শহরে সবুজের পরিমাণ বাড়াতে উদ্যোগ। ফাইল চিত্র
শহরের সবুজ ক্রমাগত ধ্বংস হচ্ছে। পরিবেশকর্মীদের একাংশ দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে সরব হয়েছেন। এ বার সবুজ ধ্বংসের বিপদ বুঝতে পেরে সক্রিয় হল কলকাতা পুরসভাও। শহরে সবুজ বাড়াতে ‘মাস্টার প্ল্যান’ করতে চলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। শুধুই সবুজ বৃদ্ধির জন্য মাস্টার প্ল্যান এই প্রথম বলে দাবি পুরসভার। পুরকর্তাদের একাংশের বক্তব্য, দেরিতে হলেও পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মাস্টার প্ল্যানের প্রাথমিক খসড়া ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। সাম্প্রতিক সময়ে কত চারাগাছ রোপণ করা হয়েছে, সেখানে তার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলি কোথায় কোথায় বসানো হয়েছে, তা-ও বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও কত চারাগাছ রোপণ করা হবে, তার আনুমানিক হিসেব উল্লেখ রয়েছে। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘এ রকম মাস্টার প্ল্যান প্রথম বলেই সব দিক খতিয়ে দেখে তা তৈরি হচ্ছে। গত জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১১০০ চারাগাছ বসিয়েছি। তা-ও প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।’’
তবে খসড়া তৈরি করতে গিয়েও সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। কারণ, শহরে সবুজের পরিমাণ-সহ নির্দিষ্ট তথ্য এই মুহূর্তে পুরসভার কাছে নেই। পুরকর্তারা জানাচ্ছেন, বন দফতরের থেকে তা সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে কলকাতায় কত গাছ রয়েছে, তার নির্দিষ্ট তথ্য বন দফতরের কাছেও নেই। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘যেহেতু হাতে পরিসংখ্যান নেই, তাই কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে। শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে।’’
এমনিতে শহরের দূষণ বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতে ধারাবাহিকতার অভাব প্রভৃতির সঙ্গে সবুজের পরিমাণ কমে যাওয়া ওতপ্রোত ভাবে জড়িত বলে জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীরা। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রকল্পে প্রায়ই গাছ কাটা পড়ছে। পরিবর্তে চারা রোপণ করা হলেও তার দেখভাল কতটা হচ্ছে, রোপণ করা চারা ক’টা বাঁচছে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানী মানস ভৌমিক বলেন, ‘‘এক দিকে ক্রমাগত যানবাহন, জ্বালানির দূষণ বাড়ছে। অন্য দিকে, সবুজ কমছে। ফলে সব মিলিয়ে দূষণের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। সেই সঙ্গে জলবায়ুর পরিবর্তনেও সবুজের কমে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে!’’ অন্য এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘সবুজ হ্রাস পাওয়ায় শহরের গড় তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাবে, সবুজ কমে যাওয়ায় গত তিরিশ বছরে শহরের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।’’
শহরে সবুজ বৃদ্ধির মাস্টার প্ল্যান করতে গিয়ে আরও একটি সমস্যার মুখে পড়েছেন পুরকর্তারা। সেটা হল স্থানাভাব। এ জন্য গাছ বসাতে গিয়ে যে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তা আগেই জানিয়েছিলেন কর্তারা। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘আগামী দিনে আরও ১০-১৫ হাজার চারা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী কোথায় সেগুলি বসানো হবে, সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy