ফেসবুকে গলায় ফাঁসের ছবি। সঙ্গে বিষণ্ণ কিছু ‘স্টেটাস আপডেট’। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই উদ্ধার হল সেই কিশোরের ঝুলন্ত দেহ।
রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দমদম থানা এলাকার নয়াপট্টির দুর্গাবতী কলোনিতে। মৃত কিশোরের নাম বিশ্বজিৎ দাস (১৭)। পুলিশ জানায়, বাড়িতে সিলিংয়ের বাঁশে ওড়নার ফাঁস থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখা যায়। ঘরের দরজা ভেঙে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা বিশ্বজিৎকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরেই বিশ্বজিতের মা সুমিত্রাকে ফেসবুকের ওই লেখার কথা জানান কিশোরের এক বন্ধুর মা। তাঁরাই জানান, ওই কিশোরের লেখায় প্রণয়ঘটিত কারণে অবসাদের ইঙ্গিত মিলেছে। এই ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি আত্মহত্যা।
পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার রাত ২টো ৩৯ মিনিট নাগাদ বিশ্বজিৎ একটি গ্রাফিক কার্ড ‘পোস্ট’ করে। সেখানে লেখা ছিল, ‘বড় লোকের ভালবাসা প্রকাশ পায় দামি দামি উপহারে! আর গরিবের ভালবাসা প্রকাশ পায় দু’ফোঁটা চোখের জলে’! ওই ‘পোস্টে’ই নিজের মনের ভাব বোঝাতে কিশোর লিখেছে, ‘সবাই ভাল থেকো, সবাই সুখে থেকো, কখনও মন খারাপ কোরো না, আর কখনও কারও মন নিয়ে খেলা কোরো না’! এর ৩১ মিনিট পরেই সিলিং ফ্যানে দড়ির ফাঁস লাগানো ছবিও ‘পোস্ট’ করা হয়েছে বিশ্বজিতের প্রোফাইলে। চার মিনিটের মাথায় আবার একটি ‘পোস্ট’। লেখা, ‘সব মানুষই ভালবাসে। কিন্তু প্রথম ভালবাসার মানুষকে খুব কম মানুষ পায়। কারণ, যে আপনাকে প্রথম ভালবাসতে শেখায়, আপনাকে প্রথম কষ্টও সে-ই দেবে।’ পরে এই লেখাই ‘কভার ফোটো’ করে বিশ্বজিৎ। প্রথম লেখায় এক জন মন্তব্যও করেছেন, ‘ঠিকই বলেছো ভাই’। ‘কভার ফোটো’ করা লেখাটি এক জন ‘শেয়ার’ করেছেন। তবে পরিবারের দাবি, বিশ্বজিতের মৃত্যুর আগে সে সব বিষয়ে কিছুই টের পাননি অভিভাবকেরা।