Advertisement
E-Paper

Mamata Banerjee: বিরোধীরা ছন্নছাড়া, মমতার কেন্দ্রে আট ওয়ার্ড নিয়েই নিশ্চিন্ত তৃণমূল

কলকাতা পুরভোটে কলকাতা থেকে নির্বাচিত মন্ত্রীদের কেন্দ্রের পুরচিত্র কেমন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন।

অমিত রায়

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:৪৫
অঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ

অঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ

২০১১ সাল থেকে ২০২১— মোট দশ বছরে তিনটি মাস বাদ দিলে ভবানীপুর কেন্দ্রের বিধায়ক স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই কলকাতার আসন্ন পুরভোটে ভবানীপুরের আটটি ওয়ার্ড ঘিরে ব্যাপক আগ্রহ রাজনৈতিক মহলে।

কলকাতা পুরসভার ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩, ৭৪, ৭৭ এবং ৮২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র। ২০১৫ সালের পুরভোটে মমতার কেন্দ্রে ৭০ এবং ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডে হেরে গিয়েছিল শাসক তৃণমূল। ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছিলেন বিজেপি-র প্রার্থী অসীম বসু। আর ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিলেন বামফ্রন্ট প্রার্থী শমিমা রেহান খান। ঘটনাচক্রে, দুজনেই এখন তৃণমূলে। এবং এ বারের পুরভোটে ৭০ এবং ৭৭ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁদেরই প্রার্থী করেছে জোড়াফুল শিবির। বাকি ওয়ার্ডগুলিতে জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই তৃণমূল নেতৃত্বের। তবে একইসঙ্গে বলে রাখা যাক, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ৬৩, ৭০, ৭১, ৭২, ৭৩ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি।

২০১৬ এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ৭০ এবং ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়েছিল বিজেপি-ই। ওই ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফলে ওয়ার্ডগুলি নিয়ে তৃণমূল আশাবাদী। কারণ, উপনির্বাচনে আটটি ওয়ার্ডেই ভাল ব্যবধানে জিতেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

এ বারের ভোটে সাতজন কাউন্সিলরকে তাঁদের পুরনো আসনে প্রার্থী করা হলেও সরানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের ওয়ার্ড ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রতন মালাকারকে। রতনকে এ বারে টিকিট দেওয়া হয়নি। ঘরের ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাকিমা কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার পর ওই ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন রতম। যদিও অভিষেকের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনার পর তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে আটটি ওয়ার্ডই এখন ‘নিরঙ্কুশ’।

প্রসঙ্গত, বামফ্রন্ট ভবানীপুর বিধানসভার আটটি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে। বিধানসভা উপনির্বাচনের নিরিখে গড়ে তাদের ওয়ার্ডভিত্তিক ভোট ৫২৮টি। বিধানসভা উপনির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী ছিলেন শ্রীজীব বিশ্বাস। আসন্ন পুরভোটের আগে তিনি বলছেন, ‘‘লড়াই সবসময় জেতার জন্যই হয়। পুরসভা বা রাজ্য সরকার যে সব কাজ করেছে, তাতে সমাজে বিরোধী মতামত তৈরি হয়েছে। সেই মতকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসাই আমাদের কাজ। আমরা সেই লক্ষ্যেই লড়াই করব।’’

ভবানীপুর বিধানসভায় বিজেপি-র যথেষ্ট ভোট থাকলেও সংগঠনগত ভাবে তারা খানিকটা অগোছালো। বিধানসভা নির্বাচনে যে ভাবে লড়াই করেছিল বিজেপি, সেই ‘জোশ’ উধাও ভবানীপুর এলাকার কর্মীমহলে। দক্ষিণ কলকাতা বিজেপি-র সভাপতি শঙ্কর শিকদারের কথায়, ‘‘প্রার্থীদের নাম ঘোষণার আগে আমরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিয়েছি। ফাঁকা ময়দান ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’

কলকাতা পুরভোটে বাকি এলাকার মতোই ভবানীপুরেও সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে কংগ্রেস। বামেদের হাত ছেড়ে একক ভাবে পথচলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রের ওয়ার্ডগুলিতে তাঁর সরকারের ‘ব্যর্থতা’-ই তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি, প্রদীপ জানিয়েছেন, শুধু এই বিধানসভাই নয়, দক্ষিণ কলকাতা কংগ্রেস সাংগঠনিক ভাবে তাদের দায়িত্বে-থাকা ৩৬টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিতে চায়।

শাসক তৃণমূল বিরোধীদের এমন ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থার সুযোগ নিয়ে প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর থেকেই প্রচারের ময়দানে নেমে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর উপনির্বাচনে ভোটের গুরুদায়িত্ব সামলেছিলেন তাঁর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রী কাজরীকেই এ বার ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনয়ন দিয়েছেন মমতা। কার্তিকের কথায়, ‘‘পুর-পরিষেবা নিয়ে এলাকার মানুষ সন্তুষ্ট বলেই মনে হয়। কারণ, আমাদের দলের সঙ্গে সাধারণ মানুষের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রয়েছে। সঙ্গে বিধায়ক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর কাজ তো ভবানীপুরের মানুষের বাড়তি পাওনা। দিদির উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিয়ে যেতে যে আটটি ওয়ার্ডেই আমাদের প্রার্থীরা জিতবেন, সে ব্যাপারে দল একেবারে নিশ্চিত।’’

Kolkata Municipal Election 2021 KMC Election 2021 Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy