কথিত আছে, গঙ্গাকে মর্ত্যে এনেছিলেন ভগীরথ। সেই ভগীরথকেই এ বার দেখা যাবে উত্তর কলকাতার একটি মণ্ডপে। মা দুর্গাকে সে ডেকে আনছে পৃথিবীতে। তবে এই ভগীরথ কোনও পৌরাণিক চরিত্র নয়। আমার-আপনার ঘরের ছেলে।
পুজো নিয়ে চারদিকে এত হইচই, এই বুঝি ঠাকুরের খড়ের উপরে মাটি দেওয়া হল। এই বুঝি মায়ের ত্রিশূল ঢুকে গেল অসুরের বুকে। এই বুঝি মায়ের চোখ আঁকা হল। পাড়ার অন্য ছেলেরা হই হই করে ঠাকুরদালানে ভিড় জমায়। শুরু হয়ে যায় ওদের পুজো। কিন্তু, পুজোর ভগীরথেরা অন্যদের সঙ্গে সেই আনন্দ কখনওই ভাগ করে নিতে পারে না। ওদের জগৎটাই যে কাটে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে।
ভগীরথদের কেউ পুজো দেখে টিভির পর্দায়, কেউ তা অন্যের মুখে শোনে। কেউ আবার বুঝতেই পারে না, পুজো জিনিসটা আসলে কী। কিন্তু বছরের ওই চারটে দিন নতুন জামা হাতে পেলে ওদের মুখের হাসিটা বাঁধিয়ে রাখতে হয়। কেউ ওদের দিকে বেশি নজর দিলে, ওদের ভালবাসলেই ওরা খুশি। এটুকুই ওদের চাহিদা।
উত্তর কলকতার ওই মণ্ডপটি শিল্পী রিন্টু দাস এ বার উৎসর্গ করেছেন ভগীরথদের। রিন্টুর প্রশ্ন, ‘‘সবাই পুজোয় আনন্দ করে, মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখে বেড়ায়, কিন্তু শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের কাছে পুজোর কোনও আনন্দই নেই। ভগীরথদের পুজো কেমন কাটে, আমি সেটাই সেটাই ফুটিয়ে তুলতে চাইছি।’’
শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু ভগীরথ মণ্ডপে শিল্পীর কথক ঠাকুর। প্রতিবন্ধী শিশুদের মনের ব্যথা ফুটে উঠবে ভগীরথের নানা অভিব্যক্তির মাধ্যমে। প্রতিবন্ধীদের হতাশা, হাসি, আনন্দ, দুঃখ সব জুড়ে থাকবে মণ্ডপের পরতে পরতে। ভগীরথ যেন বলতে চাইছে, ‘‘মা তুমি কার? তুমি কি এক বারের জন্যও আমাদের হতে পারো না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy