ফাইল চিত্র।
বাড়ি, ফ্ল্যাট তৈরির পরে সেটির নির্মাণ সম্পূর্ণের শংসাপত্র (কমপ্লিশন সার্টিফিকেট বা সিসি) হাতে পেয়েও যাঁরা সম্পত্তি মূল্যায়নের জন্য আবেদন করছেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কলকাতা পুরসভা মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে চলছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। যাতে সম্পত্তিকর আদায়ের ক্ষেত্রে কোথাও কোনও বকেয়া না থাকে।
এই ক্ষেত্রে পাঁচ বছর ধরে সময়সীমা ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, প্রাথমিক ভাবে ২০১৭ সালের পর থেকে শহরের যে সব বাড়ি বা ফ্ল্যাট সিসি পেয়েছে, অথচ সেগুলির মূল্যায়নের জন্য পুরসভায় আবেদন করা হয়নি, সেই সংক্রান্ত সব নথি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এর পরে তার আগের পাঁচ বছরের নথিখতিয়ে দেখা হবে। এমন ভাবেই বকেয়া কর-সমস্যার গোড়ায় পৌঁছতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘সিসি পেয়েছে অথচ পুরসভায় আবেদন করেনি, এমন তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরে সেই সমস্ত ক্ষেত্রে পুরসভা নিজেই মূল্যায়ন করে দিচ্ছে। খুব দ্রুত এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’
কিন্তু পাঁচ বছরের সময়সীমা ভাগ করে কেন এই কাজ করা হচ্ছে?
কারণ ব্যাখ্যা করে পুর প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ বলছেন, বকেয়া করের বিষয়টি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। অতীতে যত বার বকেয়া কর আদায়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে, তত বারই দেখা গিয়েছে, একবারে তা করতে গিয়ে মাঝপথে দিশাহারা অবস্থা হয়েছে পুরসভার। ফলে কর আদায়ের গোটা প্রক্রিয়াই মার খেয়েছে। পুরনো সেই ‘ভুল’ শোধরাতেই পাঁচ বছর অন্তর সময় ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে নথির পাহাড়ে যেমন হারিয়ে যেতে হচ্ছে না, তেমনই কর আদায়ে দ্রুত পদক্ষেপও করা সম্ভব হচ্ছে।
এর পাশাপাশি সম্পত্তিকর যাতে বকেয়া না পড়তে পারে, সেই কারণে বিশেষ নজরদারি চালানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। শহরে নতুন বাড়ি তৈরি হওয়া মাত্রই ঠিক সময়ে সেটির কর জমা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
কারণ, পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, এমনিতে নজরদারিতে ফাঁক বা কর আদায়ে গাফিলতি থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সম্পত্তিকর বকেয়া রয়েছে বহু জায়গায়। সাম্প্রতিক সময়ে কর আদায়ে তুলনামূলক ভাবে গতি এলেও এখনও পুরোটা করে ওঠা যায়নি। পরিস্থিতি বিচার করে পুর কর্তৃপক্ষ বুঝতে পেরেছেন, কোনও বাড়ি বা আবাসন নির্মাণ হওয়া মাত্র সেটি থেকে সম্পত্তিকর আদায়ের প্রক্রিয়া যদি শুরু করা যায়, তা হলে কর বকেয়া পড়ার পরিস্থিতিই তৈরি হবে না। পুর প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘গোড়ায় গলদ সংশোধন করার চেষ্টা চলছে। এমনিতে অনেকটাই তা শোধরানো গিয়েছে। কিন্তু পুরো ব্যবস্থা যাতে নিখুঁত হয়, তার জন্য যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
সে কারণে প্রতিটি বকেয়া করের ফাইলের জন্য এক জন করে নির্দিষ্ট আধিকারিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। যাতে বকেয়া কর কত বাকি রয়েছে, কত দিন ধরে তা বাকি, সেই সব ব্যাপারে সময়োচিত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy