রাজা শখ করে গড়েছিলেন এক বিশাল পশুশালা। সেখানে বাঘের সংখ্যাই প্রায় দুই ডজন। ওয়াজিদ আলি শাহের সেই চিড়িয়াখানা থেকে এক জোড়া বাঘ এক বার পালিয়ে গেল। ১৮৭৯ সালের ৬ জানুয়ারি তারিখের দি ইংলিশম্যান পত্রিকায় ছাপা হল সেই রোমহর্ষক খবর। একটি বাঘকে সহজে কাবু করা গেলেও, দ্বিতীয়টি সাঁতরে গঙ্গা পেরিয়ে পৌঁছে গেল শিবপুরের বোটানিক্যাল গার্ডেনে। পুরো দুই দিন আতঙ্ক ছড়ানোর পর জনৈক মি. ওয়েস সেটিকে গুলি করে ঘায়েল করেন। এর কয়েক দশক আগের একটি ঘটনা— ১৮৪৩ সালে ইংরেজরা সিন্ধু দেশের হায়দরাবাদ, খয়েরপুর ও মিরপুরের তিন আমিরকে গদিচ্যুত করে বন্দি করে রেখেছিল দমদমের ‘ফেয়ারি হল’ নামের বাড়িতে। সেখানে একটি ঘেরা জায়গায় আমিরদের পোষা চিতাবাঘও বাঁধা থাকত বলে জানিয়েছেন রাধারমণ মিত্র, তাঁর বিখ্যাত কলিকাতা দর্পণ গ্রন্থে।
শাসকদের বাঘ শিকারের কাহিনির পাশাপাশি কলকাতার ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঘ পোষার গল্পও। তবে গত শতকের সত্তরের দশকে নানা কারণে বাঘের অস্তিত্ব প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে যায়, সমস্যা মেটাতে চালু হয় বন্যপ্রাণী (সুরক্ষা) আইন ও ‘প্রোজেক্ট টাইগার’। সেই সঙ্গে আরও কিছু পদক্ষেপের ফলে দেশে বাঘের সংখ্যা আজ তিন হাজার পেরিয়েছে। তবে কাজ এখনও বাকি। বাঘ সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার দিকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ও বাঘ সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ২৯ জুলাই দিনটি পালিত হয় ‘আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস’ হিসাবে।
দিনটি উপলক্ষে কলকাতায় হয়ে গেল বেশ কিছু অনুষ্ঠান। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তাদের সংগ্রহ থেকে জলরঙে আঁকা দু’টি বাঘের ছবি সকলকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে মাস জুড়ে। তার মধ্যে নন্দলাল বসুর আঁকা চিত্রে (মূল ছবি) চিতাবাঘের রাজকীয় ভঙ্গি, বেঙ্গল স্কুল শৈলীতে। অন্য ছবিটি ‘কোম্পানি স্কুল’ শৈলীতে আঁকা জন ফ্লেমিং ন্যাচারাল হিস্ট্রি অ্যালবাম-এর অংশ। ভারতীয় বন্যপ্রাণের বৈচিত্র সম্পর্কে নথি হিসাবে তৈরি এই অ্যালবামের মধ্য থেকে একটি পোষা চিতার ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে। ছবিটি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-কে উপহার দিয়েছিলেন মহারাজা প্রদ্যোৎকুমার ঠাকুর।
বাঘ দিবস উপলক্ষে মায়া আর্ট স্পেস গ্যালারিতে অন্য রকম এক ছবির প্রদর্শনী হল ২৭-৩১ জুলাই। অর্কমিত্র রায়ের কিউরেশনে ‘ফ্রম ক্যানভাস টু কজ়’ নামের ছবি ও ভাস্কর্য (মাঝের ছবিতে তমাল ভট্টাচার্যের ভাস্কর্য) প্রদর্শনীটির লক্ষ্য, শিল্পের শক্তিকে বাঘের সুরক্ষায় সংহত করা। ছিল যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্ন, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়-সহ মোট ৩৩ জন শিল্পীর কাজ; ৩০ জুলাই বাঘ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ নিয়ে কথালাপে ছিলেন নীলাঞ্জন মল্লিক জয়দীপ কুণ্ডু সুচন্দ্রা কুণ্ডু ও বাপ্পা ভৌমিক। ২৯ জুলাই বিকেলে আর একটি অনুষ্ঠান হল দক্ষিণ কলকাতার এক অভিজাত ক্লাবে: বন্যপ্রাণ ও প্রকৃতি নিয়ে শিলাদিত্য চৌধুরীর আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বাঘ সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা।
নাট্য-তর্পণ
প্রায় বছর কুড়ি আগে জঁ পল সার্ত্রের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ‘পঞ্চম বৈদিক’ নাট্যগোষ্ঠী অর্পিতা ঘোষের অনুবাদে মঞ্চস্থ করেছিল নাটক— রাজনৈতিক হত্যা?। নির্দেশনায় ছিলেন শাঁওলী মিত্র (ছবি), মঞ্চায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “এই নাটকটি এই মুহূর্তে না করে উপায় নেই... নৈতিকতাকে বাদ দিয়ে রাজনীতি এগোতে থাকলে তো ভয়ঙ্কর বিপদ।” এ বছর আগামী ২২ অগস্ট শম্ভু মিত্রের জন্মদিনে ও শাঁওলী মিত্রের স্মরণে পঞ্চম বৈদিক ওই নাটকটিরই পুনর্নির্মাণ করতে চলেছে নতুন আঙ্গিকে। আলোক পরিকল্পনায় দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, আর নির্দেশনায় অর্পিতা ঘোষ— অ্যাকাডেমি মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় অভিনয়। শম্ভু-তৃপ্তি-শাঁওলী মিত্রের প্রতি নাট্যদলটির ‘তর্পণ’, ২২ থেকে ২৪ অগস্ট, তিন দিন ব্যাপী পাঁচটি নাটকে। মধুসূদন মঞ্চে আগামী ২৩ অগস্ট ৩টে ও সাড়ে ৬টায় তুমি ঠিক যদি ভাবো তুমি ঠিক ও ভিট্টন, এবং ২৪ অগস্ট ৩টে ও সাড়ে ৬টায় যথাক্রমে পুলিশ আর নাথবতী অনাথবৎ-এর পাঠ-অভিনয়।
বিশ্বের ছবি
গত তিন বছর ধরে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ় অব ইন্ডিয়া (এফএফএসআই)-এর পূর্বাঞ্চলীয় শাখার উদ্যোগে শহরে সাড়া ফেলেছে ‘ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কলকাতা’। কাহিনিচিত্র, ছোট ছবি, প্রামাণ্যচিত্র, ক্ল্যাসিক থেকে শুরু করে এই সময়ের সিনেমা নিয়ে চতুর্থ বছরের উৎসব আগামী ১৬-২১ অগস্ট নন্দন ৩’এ, রোজ দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। বাংলা ও ভারতীয় নানা ভাষার ছবি তো বটেই, দেখানো হবে শ্রীলঙ্কা নেপাল ইরান জাপান ভিয়েতনাম রাশিয়া পর্তুগাল মন্টেনেগ্রো জার্মানি ব্রাজিলের ছবি; সঙ্গে স্ট্যানলি কুব্রিক ডেভিড লিঞ্চ ফাতিহ আকিনের মতো বন্দিত চলচ্চিত্রকারের ছবিও।
বার্তাবহ
যুদ্ধ, গণহত্যার বিরুদ্ধে শান্তি ও স্বাধীনতার বার্তা, পিপল’স ফিল্ম কালেক্টিভ-এর ‘ফ্রেমস অব ফ্রিডম’ চলচ্চিত্র উৎসবে। ১৫ অগস্ট সকাল ১০টা থেকে দিনভর, উত্তম মঞ্চে। ইউক্রেন, গাজ়া-সহ বিশ্বের নানা প্রান্তে সামরিক সংঘাতের প্রেক্ষাপটে এই ছবি-উৎসবের মূল সুর ‘বার্নিং আর্থ, ওয়েজিং পিস’। দেখানো হবে সাম্প্রতিক ছ’টি তথ্যচিত্র: এলিয়োনোর ওয়েবার-এর দেয়ার উইল বি নো মোর নাইট, ইউক্রেনে দু’বছর ধরে তোলা ওলহা জ়ুরবা-র সংস অব স্লো বার্নিং আর্থ, গাই ডাভিডি-র ইনোসেন্স, রেনবো কালেক্টিভ-এর টু কিল আ ওয়ার মেশিন— এ ছাড়াও দ্য সেটলারস আর টোয়েন্টি ডেজ় ইন মারিয়ুপোল-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যচিত্র। অধিকাংশ ছবিই কলকাতায় এই প্রথম দেখানো হচ্ছে, কিছু ছবি ভারতেও এই প্রথম। যুদ্ধের নৈর্ব্যক্তিক বীভৎসতা, সমাজের সামরিকীকরণ, অস্ত্র-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে শুভবোধের লড়াইয়ের কথা বলে ছবিগুলি।
জরুরি দলিল
মুক্তির দশক। অন্ধকারে বুটের শব্দ, চোরাগোপ্তা আক্রমণ, গুন্ডা-রাজ। সব প্রতিবাদ তখন স্লোগানধর্মী। সত্তরের সেই সময়ে এক রুপোলি রেখা বীক্ষণ, ছাত্র-যুবাদের মুখপত্র। ভাবনার খোলা হাওয়া, মতপ্রকাশের ভিন্ন স্বর মন কেড়েছিল সবার: বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, নানা বিষয়ে। ১৯৭৩-এর মার্চে শুরু, একুশটি সংখ্যা পেরিয়ে শেষেরটি বেরোয় ১৯৭৯-র ডিসেম্বরে। এই পত্রিকারই প্রথম দশটি সংখ্যা নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি বই, সংকলিত বীক্ষণ। পুরনো ট্রাঙ্ক থেকে উদ্ধার হওয়া সংখ্যাগুলি এক অচিন সময়ের দলিল। ‘সম্পর্ক’ প্রকাশনা সংস্থার উদ্যোগে আনুষ্ঠানিক প্রকাশ অনুষ্ঠান আগামীকাল ১০ অগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টায়, সল্টলেকের সিএফ ব্লক কমিউনিটি হল-এ।
তবুও মানুষ
পটভূমি দেশভাগ। এক মুসলিম পরিবার লখনউ ছেড়ে লাহোরে এসে ওঠে, পাকিস্তান সরকার থেকে তাদের একটি বাড়ি বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সে বাড়িতে থাকেন এক বৃদ্ধা হিন্দু মহিলা, কিছুতেই বাড়ি ছাড়তে নারাজ, কারণ এ বাড়িই তার স্মৃতি, সত্তা, সব কিছু। শুরু হয় মতভেদ, মনোমালিন্য, দ্বন্দ্ব। কিন্তু ক্রমে দেখা যায়, হিন্দু বৃদ্ধা আর মুসলিম পরিবারটির মধ্যে তৈরি হচ্ছে আলাদা একটা সম্পর্ক, যে সম্পর্ক বুঝিয়ে দেয় ধর্মের চেয়েও বড় মানবিকতা, মানবতা। আসগর ওয়াজ়াহাত-এর লেখা বিখ্যাত উর্দু নাটক জিস লাহোর নেহি দেখা, ওহ জন্মা হি নেহি অরিন্দম দাশগুপ্তের বাংলা অনুবাদে, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় মঞ্চে নিয়ে আসছে ‘সুন্দরম’ নাট্যদল, লাহোর ১৯৪৭ নামে। আগামী ১৫ অগস্ট দলের ৬৯ বছর পূর্তিতে, অ্যাকাডেমি মঞ্চে, দুপুর ৩টে ও সন্ধে সাড়ে ৬টায় হবে প্রথম দু’টি অভিনয়।
লতায়, কথায়
