Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Police

কলকাতায় কোটি টাকার পেটিএম প্রতারণা, পুলিশের জালে জামতাড়া গ্যং-এর পাঁচ পাণ্ডা

শহর জুড়ে তিরিশের বেশি এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। প্রতি ক্ষেত্রেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন পেয়ে মেসেজে পাঠানো লিঙ্ক ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করতে গিয়ে টাকা খুইয়েছেন মানুষ। 

জামতাড়া গ্যাং-এর এই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

জামতাড়া গ্যাং-এর এই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৪৫
Share: Save:

শহর জুড়ে পেটিএম জালিয়াতির অন্যতম মূল পাণ্ডা-সহ পাঁচ জনকে পাকড়াও করল কলকাতা পুলিশএটিএমের স্কিমিং প্রতারণার মতোই শহরের বেশ কয়েক ডজন মানুষ এই জালিয়াতদের পাল্লায় পড়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। তদন্তের শুরুতেই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া গ্যং-কে সন্দেহ করেন প্রতারণার কারিগর হিসাবে। কিন্তু জামতাড়ায় এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে একাধিক গ্যাং যুক্ত থাকায়, ঠিক কোন দল এই কারবার চালাচ্ছে তা চিহ্নিত করতে পারছিল না পুলিশ।

শেষ পর্যন্ত শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দেওঘর এবং জামতাড়ার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের রবিবার স্থানীয় আদালতে পেশ করা হবে। সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হবে কলকাতায়।

কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ১৫ জানুয়ারি সমীর কুমার সিনহা নামে এক ব্যক্তি শেক্‌সপীয়র সরণি থানায় প্রতারণার অভিযোগ জানান। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি একটি ফোন পান। সেই ফোনে বলা হয় পেটিএমে তাঁর কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে। তাঁকে একটি লিঙ্ক পাঠানো হয় এসএমএস-এ। সেই লিঙ্ক-এ ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করা মাত্রই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যায় প্রায় সাত লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: গরু পারাপারেরও সাক্ষী টালা সেতু

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু ওই ব্যক্তি নন, শহর জুড়ে তিরিশের বেশি এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। প্রতি ক্ষেত্রেই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির ফোন পেয়ে মেসেজে পাঠানো লিঙ্ক ক্লিক করে কেওয়াইসি আপডেট করতে গিয়ে টাকা খুইয়েছেন মানুষ। কলকাতা পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্তা বলেন, ‘‘ওই লিঙ্কের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে প্রতারণার চাবিকাঠি।” লিঙ্কে ক্লিক করা মাত্রই গ্রাহকের মোবাইল দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে জালিয়াতরা। সেখান থেকে নেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে কয়েক মূহুর্তের মধ্যে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাচার হয়ে যায় অন্য অ্যাকাউন্টে।” প্রাথমিক তদন্তের পর জামতাড়া গ্যাংকেই চিহ্নিত করে পুলিশ। কিন্তু দেড়শোর বেশি ভুয়ো নথিতে তৈরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওই জালিয়াতির টাকা পাচার হওয়ায়, শুরুর দিকে মূল গ্যাংকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।

আরও পড়ুন: পার্ক সার্কাসে মৃত্যু প্রতিবাদীর, সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও মজবুত করার ডাক

কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীরবাবুর প্রতারণার তদম্তে নেমে বিনোদ কুমার পণ্ডিত নামে দেওঘরের ২২ বছরের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে হেয়ার স্ট্রিট থানায় গত বছর জুলাই মাসে ৮৮ লাখ টাকার একই ধরনের প্রতারণার ঘটনায় জামতাড়া ও ধানবাদ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। ৮৮ লাখ টাকার প্রতারণার ঘটনায় এর আগে আরও সাতজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ৮৮ লাখের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা উদ্ধারও করেছিল পুলিশ।

কলকাতা পুলিশের এক তদন্তকারী বলেন, ধৃতদের কলকাতায় এনে জেরা করলে বোঝা যাবে ওই গ্যংয়ের আসল চেহারা। শুধু কলকাতা নয়, একই ভাবে এরা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতারণা করছে। সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের তরফ থেকেও পেটিএম প্রতারণা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Paytm fraud
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE