Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Pavlov Hospital

Pavlov Hospital: কবে থেকে ইচ্ছে ছিল ভোট দেব: বুথ থেকে বেরিয়ে পাভলভের পরিবার-পরিত্যক্ত মৌ

রবিবার আর পাঁচ জন সাধারণ নাগরিকের মতোই ভোট দিলেন পাভলভ হাসপাতালের ৬৫ জন আবাসিক। এই প্রথম পাভলভের আবাসিকরা ভোট দিলেন কোনও পুরভোটে।

এই প্রথম পুরসভা নির্বাচনে ভোট দিলেন পাভলভের ৬৫ জন আবাসিক।

এই প্রথম পুরসভা নির্বাচনে ভোট দিলেন পাভলভের ৬৫ জন আবাসিক। নিজস্ব চিত্র।

সারমিন বেগম
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৪৩
Share: Save:

কেউ রয়েছেন এক দশক। কারও আবার এখানেই কেটে গিয়েছে ৮ বছর। সম্পূর্ণ সুস্থ তাঁরা। অথচ বাড়ি ফেরার পথে এখনও অনেক বাধা রয়ে গিয়েছে। অগত্যা কলকাতার পাভলভ হাসপাতাল এখনও তাঁদের ঠিকানা। রবিবাসরীয় পুরভোট তাঁদের মুখেই এক চিলতে হাসি ফিরিয়ে দিল। আর পাঁচ জন সাধারণ নাগরিকের মতোই ভোট দিলেন পাভলভ হাসপাতালের ৬৫ জন আবাসিক। পরিসংখ্যান বলছে, এই প্রথম পাভলভের আবাসিকরা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন কোনও পুরভোটে।

এঁদের প্রত্যেকেই পাভলভে এসেছিলেন মানসিক স্বাস্থ্যের রোগী হয়ে। চিকিৎসার পর সকলেই সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু বাড়ি ফেরা হয়নি। কোথাও পরিজনেরা ফিরিয়ে নিতে আসেননি, আবার কারও পরিজনেরা যোগাযোগ রাখেন না। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও পাভলভ হাসপাতালের যৌথ উদ্যোগে ৬৫ জন আবাসিক রবিবার দলবদ্ধ হয়ে প্রয়োগ করলেন নিজেদের ভোটাধিকার।

ভোট দিতে পেরে ওঁরাও খুব খুশি। যেমন ২১ বছরের মৌ কুন্ডু। আদতে হাবড়ার বাসিন্দা। তবে গত ৮ বছর ধরে পাভলভই মৌয়ের ঠিকানা। তিনি বললেন, ‘‘আমাদের কাছে কেউ প্রচার করতে আসেন না। তাই কারা প্রার্থী জানতে পারি না। কিন্তু হাসপাতালের জানালা দিয়ে দেখতাম, কী ভাবে রমরমিয়ে চলছে প্রচার। ইচ্ছে হত আমিও ভোট দিই। এ বার সেই সুযোগ পেলাম।’’

মৌয়ের মতোই ভোট দিয়ে আনন্দ আর ধরছে না গত এক দশক পাভলভে কাটিয়ে ফেলা সন্তোষের (নাম পরিবর্তিত)। তবে তিনি ভোট দিয়েছেন নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণের দাবি জানিয়ে। সন্তোষ চান, হাসপাতালে পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করুন জয়ী প্রার্থী। আগামী ভোটে যেন তাঁদের কাছেও প্রচার করতে আসেন প্রার্থীরা।

আগে বছরে গোনাগুনতি কতগুলো দিন হাসপাতালের বাইরে বেরোতে পারতেন। কিন্তু করোনা আবহে তা-ও বন্ধ। সেই আবহে পুরভোট দিতে যাওয়া যেন এক মুঠো টাটকা বাতাস।

পাভলভ কর্তৃপক্ষের মতে, মানসিক স্বাস্থ্য যে আর পাঁচটা শারীরিক সমস্যার মতো, গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি বুঝতে হয়তো আরও সময় নেবে এই সমাজ। সময় লাগবে মানসিকতার বদলেও। কিন্তু সেখানকার আবাসিকদের যে সে সব ভাবনা নেই। চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষগুলো গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেই আজ আনন্দে আটখানা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE