Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩

ফুটপাতের খাবারে দেওয়া হবে গ্রেড

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) গাইডলাইন মেনে দেশের বড় বড় শহরে ফুটপাত এবং রাস্তার ধারের খাবারের মান বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় ফুড সেফটি কমিশন।

পরীক্ষা: রাস্তার ধারের এমন দোকানেই চলবে নজরদারি। সোমবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

পরীক্ষা: রাস্তার ধারের এমন দোকানেই চলবে নজরদারি। সোমবার, ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০১:৪৪
Share: Save:

খাবারের মান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা দেখে ফুটপাত, রাস্তার ধারের খাবারের দোকান ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ গ্রেড পাবে।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) গাইডলাইন মেনে দেশের বড় বড় শহরে ফুটপাত এবং রাস্তার ধারের খাবারের মান বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় ফুড সেফটি কমিশন। তারই তালিম দিতে পশ্চিমবঙ্গ-সহ ৬টি রাজ্যের ফুড সেফটি অফিসারদের নিয়ে সোমবার এক কর্মশালা হল সল্টলেকে প্রশাসনিক ট্রেনিং কেন্দ্রে। সেখানে হাজির ছিলেন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব চোপড়া, মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ, রাজ্যের ফুড সেফটি কমিশনার গোধূলি মুখোপাধ্যায়-সহ কেন্দ্র ও রাজ্যের একাধিক কর্তাব্যক্তি।

কর্মশালায় এক পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়, সারা দেশে বিভিন্ন শহরে প্রায় এক কোটি ফুড ভেন্ডার রয়েছে। খাবার বিক্রি করেই সংসার চালান তাঁরা। এটি যেমন ঠিক, তেমনই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া লোকের সংখ্যাটাও কম নয়। সারা বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলিতে তার সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি। আর মারা যান প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ। ভারতে মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইয়ের মতো শহর থাকলেও কলকাতায় ফুটপাতের খাবারের আলাদা আর্কষণ বরাবরই। তাই এ শহরের ফুটপাতের খাবার নিয়ে বড় বেশি চিন্তিত রাজ্য এবং কলকাতা পুর প্রশাসন। এ বার শহরের ফুটপাতে, রাস্তার ধারে বসা হকারের বিক্রি করা খাবারের মান বাড়াতে চান তাঁরা।

যে সময়ে শহর তথা রাজ্য জুড়ে ভাগাড়ের মাংস নিয়ে তোলপাড় চলছে, ঠিক তখনই খাবারের মান নিয়ে এ ধরনের কর্মশালা অনেকটাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে করছেন ফুড সেফটির দায়িত্বে থাকা অফিসারেরা। কর্মশালায় জাতীয় কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ইন্দিরা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কলকাতায় বহু মানুষ প্রতিদিন কাজের জন্য বাইরে থেকে আসেন। তাঁদের অধিকাংশই গরিব, নিম্নবিত্ত পরিবারের। খিদে মেটাতে কলকাতার রাস্তা, ফুটপাতে তৈরি খাবার খেতে হয় তাঁদের। সেই খাবারের মান কতটা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযুক্ত, তা দেখাই এই কর্মশালার প্রধান লক্ষ্য।’’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাই রাস্তায়, ফুটপাতে বিক্রি হওয়া খাবারের মান স্বাস্থ্য সম্মত করতে বলেছে।

Advertisement

তা কী রকম?

দিল্লির মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক শর্মিলা স্যানাল তথ্য-সহ দেখিয়ে দেন কী ভাবে রাস্তার ধারে থাকা খাবারের দোকানের মান উন্নত করা যায়। তার ভিত্তিতেই মিলতে পারে গ্রেড। অর্থাৎ, কে কোন গ্রেড পাবে, তা নির্ভর করবে কী কী পরিকাঠামো দোকানগুলিতে রয়েছে তার উপরেই। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভাল খাবার দেওয়া, রান্নায় ভাল জল ব্যবহার করা, রসুইখানার পরিবেশ সুস্থ রাখা, খাবারে ক্ষতিকারক রং ব্যবহার না করা, আনাজ ও মাংসের মান ঠিক রাখা— এই সব দিকেই নজর দিতে হবে।’’ এর পাশাপাশি, দোকানের চারপাশ পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সব দিক ঠিক থাকলে তবেই একটি দোকান ভাল গ্রেড পেতে পারে। তাতে দোকানের কী লাভ? পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘ফুটপাতে দশটি দোকানের একটি ভাল গ্রেড পেলে বেশির ভাগ খদ্দের সেই দোকানেই যাবে। তখনই অন্য দোকানগুলি নিজের ব্যবসা বাঁচাতে ভাল গ্রেডের জন্য ছুটবে।’’ তাতে শহরের ফুটপাতে, রাস্তার ধারে থাকা খাবারের দোকানের মান বাড়বে বলেই তাঁদের বিশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.