Advertisement
E-Paper

রেস্তরাঁর মাংসে ছাতা, ফ্রিজারের মুরগি পচা 

বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর পুরসভা যে অভিযান চালাবে, তা দিন দুয়েক আগেই ঠিক হয়েছিল। বিষয়টি কেউ কেউ জেনে যাওয়ায় অনেকেই সতর্ক হয়ে যায়। তার পরেও অনেকেই যে রমরমিয়ে পচা মাংস রেঁধে বেচছে, তা হাতেনাতে‌ ধরেন পুর কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০০:৫৪
পচা মাংস ধরতে অভিযান। বৃহস্পতিবার, ব্যারাকপুরে। নিজস্ব চিত্র

পচা মাংস ধরতে অভিযান। বৃহস্পতিবার, ব্যারাকপুরে। নিজস্ব চিত্র

মরা মুরগি-কাণ্ডের পরে পেরিয়েছে প্রায় দেড় মাস। ভাগাড়-কাণ্ড নিয়ে শোরগোল চলছে দু’সপ্তাহ ধরে। তার পরেও যে কিছু রেস্তরাঁ এবং মাংসের দোকানের হুঁশ ফেরেনি, তার প্রমাণ মিলল ব্যারাকপুরে।

বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর পুর কর্তৃপক্ষের অভিযানে ছাতা পড়া মাংস মিলল এক রেস্তরাঁ থেকে, মাংসের দোকান থেকে মিলল পচা মাংস। সেই সব মাংস বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের সতর্ক করে নোটিস পাঠাচ্ছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভার মতো ব্যারাকপুরেও হিমায়িত মাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আনতে চলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। ভাগাড়-কাণ্ড নিয়ে এত হইচইয়ের পরেও নামজাদা রেস্তরাঁ থেকে এমন অস্বাস্থ্যকর মাংস উদ্ধারে বিস্মিত পুর কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর পুরসভা যে অভিযান চালাবে, তা দিন দুয়েক আগেই ঠিক হয়েছিল। বিষয়টি কেউ কেউ জেনে যাওয়ায় অনেকেই সতর্ক হয়ে যায়। তার পরেও অনেকেই যে রমরমিয়ে পচা মাংস রেঁধে বেচছে, তা হাতেনাতে‌ ধরেন পুর কর্তৃপক্ষ।

এ দিন দুপুরে ব্যারাকপুরের পুর প্রধান উত্তম দাস এবং কয়েক জন কাউন্সিলর অভিযানে বেরোন। সঙ্গে ছিল টিটাগড় থানার পুলিশ। বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁয় হানা দিয়ে দেখা যায়, সেখানে তাজা মাংসই রাখা। রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, তাঁরা স্থানীয় দোকান থেকে তাজা মাংসই কেনেন। কিন্তু মাংস বেঁচে গেলে কী করা হয়? বেশির ভাগ রেস্তরাঁই অবশ্য এই প্রশ্নের সদুত্তর দেয়নি।

পুর প্রধান প্রায় সকলকেই সাবধান করেন, ফ্রিজারে রাখা বাসি এবং পচা মাংস যেন ব্যবহার করা না হয়। তা দেখতে তাঁরা মাঝেমধ্যেই অভিযান চালাবেন। তখন কেউ ধরা পড়লে তাঁদের জরিমানা করা হবে।

একটি নামজাদা রেস্তরাঁ চেনের শাখায় ঢুকে চোখ কপালে ওঠে পুর কর্তাদের। নামী রেস্তরাঁটির অন্দরসজ্জা তাক লাগানো হলেও রান্নাঘর যথেষ্ট অপরিষ্কার। রেস্তরাঁর কর্মীরা জানান, তাঁরা স্থানীয় দোকান থেকে মাংস কেনেন না। তাঁদের মাংস আসে কলকাতা থেকে। কলকাতার কোথা থেকে আসে মাংস? কর্মীরা জানান, তা তাঁরা জানেন না। ফ্রিজার খুলে মাংস বার করতে বলা হয় কর্মীদের। মুরগির মাংস বলে যেটা বার করা হয়, তা হল প্যাকেটবন্দি বড় বড় কয়েকটি মাংসের তাল। বেরোয় খাসির মাংসের কয়েকটি প্যাকেটও। প্যাকেট খুলতেই দেখা যায়, সেই মাংসের উপরে ছাতা পড়েছে। কর্মীরা জানান, মাংস ভেজে ফ্রিজারে রাখা হয়। এত মাংস কি এক দিনে ব্যবহার করা হয়? সদুত্তর মেলেনি কর্মীদের থেকে। এর পরে সেই মাংস বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুর প্রধান রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষকে দেখা করার নির্দেশ দেন।

অভিযান শেষ হওয়ার পরে পুর প্রধানের কাছে খবর আসে, তালপুকুরের একটি মাংসের দোকানের ফ্রিজারে পচা মাংস

মজুত আছে। ফের সেই দোকানে

হানা দেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেই দোকানের ফ্রিজার থেকে প্রচুর মাংস উদ্ধার হয়। কোথা থেকে এল এত মাংস? দোকানের মালিক জানান, বিক্রি না হওয়া মাংসই ফ্রিজারে রয়েছে। প্রায় সবই ছিল মুরগির পায়ের মাংস। এত মাংস বিক্রি হল না কেন? তার সদুত্তর মেলেনি। সেই মাংস বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুর প্রধান জানান, বাজেয়াপ্ত মাংস পরীক্ষা করা হবে। তার পরেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Meat Hotel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy