Advertisement
০৮ মে ২০২৪

সিন্ডিকেটের ‘দাদাগিরি’, ধৃত যুবক

এ রাজ্যে ইমারতি সিন্ডিকেটের ব্যবসায় বারবারই শাসক দলের নাম জড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কড়া হতে বলেছিলেন।

বালিগঞ্জ পার্ক রোডে এই বাড়িটি ঘিরেই গোলমাল, ধৃত আসগর (ইনসেটে)। —নিজস্ব চিত্র।

বালিগঞ্জ পার্ক রোডে এই বাড়িটি ঘিরেই গোলমাল, ধৃত আসগর (ইনসেটে)। —নিজস্ব চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪০
Share: Save:

খাস কলকাতায় ফের ইমারতি সিন্ডিকেটের দাদাগিরি। এ বার নিশানায় বড় মাপের একটি নির্মাণকারী সংস্থা। অভিযোগের তির শাসকদলের প্রতি। যদিও অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আসগর নামে ওই সিন্ডিকেটের এক চাঁইকে তোলাবাজি, হুমকির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফেরার সোনা ও কানা ভোলা নামে আরও দুই অভিযুক্ত।

এ রাজ্যে ইমারতি সিন্ডিকেটের ব্যবসায় বারবারই শাসক দলের নাম জড়িয়েছে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কড়া হতে বলেছিলেন। রাজ্য তথা খোদ শহরে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য যে কমেনি, তা বালিগঞ্জ পার্ক রোডের ঘটনাটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রশাসন যে কঠোর, তা এ দিনের পুলিশি হস্তক্ষেপ প্রমাণ করেছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নালিশ করতে এক বড় মাপের নির্মাণকারী সংস্থা নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে যে ভাবে শাসকদলের শীর্ষস্তরে পৌঁছেছে, তা সাধারণ মানুষের পক্ষে কি সম্ভব, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বালিগঞ্জ পার্ক রোডে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে একটি বহুতল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, প্রথম থেকেই সিন্ডিকেটের সদস্যেরা ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের বরাত পেতে হুমকি দিয়েছিল। বরাত না দিলে টাকার দাবি করা হয়। গোড়ায় সংস্থার কর্মচারীরা পরিস্থিতি সামলালেও সম্প্রতি তা আয়ত্তের বাইরে যায় বলে অভিযোগ। সংস্থার কর্পোরেট ম্যানেজার শুভাশিস শেঠের দাবি, ‘‘মশলাবোঝাই গাড়ি বালিগঞ্জ পার্ক রোডের নির্মাণস্থলে আসত। কিন্তু সিন্ডিকেটের সদস্যেরা গাড়ি ঢোকার জন্য মোটা টাকা দাবি করে। দিন দুয়েক আগে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে কলকাতায় নানা কাজ করছি। কিন্তু এমন পরিস্থিতির সামনে আগে পড়িনি।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার সকালে থানায় অভিযোগ দায়েরের আগেই সংস্থার তরফে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরে যোগাযোগ করা হয়। শীর্ষ স্থানীয় এক যুব নেতা হস্তক্ষেপ করেন। শনিবার বিকেলে আসগরকে তার পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।

কিন্তু সিন্ডিকেটের চাঁইকে গ্রেফতারে কেন শাসক দলের শীর্ষ নেতার হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হল, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সংস্থা আমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ওরা কার সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করেছে, তা বলতে পারব না।’’ স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য এ ব্যাপারে বিশদ মন্তব্যে যেতে চাননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘‘বালিগঞ্জ পার্ক রোডের ঘটনাটি আমি জানি না। তবে এমন ঘটলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ballygunge Park Road Syndicate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE