তৃপ্ত: জয়ের পরে ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার, হেস্টিংস হাউস গণনা কেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র।
ভোটে ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের ফল কী হতে চলেছে, মঙ্গলবার সকালে সে দিকে নজর ছিল সকলের। আর তাঁর নজর ছিল টিভির পর্দায়। সময় যত গড়িয়েছে, পুরভোটে তৃণমূলের বিপুল ব্যবধানে জয়ের ছবিটা ততই স্পষ্ট হয়েছে। দুপুরে সবুজ আবির নিয়ে সপরিবার মেতে উঠেছিলেন জয়ের আনন্দে। পরে হুডখোলা বাসে নাতনিকে নিয়ে শহর পরিক্রমা। তবে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে নারাজ কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। বরং এক ঝাঁক নবাগত কাউন্সিলরকে আরও বেশি করে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। ‘যখন ডাকি, তখন পাই, মানুষের ডাকে ছুটে যাই’— এই ট্যাগলাইন মাথায় রেখেই তাঁদের কাজ করার বার্তা দিচ্ছেন ফিরহাদ।
১৪৯১৬ ভোটের ব্যবধানে জিতে এ দিন ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘মানুষ ডাকলেই পাশে থাকতে হবে। জয়ী তৃণমূল কাউন্সিলরদের মনে রাখতে হবে, এটা মানুষের জয়। মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে। নতুন কাউন্সিলরদের প্রতি আবেদন, শুধু জিতলেই হবে না, মানুষের পাশেও থাকতে হবে। প্রয়োজনে আরও বেশি করে ছুটে যেতে হবে।’’
আগামী ২৩ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্র নিবাসে কলকাতা পুরসভার জয়ী ১৩৪ জন কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে স্থির হবে, শহরের মেয়র পদে কে বসবেন। এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও শোনা যাচ্ছে, মেয়র হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ফিরহাদই।
তবে পাঁচ বার কাউন্সিলর হিসাবে জয়ী ফিরহাদ অবশ্য বলছেন, ‘‘কে মেয়র হবেন, সেটা দল ঠিক করবে। তবে শহরের স্বার্থে প্রতি বছর রিপোর্ট কার্ড করতে চাই। এক বছরে কোন কাজ করতে পারলাম আর কোনটা পারলাম না— তা বছর শেষে জানানো হবে। এতে শহরবাসীও তা জানতে পারবেন। কাজের স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।’’
এ বার তা হলে কোন কোন কাজের উপরে জোর দিতে চান ফিরহাদ? তিনি জানাচ্ছেন, শহরে জমা জলের সমস্যা, পরিবেশ দূষণ রোধ এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়নই আপাতত ‘পাখির চোখ’ তাঁর কাছে। ফিরহাদের কথায়, ‘‘খড়্গপুর ও রুরকি আইআইটি-র বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে শহরে জল জমার সমস্যার সমাধানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করতে চাই। এই কাজকে দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রাধান্য দিয়েছেন।’’
এ দিন ভোটগণনা শুরুর আগেই, সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ তিন মেয়েকে নিয়ে চেতলার বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেস্টিংস হাউসের গণনা কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছিলেন ফিরহাদ। নির্বাচনী
এজেন্ট হিসাবে তিন মেয়েকে সেখানে রেখেই বাড়ি ফেরেন তিনি। এর পরে বাড়ির সামনে ক্লাবের মাঠে বসেই টিভিতে চোখ রেখেছিলেন। এ দিন প্রায় সর্বক্ষণই ফিরহাদের সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী ইসমাত হাকিম। তিনি বললেন, ‘‘এটা তৃণমূল পরিবারের জয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়। ফিরহাদ হাকিমের স্ত্রী হিসাবে গর্ব বোধ করি। আমি ঘর-সংসার, ব্যবসা সামলাই, উনি বাইরেটা সামলান। এটাই
সাফল্যের ইতিকথা।’’
এর মধ্যে বেলা ১১টা নাগাদ কালীঘাট থেকে ফোন পেয়ে সস্ত্রীক মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ছুটে যান ফিরহাদ। সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে কাটিয়ে আবার ফেরেন চেতলার মাঠে।
দুপুর ১টা নাগাদ হেস্টিংস হাউস থেকে ফোন আসে বড় মেয়ে প্রিয়দর্শিনীর। জানান, কাউন্সিলর হিসাবে সার্টিফিকেট নিতে সেখানে যেতে হবে ফিরহাদকে। দেড়টা নাগাদ সেখান থেকে শংসাপত্র নিয়ে
বেরিয়ে তার পরে সবুজ আবির মেখে মেতে ওঠেন ফিরহাদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy