মেয়েকে কী ভাবে জানানো হবে পুরো ঘটনা, এখনও তা ঠিক করে উঠতে পারছেন না ঘোষ পরিবারের সদস্যেরা। কারণ, দুর্ঘটনার পর থেকে তার পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র জানেন না কলকাতা পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপি ঘোষের মেয়ে নবনীতা সাহা।
গত রবিবারই উলুবেড়িয়ায় পথ দুর্ঘটনায় নবনীতার স্বামী প্রীতম সাহা ও তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলে শিবমের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় থাকার পরে গত শুক্রবার গভীর রাতে মারা গিয়েছেন নবনীতার মা মধুমিতা ঘোষও। কিন্তু নবনীতা নিজেও গুরুতর জখম থাকায় গত ক’দিন কেটেছে একের পর এক অস্ত্রোপচারেই। ফলে সেই দিন তাঁর সঙ্গে আর যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বিষয়ে বিন্দুবিসর্গও জানেন না তিনি। তিনি এখনও ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পারিবারিক সূত্রের খবর, একাধিক অস্ত্রোপচারের পরে নবনীতার শারীরিক অবস্থার আগের থেকে সামান্য উন্নতি হয়েছে। অল্প কথাবার্তাও বলছেন তিনি।
পরিজনেরা এখনও দুর্ঘটনার খবর তাঁকে দেননি। বাপিবাবুর এক পারিবারিক বন্ধুর কথায়, ‘‘নবনীতাকে কী ভাবে বলা হবে, সেটাই তো বুঝতে পারছি না। ও তো এখনও জানেই না ঘটনাটি! ও ভাবছে, ওরই সবচেয়ে বেশি চোট লেগেছে।’’ আর এক বন্ধুর কথায়, ‘‘আর একটু সুস্থ হলে হাসপাতালে থাকাকালীনই ওকে জানানো হতে পারে। তাতে চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে প্রাথমিক ট্রমাটা কাটানো যেতে পারে আর কী! এখন দেখা যাক, কী হয়।’’
পরিবার সূত্রে খবর, শনিবারই বাপিবাবুর স্ত্রী মধুমিতাদেবীর দাহকার্য সম্পন্ন হয়েছে। মানসিক ভাবে পুরোপুরি বিধ্বস্ত এখন কাউন্সিলর। কিন্তু মেয়ের শারীরিক অবস্থা আগের থেকে ভাল হয়েছে শুনে তাঁকে দেখতে রবিবার হাসপাতালে যান বাপিবাবু। পারিবারিক বন্ধুরা জানাচ্ছেন, মেয়ের শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে শুনে নিজেকে মানসিক ভাবে শক্ত করেছেন তিনি। অন্যদের বলছেন, ‘‘যা গিয়েছে, তা তো আর ফেরত আনতে পারব না। মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠুক।’’ প্রসঙ্গত, বাপিবাবুর আর এক ছেলে আছেন।
বন্ধুরা এও জানাচ্ছেন, বাপিবাবু দ্রুত কাজকর্মের মধ্যে ফিরতে চাইছেন। এ দিনও নিজের অফিসে কিছুক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। বাপিবাবুর এক অনুগামী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বাপিদাও কাজের মধ্যে ফিরতে চাইছেন। বাড়িতে বেশিক্ষণ থাকতে চাইছেন না।’’