Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

সমাদ্দারের চাবি’ লিখে ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছিলেন বাবা। মিউজিক নিয়ে তো গল্পটা, আর বাবার প্রথম প্রেম ছিল মিউজিক।’’— সন্দীপ রায় স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন, ‘‘তিন দিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে একটানে লেখেন গল্পটা।

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০০:৫১

পঞ্চাশ পূর্তিতে ডবল ফেলুদা

সমাদ্দারের চাবি’ লিখে ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছিলেন বাবা। মিউজিক নিয়ে তো গল্পটা, আর বাবার প্রথম প্রেম ছিল মিউজিক।’’— সন্দীপ রায় স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন, ‘‘তিন দিন নাওয়া-খাওয়া ভুলে একটানে লেখেন গল্পটা। ১৯৭৩-এর ১৪-১৬ জুন। ফেলুদা নিয়ে যে কোনও গল্প বা উপন্যাস লিখেই সর্বপ্রথম মাকে পড়তে দিতেন বাবা, সে বারেও তার ব্যতিক্রম ঘটল না, মা কিন্তু কোনও ‘ফ্ল’ খুঁজে পাননি, একবারেই ‘ওকে’ করে দিয়েছিলেন। অবশ্য ‘গোলোকধাম রহস্য’-এর বেলাতেও একই রকম ঘটেছিল, বাবার লিখে ভীষণ ভাল লেগেছিল, মাও একবারেই অনুমোদন করেছিলেন। সে গল্পে আবার বাবা তাঁর প্রিয় মহাভারত-রামায়ণ প্রসঙ্গ নিয়ে এলেন, লিখেছিলেন ন’দিনে, ১৯৮০-র ১৯-২৭ এপ্রিল। প্রথমে অন্য নাম দেন গল্পটার: ‘প্রফেসর দাশগুপ্তের ফর্মুলা’ (সঙ্গে পাণ্ডুলিপি), পরে বদলে দেন। যখন তাঁর নিজের বাছাই সেরা সত্যজিৎ ও আরো সত্যজিৎ সংকলন-দু’টি বেরবে স্থির হয় আনন্দ থেকে, দ্বিতীয়টিতে রেখেছিলেন গল্প দু’টি।’’ সন্দীপের নতুন ছবি ‘ডবল ফেলুদা’ এ দু’টি গল্প নিয়েই। বড় পর্দায় একসঙ্গে দু’টি ফেলুদা-কাহিনি নিয়ে একটি ছবি এই প্রথম। নামভূমিকায় ফের সব্যসাচী চক্রবর্তী, সঙ্গে তোপসে সাহেব ভট্টাচার্য। ‘‘এটা আসলে ট্রিবিউট ফিল্ম। বাবার প্রথম লেখা ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ সন্দেশ-এ ধারাবাহিক বেরোয় ডিসেম্বর ১৯৬৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬। ফেলুদা’র পঞ্চাশ পূর্তি উদ্‌যাপন করতেই এ-ছবি। ফেলুদা’র মগজাস্ত্রকে কুর্নিশ জানানো দরকার মনে করেছি বলেই এই চমৎকার গল্প দুটো বেছে নিয়েছি।’’ সন্দীপের ছবিতে এই প্রথম অভিনয় করছেন ব্রাত্য বসু, বললেন ‘সন্দীপ রায়ের পরিচালনায় ফেলুদা’র মতো কাল্ট ফিল্ম-এ কাজ এই প্রথম, তায় মণিমোহন সমাদ্দারের মতো চ্যালেঞ্জিং চরিত্র... দারুণ লাগছে।’ শান্তিনিকেতনে শুটিং শুরু ৭ জুলাই। দু’দিকে সন্দেশ-এ প্রথম প্রকাশের সময় সত্যজিৎ-কৃত শীর্ষচিত্র।

অতসী

ছোটবড় মিলিয়ে তিনি হাজারের বেশি ছবি এঁকেছেন। হিরোশিমার বুদ্ধমন্দিরে তাঁর কাজ আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে। শিল্পী অসিত হালদারের কন্যা অতসী বড়ুয়ার জন্ম ১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে। ‘অতসী’ নামটি রেখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ব্যস্ত বাবা ছোট মেয়েকে খাতা-পেন্সিল এগিয়ে দিতেন আঁকার জন্য। প্রথাগত কোনও শিক্ষা ছাড়াই সাবলীল ভাবে আঁকতে পারতেন তিনি। অতুল বসু ও রমেন চক্রবর্তীর অনুপ্রেরণায় চল্লিশের দশকের গোড়ায় কলকাতার কমলালয় ভবনে সর্বভারতীয় চিত্রপ্রদর্শনীতে তাঁর আঁকা তিনটি ছবি জায়গা পেয়েছিল। সেই প্রথম প্রকাশ্য প্রশংসা। কলকাতার মহাবোধি সোসাইটি পঞ্চাশের দশকে বুদ্ধদেবের জীবন ও বাণী নিয়ে তাঁর ছবি দিয়ে একটি অ্যালবামও প্রকাশ করেছিল। ৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত শিল্পীর স্মরণে গত কাল বাড়িতে আয়োজিত হয়েছিল প্রার্থনাসভা। তাঁর অস্থি বিসর্জিত হল বুদ্ধগয়ায়।

নাট্যশালা

‘‘১৮৩১ খ্রীষ্টাব্দে শ্যামবাজারের নবীনচন্দ্র বসুর বাড়িতে অভিনীত ‘বিদ্যাসুন্দর’ নাটকটির বিশেষত্ব ছিল, ‘ইহা ইংরাজী থিয়েটারের দৃশ্যপটাবলীর অবিকল অনুকরণ না হইলেও ইহাতে নবীকরণের একটি স্পষ্ট প্রয়াস প্রকাশ পাইয়াছিল।’’ লিখেছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ১৯২২ সালে ‘ক্যালকাটা রিভিউ’তে ‘বেঙ্গলি থিয়েটার’ নিবন্ধে। লেখাটি সে কালে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। ১৯৪৪ সালে বঙ্গীয় নাট্যশালা শিরোনামে নাট্য-ভারতী পত্রিকায় তার অনুবাদ করেন মণিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। এটিই বই আকারে (ভূমিকা: দেবীপ্রসাদ ঘোষ) তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে (৬ জুলাই) সূত্রধর-এর উদ্যোগে প্রকাশিত হবে ৫ জুলাই সন্ধে সাড়ে ৬টায় আশুতোষ মুখার্জি মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটে। ‘সারস্বতগুণী শ্যামাপ্রসাদ’ বিষয়ে আলোচনা করবেন চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস মজুমদার, দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌমিত্র বসু।

চাঁদের হাট

প্রত্যেকটি মানুষের মন কিছু না কিছু খুঁজে বেড়ায়। সেটা চিন্তা হতে পারে, ছবি হতে পারে এমনকী নিজেকেও হতে পারে। আর এই ভাবনা থেকেই এ বার জি সি লাহা আর্ট গ্যালারি-তে ‘চায়েপানি’ কিউরেট করছে ‘চাঁদের হাট’ শীর্ষক অভিনব প্রদর্শনী (১০ জুলাই পর্যন্ত, ৪-৮টা)। দেখা যাবে কলাভবন থেকে পাশ করা ছ’জন শিল্পীর কাজ— উডকাট, সেরামিক, কাগজ দিয়ে তৈরি হস্তশিল্প, ফ্রিজ ম্যাগনেট, তাঁতের শাড়ি, দোপাট্টা, কুশন কভার, রুমাল, ল্যাম্পশেডের মতো হরেক জিনিস, যা প্রাত্যহিক কাজে লাগে। সঙ্গে আছে নাচ, গান, কবিতা, অভিনয়ও।

মনে রেখে

শেষ প্রহর, প্রতিবাদ-এর পরিচালক তপেশ্বর প্রসাদের বয়স এখন ৮৭। তিনি সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী, অপরাজিত ছবিতেও সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। ৮০ বছর বয়সি শক্তিপদ রায়। যিনি অজয় করের সপ্তপদী, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের নিশিপদ্ম, তরুণ মজুমদারের আলো চলচ্চিত্রগুলি সম্পাদনা করেছেন। আবার ৭৩ বছরের তুলসী কর্মকার বিজয় বসুর সাহেব, প্রভাত রায়ের শ্বেত পাথরের থালা, লাঠি, অঞ্জন চৌধুরীর বিদ্রোহী-র মতো সিনেমায় ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করেছেন। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এমন এগারো জন, যাঁরা এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ, কেউ কেউ আর্থিক সংকটে বেসামাল, কেউ বা নিঃসঙ্গ। এ বার পি সি চন্দ্র গ্রুপ এবং ইস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনেটেল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট-এর যৌথ উদ্যোগে ১০ জুলাই, বিকেল সাড়ে ৫টায়, পি সি চন্দ্র গার্ডেন-এ তাঁদের সংবর্ধনা। আর্থিক সাহায্য তুলে দেবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও মাধবী মুখোপাধ্যায়।

সুবর্ণজয়ন্তী

১৯৬৬-তে নান্দীকার ছেড়ে আসা ১৪জন নাট্যকর্মীর গড়া থিয়েটার ওয়ার্কশপ আজ সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। বিভাস চক্রবর্তী, অশোক মুখোপাধ্যায়, মায়া ঘোষ থেকে শুরু করে আরও অনেক নাট্যজনের শ্রমে-সৃজনে ওরা নিজেদের জায়গা খুঁজে নিয়েছে। রাজরক্ত, চাকভাঙা মধু, নরক গুলজার, শোয়াইক গেল যুদ্ধ, বেলা অবেলার গল্প, বেড়া, বিয়ে-গাউনি কাঁদনচাপা, কুশীলব— বহু বিশিষ্ট নাট্যনির্মাণ। ভারতের নানা প্রান্তে ও বাংলাদেশের বহু শহরে অভিনয় করেছে নাট্যদলটি। বর্ষশ্রেষ্ঠ নাট্যকারকে এঁরা দেন সত্যেন মিত্র পুরস্কার। আছে সেমিনার,ওয়ার্কশপ, বুলেটিন প্রকাশ, নাট্যপত্রিকা সম্পাদনা। প্রাপ্তি দেশ-বিদেশের বহু সম্মান ও পুরস্কার। আগামী এক বছর আছে নানা অনুষ্ঠান। শুরু ৯-১১ জুলাই অ্যাকাডেমিতে। সাম্প্রতিক ও নতুন প্রযোজনা ছাড়াও প্রকাশিত হবে ‘চাকভাঙা মধু’র সিডি। পুরস্কার পাবেন অরূপশংকর মৈত্র। দেখানো হবে তথ্যচিত্রও। থাকবেন মনোজ মিত্র, বিভাস চক্রবর্তী, মায়া ঘোষ, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, ব্রাত্য বসু, চন্দন সেন প্রমুখ।

বিদ্যামন্দির

বিবেকানন্দ-বাণীর ‘ম্যান-মেকিং, ক্যারেক্টার-বিল্ডিং’ শিক্ষার আদর্শকে বাস্তব রূপ দিতে, ১৯৪১-এ প্রতিষ্ঠিত হয় রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ। বেলুড় মঠ সংলগ্ন এই শাখাকেন্দ্রের অধীনেই ১৯৪১-এ রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির কলেজের সূচনা; পরে পরে শুরু হয় বি এড কলেজ, পলিটেকনিক কলেজ, ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সহ সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গবেষণাকেন্দ্র। এ বছর তাই সারদাপীঠ ও বিদ্যামন্দির, দুটিরই প্লাটিনাম জয়ন্তী। প্রথমটি উদ্‌যাপন হল ১-৩ জুলাই, উদ্বোধন করলেন রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনের সহাধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ। বিদ্যামন্দিরের অনুষ্ঠান সারা বছর, সূচনা ৪-৫ জুলাই, কলেজ প্রাঙ্গণে। রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনের সহাধ্যক্ষ ও কলেজেরই প্রাক্তন প্রিন্সিপাল স্বামী প্রভানন্দ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। প্রধান অতিথি স্বামী সুহিতানন্দ দেবেন ‘স্বামী বিমুক্তানন্দ স্মারক বক্তৃতা’। অনুষ্ঠানে বলবেন ছাত্র-শিক্ষক-ছাত্রাবাসকর্মী ও প্রাক্তনীরা; ১৯৪১-’৪৩ প্রথম ব্যাচে খাতায় এক নম্বর রোল ছিল যাঁর, তাঁকে সংবর্ধনা দেবেন চলতি শিক্ষাবর্ষে স্নাতকে প্রথম ভর্তি হওয়া ছাত্রটি।

মায়াকোভস্কি

মাত্র ৩৭ বছরের জীবনেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন প্রবাদপ্রতিম। কবিতা লেখা, নাটক রচনা-পরিচালনা, চলচ্চিত্রাভিনয়, আর্ট জার্নাল সম্পাদনা, কমিউনিস্ট পার্টির প্রচার— ভ্লাদিমির ভ্লাদিমিরোভিচ মায়াকোভস্কি সমস্তটাই করতেন তীব্র প্যাশন দিয়ে। ১৯ জুলাই তাঁর ১২৩তম জন্মদিন, কলকাতায় রুশ দূতাবাসের বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে প্রগতি সাহিত্য সংবাস ও ‘কবিতার সোঁতা’ পত্রিকা। অনুষ্ঠান ৫-৬ জুলাই, ৫ তারিখ সন্ধেয় গোর্কি সদনে উদ্বোধন করবেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপকুমার সিংহ, থাকবেন রুশ ভাইস কনসাল ইউরি ভি দুবোভই, সাহিত্যিক শাহ্‌যাদ ফিরদাউস। প্রগতি সাহিত্যধারার বিশিষ্ট কবির স্মরণে একত্র হচ্ছেন নবীন-প্রবীণ কবিরাও, পড়বেন মায়াকোভস্কির ও নিজেদের কবিতা। আট তরুণ কবির কবিতার বই প্রকাশিত হবে এই উপলক্ষে, থাকবে আলোচনা, কবিতার গানও।

ছোটদের জন্য

হাঁসফাঁস গরম আর প্যাচপেচে বর্ষাতেও মাঝেমধ্যেই আচমকা রামধনু কলকাতার আকাশে। সেই রঙ ছোটদের মনে চারিয়ে দিতে এ বারও নন্দনে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। বেড়ে-ওঠা বা বেঁচে-থাকাটাকেও কতটা সুস্বাদু করে তোলা যায়, তার অবিরত ইশারা যেন ভিনদেশি ছবিগুলোতে। ছোটদের এখানে পা বাড়ালেই পৃথিবী। ৭ জুলাই সন্ধে ৬টায় রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী উদ্বোধন করবেন, উদ্বোধনী ছবি: ‘দ্য জাঙ্গল বুক’। চলবে ৮-১২ জুলাই। যৌথ উদ্যোগে নন্দন ইউনিসেফ ও সিনে সেন্ট্রাল। সঙ্গে ইরানের ছবি ‘দ্য কালার অব প্যারাডাইস’-এর স্থিরচিত্র।

একক ভাটিয়ালি

ভাটিয়ালি গান তৈরি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, সলিল চৌধুরীও। ভাটিয়ালি সুরকে কেন্দ্র করেই পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে বিভিন্ন ধারার লোকসংগীতের বিস্তার। শুধুমাত্র ভাটিয়ালি গান নিয়েই এক অনুষ্ঠানের আয়োজন ৮ জুলাই সন্ধে সওয়া ৭টায় আই সি সি আর-এ। শিল্পী তপন রায়ের কণ্ঠে শোনা যাবে ভাটিয়ালি গান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের হাই কমিশনার জকি আহাদ। পাশাপাশি, তপন রায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত মেয়েদের লোকগানের দল ‘মাদল’-এর নতুন অ্যালবাম ‘দশের মাদল’ এসবিআই এবং সারেগামা-র যৌথ প্রযোজনায় প্রকাশিত হয়েছে। লোকগানের পাশাপাশি এই অ্যালবামে আছে ভাওয়াইয়াশিল্পী ধনেশ্বর রায়ের গাওয়া গান এবং ঝুমুরশিল্পী সুভাষ চক্রবর্তীর কথা ও সুরে মাদলের একটি থিম সঙ— ‘এ মাদল দশের মাদল ইকার মাদল নয়...’। সংগীত পরিচালনা করেছেন তপন রায়, যন্ত্রানুষঙ্গে রকেট মণ্ডল।

লোকসংস্কৃতিবিদ

চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বাংলার পথে পথে ঘুরে লোকসংস্কৃতির নানা উপাদান সংগ্রহ করেছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়লেও পরে আশুতোষ ভট্টাচার্যের অনুপ্রেরণায় লোকসংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী হন। বেহালার আদি বাসিন্দা সনৎকুমার মিত্রের জন্ম ১৯৩৩ সালে। রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ ডি। বাবা ফণিভূষণ মিত্র ছিলেন বেহালা আর্য সমিতির প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য। বেহালার ব্রাহ্মসমাজ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু। পরে নিউ বারাকপুরের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে শিক্ষকতা। রবীন্দ্রভারতীতে লোকনৃত্য ও লোকসাহিত্য পড়াতেন। লোকসংস্কৃতি গবেষণা পরিষদের সম্পাদক ছিলেন। তাঁর অন্যতম কীর্তি টানা চব্বিশ বছর ধরে লোকসংস্কৃতি গবেষণা পত্রিকা সম্পাদনা করা। পত্রিকার প্রতিটি সংখ্যায় নতুন নতুন বিষয় উপস্থাপন করে লোকসংস্কৃতি চর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। সত্তরের দশকে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘে যোগদান। নানা অনুষ্ঠানে দেশবিদেশ ঘুরেছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ পশ্চিমবঙ্গের পুতুল নাচ, পশ্চিমবঙ্গের লোকবাদ্য, রবীন্দ্রনাথের লোকসাহিত্য, লালন ফকির: কবি ও কাব্য, পশ্চিমবঙ্গের লোকসংস্কৃতি বিচিত্রা প্রভৃতি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘লালন ফকির’ গবেষণার জন্য ‘স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায় স্মৃতি’ স্বর্ণপদক পান। ৮৩ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি। ৫ জুলাই সন্ধে ৬টায় অবনীন্দ্র সভাঘরে ও ৯ জুলাই বিকেল ৪টেয় জোকার গুরুসদয় সংগ্রহশালায় দুটি স্মরণসভা আয়োজিত হয়েছে।

কাজ পাগল

কাজের নেশায় একেবারে যেন টগবগ করে ফুটছেন সব সময়। কলকাতারই কন্যা মধুবন্তী ঘোষ, পড়াশোনা প্রেসিডেন্সিতে। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচ ডি করে অ্যাশমোলেন মিউজিয়মে গবেষণা করেছেন। কেম্ব্রিজের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে লেকচারারের পদ পেতে দেরি হয়নি। কিন্তু আসল কাজের জায়গা খুঁজে পেলেন ২০০৭-এ আর্ট ইনস্টিটিউট অব শিকাগোয় গিয়ে। গুরুতর দায়িত্ব— প্রথম অ্যালসডর্ফ কিউরেটর অব ইন্ডিয়ান, সাউথ ইস্ট এশিয়ান, হিমালয়ান অ্যান্ড ইসলামিক আর্ট। এক বছরের মধ্যেই খুলে ফেললেন নতুন গ্যালারি। পরের পর প্রদর্শনী— জিতিশ কাল্লাত থেকে রবীন্দ্র চিত্রকলা। সম্প্রতি আয়োজন করলেন রাজস্থানের নাথদোয়ারার ‘পিছোয়াই’ চিত্রকলা নিয়ে প্রদর্শনী ‘গেটস অব দ্য লর্ড’। শিল্পী মায়ের সঙ্গে প্রথম নাথদোয়ারা যান ১৯৭৫-এ, কৈশোরক চোখে সে এক অাশ্চর্য জগৎ দেখা। অনেক পরে আবার গিয়ে যখন দেখলেন পুরনো শিল্পধারা হারিয়ে যেতে বসেছে, তখন রোখ চেপে গেল কিছু একটা করতেই হবে। আর্ট ইনস্টিটিউটে আন্তর্জাতিক স্তরের এই প্রদর্শনীতে শিল্পধারাটি সম্পর্কে বহু মানুষের আগ্রহ জাগাতে পেরেছেন মধুবন্তী, সেই কথাই সদ্য শুনিয়ে গেলেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ভিড়-ঠাসা ঘরে, ব্যাখ্যা করলেন চিত্রশৈলীটি। ‘এই আগ্রহ জাগাতে পারছি বলে পড়ানোর থেকে কিউরেটরের দায়িত্বই ভাল লাগছে’, বললেন তিনি।

korcha kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy