Advertisement
E-Paper

সেতু বিপর্যয়ে মৃত শ্রমিকদের পরিজনকে চাকরি

বুধবার ওই দুই পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন বেহালার একটি গুরুদ্বারের অনুষ্ঠানে। সেখানেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, গৌতমবাবুর ছেলে তোতন মণ্ডল এবং প্রণববাবুর ভাই উৎপল দে ওই চাকরি পাবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৯
 প্রণব দে-র মা ময়নাদেবী। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

প্রণব দে-র মা ময়নাদেবী। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

বড় ছেলে প্রণব দে ছিলেন পরিবারে একমাত্র রোজগেরে। মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। শোকের মধ্যেই মা-ভাইয়ের মনে উঁকি দিচ্ছিল আশঙ্কা। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছিলেন না, সংসার কী ভাবে চলবে। একই দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন মুর্শিদাবাদের তেঁতুলিয়ার বাসিন্দা গৌতম মণ্ডলের পরিবারও। সেতুভঙ্গের দু’দিন পরে উদ্ধার হয়েছিল গৌতমের দেহ।

বুধবার বিকেলে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রণব দে ও গৌতম মণ্ডলের বাড়ির এক জন করে সদস্যকে সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়া হবে। প্রণববাবু জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো প্রকল্পে ঠিকা শ্রমিক ছিলেন। আর শ্রমিকদের জন্য রান্না করতেন গৌতমবাবু। এক পুলিশকর্তা জানান, পুলিশ কমিশনারের নির্দেশেই মৃত শ্রমিকদের এক পরিজনকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করতে বলা হয়েছে।

বুধবার ওই দুই পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন বেহালার একটি গুরুদ্বারের অনুষ্ঠানে। সেখানেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, গৌতমবাবুর ছেলে তোতন মণ্ডল এবং প্রণববাবুর ভাই উৎপল দে ওই চাকরি পাবেন।

মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে উদ্ধারকারী সাহায্য করেছিল বেহালা গুরুদ্বার। বুধবার গুরুদ্বারের পক্ষ থেকে দুই মৃতের পরিবারের সদস্যদের হাতে সাহায্য হিসেবে চেক তুলে দেওয়া হয়। দুই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন মেট্রোর নির্মাতা সংস্থাও। তাদের তরফে দুই পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, মেট্রোর অন্য শ্রমিকদের বাসনপত্র এবং এক মাসের রান্নার রসদ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের তরফে চাকরির ঘোষণা করার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রণববাবুর মা ময়নাদেবী। ছোট ছেলে উৎপল এবং নিজের ভাইয়ের সঙ্গে তিনি এ দিন অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রণবের বিয়ের কথা চলছিল। ঘটনার আগের দিনও ফোনে জানিয়েছিল পাত্রী ঠিক করতে। পরে নিজে গিয়ে দেখে আসবে। কিন্তু বুঝিনি সেটাই ওর শেষ ফোন।’’ ভাই উৎপল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তিনি বলেন, ‘‘দাদার উর্পাজনেই সংসার চলত। দাদার মৃত্যু হওয়ার কী হবে বুঝতে পারছিলাম না। আজ কিছুটা স্বস্তি পেলাম।’’ বহরমপুরের পোরডাঙায় থাকেন প্রণবের মা এবং ভাই। মামা কৃষ্ণগোপালের কাছে বড় হয়েছিলেন প্রণব।

এ দিন ছোট ছেলে তোতনকে নিয়ে এসেছিলেন গৌতম মণ্ডলের স্ত্রী অনিতাদেবী। আচমকা চাকরির কথা শুনে শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখ মোছেন তিনিও। ছেলে তোতন বাবার সঙ্গে মেট্রোর কাজ করতেন। ঘটনার সময়ে সেতুর উল্টো দিকে কাজ করছিলেন তিনি। ৪ সেপ্টেম্বর ভূমিকম্পের মতো সব কিছু কেঁপে উঠতেই তোতন দেখেন, সেতুর একটি অংশ ভেঙে পড়েছে নীচে। সেই অংশের তলাতেই বাবা রান্নার কাজ করতেন। বাবাকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার না করতে পারার আক্ষেপ এ দিনও ঝরে পড়ে তোতনের গলায়।

Job Majerhat Majerhat Bridge collapse Kolkata Police Civic Volunteer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy