সদর দফতর-সহ কলকাতা পুরসভার সমস্ত অফিসে কর্মীদের ঠিক সময়ে ঢোকা ও বেরোনো সুনিশ্চিত করতে এক সময়ে পরীক্ষামূলক ভাবে বায়োমেট্রিক হাজিরা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই সেই উদ্যোগে সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, বায়োমেট্রিক যন্ত্রে বালি ঘষে দিয়েছিল কেউ বা কারা! তার পরেও অবশ্য চেষ্টা করা হয়েছিল। ঠিক সময়ে না ঢুকলে কাজের অনুমতি না দেওয়া বা ছুটি কেটে নেওয়া, এমন অনেক নিদান দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও পুরসভার কর্মী ও আধিকারিকদের নিয়মে বাঁধা যায়নি। এ বার ফের ঘ়ড়ির কাঁটা ধরে কর্মী-আধিকারিকদের অফিসে ঢোকা ও বেরোনোর বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে ‘মরিয়া’ চেষ্টা করছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
সেই লক্ষ্যেই সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করে পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কর্মী-আধিকারিকেরা কখন ঢুকছেন, কখনই বা বেরোচ্ছেন, তা দেখার জন্য কন্ট্রোলিং অফিসার বা অফিসার-ইন-চার্জেরা আচমকা পরিদর্শন চালাবেন বিভিন্ন দফতরে। শুধু পাঁচ নম্বর এস এন ব্যানার্জি রোডের সদর দফতরই নয়, পুরসভার যত অফিস রয়েছে, সর্বত্রই মাসে অন্তত এক বার ওই আচমকা পরিদর্শন চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সময়ানুবর্তিতাকে যাতে মান্য করা হয়, তার জন্য অনিয়মিত হাজিরা বা হাজিরার ক্ষেত্রে গয়ংগচ্ছ সংস্কৃতির খোলনলচেই পাল্টে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
যদিও পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, হাজিরা নিয়ে ‘কড়াকড়ি’র বিষয়টি শোভন চট্টোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীন এক বার শুরু করেছিল পুরসভা। কিন্তু তাতে ধারাবাহিকতা বজায় থাকেনি। কয়েক দিন কড়াকড়ির পরেই ফের ‘যখন খুশি আসি-যাই’ সংস্কৃতি ফিরে এসেছিল। যাঁরা নিয়ম মেনে হাজিরা দেন, তাঁরা প্রবল প্রতিবাদও করেছিলেন হাজিরার গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। ফলে এ বারও কড়াকড়ি হলে কতটা ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।