বাংলার সঙ্গীতকারদের প্রতি লতা মঙ্গেশকরের অনুরাগ সুবিদিত। শচীন দেব বর্মণ রাহুল দেব বর্মণ (ছবিতে তাঁদের সঙ্গে শিল্পী) সলিল চৌধুরী হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, সকলেই ওঁর সঙ্গীতজীবনে নানা পর্বে বিশেষ ভূমিকায়। কয়েক দশক ধরে গান গেয়েছেন ৩৮টি ভাষায়, সৌভাগ্যবশত তার আর্কাইভও তৈরি। সব গানের তথ্য-তালাশ দিয়ে ১৫ খণ্ডে লতা গীতকোষ লিখেছেন, তাঁর নামে সংগ্রহশালা গড়েছেন স্নেহাশিস চট্টোপাধ্যায়। বইগুলির কথামুখ লিখেছেন সবিতা চৌধুরী মান্না দে যশ চোপড়া এ আর রহমান প্রমুখ মানীরা। শিল্পীর জীবন-সাধনার জানা-অজানা দিক নিয়ে বলবেন স্নেহাশিসবাবু, ১৩ অগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়, যোধপুর পার্কে রাগ-অনুরাগ মিউজ়িক রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে। গান, স্থিরচিত্র, ভিডিয়ো সব-ই হবে কথাসঙ্গী। অন্য রকম এই আয়োজন লোপামুদ্রা মিত্রের, ‘গান-মন’ সংস্থার তরফে।
তাঁকে নিয়ে
বহু অনুসন্ধানেও নারীকে প্রাচীন ভারতীয় সমাজে প্রকৃত সম্মানের আসনে দেখতে পাননি। বৈদিক যুগে ‘অশিক্ষার অন্ধকারে নির্বাসিত, স্বাধীন অর্থকরী বৃত্তি বঞ্চিত’ ভারতীয় নারীসমাজের ছবি তুলে ধরেন সুকুমারী ভট্টাচার্য (ছবি), মুনিঋষিদের শ্রেণি-স্বার্থের প্রশ্ন উত্থাপনেও ছিলেন নির্দ্বিধ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে তাঁকে ডেকে নেন বুদ্ধদেব বসু, পরে যোগ দেন সংস্কৃত বিভাগে। এই উগ্র ও মত্ত সময়ে তাঁর ভাবনা ও লেখালিখি ফিরে দেখা জরুরি, তারই উদ্যোগ করেছে ‘সূত্রধর’ প্রকাশনা। আগামী ১২ অগস্ট মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আশুতোষ মুখার্জি মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটে তাঁকে নিয়ে বলবেন যূথিকা মৈত্র গোপা দত্ত ভৌমিক ও মৌ দাশগুপ্ত। বেরোবে দু’টি বই, মইনুল হাসান লিখিত ও সম্পাদিত সুকুমারী ভট্টাচার্য: নবচেতনার বাতিঘর ও সুকুমারী ভট্টাচার্য: এ যুগের গার্গী।
সময়ের কথকতা
ভাবনাটা আসে ২০১৯-এর নিউ ইয়র্কে: সামনে বসা গুরুস্থানীয় চিন্তককে ছবিতে ধরে রাখা চাই, ইতিহাসের খাতিরেই। কর্মজীবনের বেশির ভাগটাই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আর সেন্টার ফর স্টাডিজ় ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস কলকাতা-য় ভাগাভাগি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী-নৃতত্ত্ববিদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। এই দুই জায়গাতেই চলতে থাকে পায়চারি আর কথা বলা: কলেজ স্ট্রিটে পাওয়া ভাওয়াল সন্ন্যাসী মামলার পুরনো নথি-বই থেকে আ প্রিন্সলি ইম্পস্টার?-এর জন্ম-আখ্যান, বা জিপিও-র গা ঘেঁষে ব্রিটিশ আমলের ভূগর্ভস্থ মারণকক্ষ, যার কথা লেখা দ্য ব্ল্যাক হোল অব এম্পায়ার-এ। ‘ইস্টবেঙ্গল’ সমর্থক পার্থ মেলে ধরেন লাল-হলুদে দেশভাগ-পরবর্তী বাঙাল অস্মিতার ফুটে ওঠা; নিজের পাড়া, বাড়ি, অকালমৃত নকশাল বন্ধুকেও। দৈনন্দিন সংবাদমুখরতার বাইরে গিয়ে সময়কে লিখে রেখেছেন চলচ্চিত্রবিদ্যার অধ্যাপক মৈনাক বিশ্বাস, পি সি: ক্যালকাটা নিউ ইয়র্ক কলকাতা তথ্যচিত্রে। দেখানো হল গত ২৮ জুলাই এসআরএফটিআই-তে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)