেঘাটা যাওয়ার অংশে যত্রতত্র আবর্জনা চোখে পড়েছে। ধরা পড়েছে জলাশয় থেকে তুলে পাড়ে আবর্জনা জমিয়ে রাখার ছবিও।

অবহেলা: সুভাষ সরোবরে পড়ে পুজোয় ব্যবহৃত সামগ্রী। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

অথচ গত শনিবার পুজোর সময়ে খানিকটা আশার আলো দেখেছিল প্রশাসন। সে দিন বাজি পোড়েনি। জলে ভাসেনি পুজোর কোনও উপচার। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, রবিবার বেলা বাড়তেই বদলে যায় পুরো চিত্রটা। যদিও কলকাতা পুরসভার কর্তাদের একাংশ দাবি করেছেন, পুজোর পরপরই সরোবর এলাকা সাফ করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য বলছেন, বছরের অন্য সময়ে তো সরোবর এলাকা পরিষ্কার করার কোনও প্রচেষ্টাই চোখে পড়ে না। এ বার ছটপুজো ঘিরে তবু অন্তত কিছুটা সাফাইয়ের কাজ হয়েছে।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, একই শহরে দু’টি সরোবরের ক্ষেত্রে এমন বৈপরীত্য কেন? রবীন্দ্র সরোবরের ক্ষেত্রে জাতীয় তকমা থাকায় কি তা আলাদা গুরুত্ব পেয়েছে? এই কথা অবশ্য মানতে চাননি কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সব জায়গা থেকেই দ্রুত আবর্জনা তোলার চেষ্টা হয়েছে। তবে পরিকাঠামোজনিত কারণে সুভাষ সরোবরে কিছু সমস্যা হয়েছে। দু’-এক দিনের মধ্যে আবর্জনা সাফ করে ফেলা হবে।’’

সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রের খবর, রবীন্দ্র সরোবরের ক্ষেত্রে শনিবার রাতেই প্রথম দফায় জল থেকে পুজোর সামগ্রী তোলা হয়েছিল। রবিবার সকালে পুজো শেষ হতেই জরুরি ভিত্তিতে নামানো হয় জঞ্জাল অপসারণ দফতরের কর্মীদের। ফলে, জলে কোথাও জঞ্জাল ভেসে যেতে পারেনি। রবীন্দ্র সরোবরের আকৃতির জন্য আবর্জনা দ্রুত তুলতে সুবিধা হয়েছে। সরোবরের কাছে অস্থায়ী বিকল্প ঘাট থাকায় সেখান থেকেও বাড়তি শ্রমিক আনতে পেরেছেন কর্তৃপক্ষ।

অন্য দিকে সুভাষ সরোবরের ক্ষেত্রে ঠিক হয়েছিল, রবিবার সকালেই আবর্জনা পরিষ্কার করা হবে। কারণ, শ্যাওলার কারণে শনিবার রাতে সরোবরে কর্মী নামানো সম্ভব হয়নি। এ ছাড়াও বিকল্প ঘাটগুলি পরিষ্কারের জন্য অধিকাংশ কর্মীকে সেই সব জায়গায় কাজে লাগানো হয়েছিল। পাশাপাশি আকৃতিগত দিক থেকে সুভাষ সরোবর খানিকটা বড় হওয়ায় দ্রুত জঞ্জাল সাফ করতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।

KMC Chhath Puja Subhas Sarobar Rabindra Sarobar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy