Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা

গোলপার্কে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের সংগ্রহশালায় আধুনিকীকরণের কাজ চলছে ধারাবাহিক ভাবেই। বিশাল সংগ্রহালয়ের নানা অংশে সাজানো রয়েছে উনিশ শতকের শিল্পীর আঁকা তৈলচিত্রে দেবী দুর্গা, ডোকরার সপরিবার দুর্গা, আবার শোলার তৈরি বিরাট প্রতিমা।

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:০০

সংগ্রহশালায় সপরিবার দুর্গা

চার দশক পেরিয়ে গিয়েছে ১৯৭৬-এ গড়ে ওঠা সংগ্রহশালাটির। তা বলে সে এক জায়গায় থেমে নেই। গোলপার্কে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের সংগ্রহশালায় আধুনিকীকরণের কাজ চলছে ধারাবাহিক ভাবেই। বিশাল সংগ্রহালয়ের নানা অংশে সাজানো রয়েছে উনিশ শতকের শিল্পীর আঁকা তৈলচিত্রে দেবী দুর্গা, ডোকরার সপরিবার দুর্গা, আবার শোলার তৈরি বিরাট প্রতিমা। নানা ধরনের শিল্পসামগ্রীতে দুর্গা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের যেমন দেখা যাবে, তেমনই মোট ১৫০০ শিল্পবস্তুর মধ্যে আছে চিত্র ভাস্কর্য পুথি চারু ও কারুশিল্প রুপোর গয়না পোড়ামাটি শিল্প ছাপাই ছবি হাতির দাঁতের উপর আঁকা ছবি পটচিত্র বস্ত্রশিল্প ও আলোকচিত্র, জানালেন সংগ্রহশালার ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাতীতানন্দ মহারাজ। দেবী দুর্গার একক ও সপরিবার মূর্তি ছাড়াও লক্ষ্মী সরস্বতী গণেশ অন্নপূর্ণা জগদ্ধাত্রী মহাদেবের পৃথক মূর্তিও এখানে রক্ষিত আছে। বর্তমানে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রদর্শকক্ষের পুনর্গঠনের কাজ চলছে। কিউরেটর শঙ্খ বসু জানালেন, সংগ্রহশালার যাবতীয় তথ্যও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে। গোলপার্কের প্রায় আট দশকের প্রাচীন এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিতে সংগ্রহশালার পাশাপাশি রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাফেজখানা যেখানে নিয়মিত চলে গবেষণা ও প্রকাশনার কাজ, লক্ষাধিক বইয়ের সুপরিচিত গ্রন্থাগার, নানা ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা, একটি সমৃদ্ধ প্রকাশনা, মাসিক পত্রিকা প্রকাশ, নিয়মিত বক্তৃতামালার আয়োজন। বিশেষ করে তিনতলার কয়েক হাজার বর্গফুট জোড়া এলাকায় ঐতিহ্যমণ্ডিত সংগ্রহশালাটি শহরের গর্ব বইকী। সংগ্রহশালা থেকে সঙ্গের দুর্গার ছবিটি অশোক বসুর তোলা। সপরিবার দেবী দুর্গার এই ক্ষুদ্রায়ত মৃন্ময় মূর্তিটি আধুনিক কালের, কৃষ্ণনগরের ঘুর্নির বিখ্যাত মৃৎশিল্পীদের হাতে তৈরি। আকারে ছোট হলেও বড় আকারের মূর্তির যাবতীয় বৈশিষ্ট্য এই মূর্তিতে উপস্থিত, আর সেটাই কৃষ্ণনগরের শিল্পীদের কৃৎকৌশলের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিক।

সন্দেশ

• ষাটের দশকের গোড়ায় সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যখন নতুন পর্যায়ে ‘সন্দেশ’ সম্পাদনা শুরু করেন সত্যজিৎ রায়, সে সময়ে তাঁর আঁকা কোনও একটি সংখ্যার প্রচ্ছদ সন্দীপ রায় সম্পাদিত এ বারের শারদীয় সংখ্যা-য় (সঙ্গের ছবি)। সত্যজিতের পছন্দের পরিচালকেরা সারা পৃথিবীতে ছড়ানো, তাঁদের কোন কোন ছবি হয়ে উঠেছিল তাঁর প্রিয় সিনেমা, তা নিয়ে বিস্তারিত লেখা সম্পাদকের। স্থিরচিত্র, পোস্টার, আর পরিচালকদের মুখের সঙ্গে এ সমস্ত ছবি সম্পর্কে সহজ স্বাদু গদ্যলেখাটি কমবয়সিদের জানার পরিসরকে রীতিমতো প্রসারিত করবে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প নিয়ে কমিক্‌স-কার্টুন। রবীন্দ্রনাথের জুতা-আবিষ্কার কবিতাটি নিয়ে নাটক লিখেছেন সৌমিত্র বসু। কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ। প্রসাদরঞ্জন রায়ের ‘ড্রাকুলা’ লেখাটি বিশেষ উল্লেখ্য। প্রবন্ধ, ফিচার, উপন্যাসের সঙ্গে নবনীতা দেবসেন অনিতা অগ্নিহোত্রী যশোধরা রায়চৌধুরী দীপান্বিতা রায় প্রমুখের গল্প। ছড়া-কবিতার মধ্যে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ছড়া: ‘সিংহের সিং নেই/ কিশোরকুমার বলে গেছে তার গানেতে/ সিংঘীরা খেতে দেয় তাই বাঁচে প্রাণেতে।

প্রদর্শনীতে দুর্গা

• শান্তিনিকেতন কলাভবনে নন্দলাল বসুর ছাত্র ছিলেন ভূতনাথ পাল। পেয়েছিলেন রামকিঙ্কর, অবনীন্দ্রনাথ বা বিনোদবিহারীকেও। বোলপুর হাইস্কুল এবং পরে বেলুড় মঠে রামকৃষ্ণ মিশনে শিল্প-শিক্ষক হয়ে আসেন। অবসর নেন শান্তিনিকেতন পাঠভবন থেকে। নিজেদের সংগ্রহ থেকে ওঁরই আঁকা একটি দুর্গা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে এ মাসের প্রদর্শ, সঙ্গের ছবি। জলরঙে গোলাকৃতি এই ছবিটি শিল্পী এঁকেছিলেন ১৯৬০ সালের ১৫ অগস্ট। অন্য দিকে, জোকার গুরুসদয় সংগ্রহশালায় চলছে দুর্গা নিয়ে একটি চিত্রপ্রদর্শনী। আধুনিক শিল্পীদের সঙ্গেই এখানে প্রদর্শিত হচ্ছে নিজস্ব সংগ্রহ থেকে দুর্গা চিত্র। সোম ও ছুটির দিন বাদে এটি চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত, ১১-৫ টা। দুর্গা নিয়ে প্রদর্শনী রয়েছে রানিকুঠির শ্রীঅরবিন্দ আশ্রমের গ্যালারি লা ম্যের-এ। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (৪-৮ টা) উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনীটি।

নতুন রাগ

• ‘কত না নদীর জন্ম হয়/ আর একটা কেন গঙ্গা হয় না’— এমনই গান গেয়েছিলেন মান্না দে। এ হেন গঙ্গাকে নিয়ে সিনেমা-কবিতা-গল্প-উপন্যাস সবই হয়ে গিয়েছে। কিছুটা অংশ বাকি ছিল, সেটুকু পূরণ করলেন সন্তুরশিল্পী তরুণ ভট্টাচার্য। তাঁর হাতে সন্তুরের বুকে তৈরি হল রাগ— গঙ্গা। তরুণবাবুর বক্তব্য— ‘পণ্ডিত রবিশংকরের যোগেশ্বরী আর কলাবতী রাগের মিশ্রণে আমি এ রাগ তৈরি করেছি। এ রাগে শুদ্ধ গান্ধার ও কোমল গান্ধার দুই স্বরেরই ব্যবহার আছে। ঋষভ বাদ। তবে একে আমি ঠাট খাম্বাজ বলব, কিন্তু দেখুন কোমল গান্ধারের ব্যবহার করেছি। আসলে গঙ্গার স্বচ্ছতা নিয়ে কারও কোনও মাথাব্যথা নেই দেখে আমি কাজটা শুরু করেছিলাম। সঙ্গে নিয়েছি তরুণ তবলিয়া প্রদ্যোৎ মুখোপাধ্যায়কে।’ এ প্রসঙ্গে প্রদ্যোৎবাবুর কথায়, ‘এই রাগের সঙ্গে বাজাতে গিয়ে আমি বাঁয়াকে বেশি কাজে লাগিয়েছি যাতে জলের ঢেউয়ের এফেক্ট আসে।’ রাগ গঙ্গা নামে সিডি প্রকাশিত হল আইটিসি সংগীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে, গিরিজা দেবীর হাতে।

পুজোর বই

• সারা কলকাতা শহরটাই এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত মেতে উঠেছে দুর্গাপুজোর সমারোহে। নানা দিক থেকে চার দিনে এত মানুষের শহরে ঠাকুর দেখা সত্যিই এক অভিনব বিষয়। সম্রাট চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতার দুর্গাপুজো নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত। এ বিষয়ের কয়েকটি বইও তিনি ইতিমধ্যে সম্পাদনা করেছেন। তাঁর সম্পাদিত এ বারের বইটি ‘কলকাতার দুর্গাপুজোর গল্প-স্বল্প’ (সেরিনা পাবলিকেশনস) বিষয় ভাবনায় অভিনব। কলকাতার প্রায় চল্লিশটি প্রথম সারির দুর্গাপুজোর উদ্যোক্তাদের পুজোর পাশাপাশি অন্যান্য নানা সামাজিক কাজ ও তাদের সম্পর্কে নানা মজার মজার ঘটনা এখানে তুলে ধরা হয়েছে। সাংবাদিক অভিনেত্রী বিজ্ঞাপন-ব্যক্তিত্ব চিত্রশিল্পী লেখক সহ সমাজের নানা পেশার মানুষের চোখে কলকাতার দুর্গাপুজোর অভিনবত্ব বিশেষ ভাবে ফুটে উঠেছে।

চরিত্র বদল

• কলকাতার পুজো প্যান্ডেলের চরিত্রে নিঃশব্দে সবিশেষ বদল ঘটে গিয়েছে। আগে প্যান্ডেলের কাঠামো যখন তৈরি হত তখন বাঁশের রঙের সঙ্গে প্রায় মিশে যেত নারকেল দড়ির রঙ। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায়, দূর থেকে ওদের তামাম পৃথিবীর উইল মনে হত। এখন বড় বড় দুর্গাপ্রতিমার প্যান্ডেলে চোখ পড়লে খানিক রঙিন লাগে বইকী। বাঁশের জো়ড়ার জায়গাগুলোয় রঙিন কাপড় দেখা যাচ্ছে। নারকেলের দড়ি প্রায় উধাও। কেন? প্যান্ডেল নির্মাতারা জানাচ্ছেন, এমনিতেই নারকেলের দড়ি তৈরি করার রসদ কমে আসছে ফলে দামও বাড়ছে। অন্য দিকে লোকের বাড়ি বাড়ি ঘুরে যাঁরা পুরনো কাপড়ের বদলে বাসনপত্র বিক্রি করেন তাঁদের কাছ থেকে অনেক শস্তায় কাপড় কিনে নেওয়া যাচ্ছে। বারো হাত সুতির শাড়ি থেকে নয় নয় করে সাত-আটটা লম্বা ফালি বের করা যায় যা দিয়ে প্যান্ডেল বাঁধার কাজ চলে। অতএব, অন্য আবরণে প্যান্ডেল রঙিন হওয়ার আগেই রঙিন কাপড়ের জন্য কিছুটা রঙ লেগেছে তাতে। তাই হোক, ভালই তো।

পুজোর নাটক

• বাংলা থিয়েটারে এখন আর শারদ-উত্সবকে কেন্দ্র করে নাট্য তৈরি বা তার অভিনয় হয় না বললেই চলে। পেশাদারি থিয়েটার অস্তমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ঝোঁক কমতে কমতে একেবারে তলানিতে। ফলত বাঙালির পুজো বিনোদন মানে ব্যবসায়িক বাংলা হিন্দি ছবি আর থিমপুজোর ভিড়ে গা ভাসানো। অশোকনগর নাট্যমুখ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ব্রাত্য বসু এবং শম্ভু মিত্রের নাটক নিয়ে তাঁরা পুজোয় পাড়ি জমাচ্ছেন বেঙ্গালুরুতে। নির্দেশক অভি চক্রবর্তী জানালেন, ‘গর্ভবতী বর্তমান’ আমাদের তৈরি নাটক। শম্ভু মিত্রের জন্মশতবার্ষিকীতে এ নাটক আমরাই প্রথম মঞ্চস্থ করি। এক দম্পতির জীবনের গল্পের সঙ্গে মিশে যায় রাজনৈতিক উন্মাদনার কোলাজ। ভাবলে অবাক লাগে এত বছর আগে (১৯৫৪) কী ভাবে এত সমকালীন নাটক লিখেছিলেন শম্ভু মিত্র।’ সঙ্গে বেঙ্গালুরুতেই হচ্ছে অভির নতুন নাটকের প্রিমিয়ার। নাটককার ব্রাত্য বসু। নাটকের নাম ‘সময়যান’। অভি বলেন ‘স্বল্প দৈর্ঘের এ নাটকে ব্রাত্যদা দেখিয়েছেন অতীত ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার টুকরো মেঘ। যা জুড়ে গেলে ভেসে যেতে পারে আমাদের বর্তমান বেঁচে থাকা।’

অন্য কলকাতা

• দোকানের রসিদ কি বিল, বিজ্ঞাপন, লেবেল, জমির পাট্টা, উইল ও নানা আইনি নথি, খাজনার রসিদ, পোস্টার, পত্রপত্রিকা আর ছাপাখানার কাগজ এ সবেরই আয়ুষ্কাল সীমিত, এদের পক্ষে কালের কবল থেকে রক্ষা পাওয়া মুশকিল। গবেষক অমিত রায় বহু বছর ধরে খুঁজে ফিরেছেন এই সব ক্ষণস্থায়ী কাগজপত্র, পেয়েওছেন অনেক। কিন্তু শুধু সংগ্রহ করে বসে থাকেননি তিনি, এই সবেরই ভিত্তিতে তৈরি করেছেন একটি অসামান্য কৌতূহল-জাগানো বই ‘ক্যালকাটা এফিমেরা/ ভিসুয়াল ইমেজারি অব আ কলোনিয়াল সিটি (১৭৭৫-১৯২৫)’ (পারুল)। প্রায় তিনশো নথির ছবি আছে এই বইয়ে, সঙ্গে সমসাময়িক প্রিন্ট এনগ্রেভিং ফটোগ্রাফ। বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে সব খুঁটিনাটি প্রসঙ্গেই। এ বার তা থেকে বাছাই করা চল্লিশটি ছবি নিয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের পোর্ট্রেট গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী। ২৫ সেপ্টেম্বর সাড়ে ৫টায় উদ্বোধন, চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। পারুল প্রকাশনীর সহযোগিতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের উদ্যোগে ‘ক্যালকাটা এফিমেরা’ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে উপস্থিত থাকবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়, আলোচনা করবেন শিল্প-ইতিহাসবিদ তপতী গুহঠাকুরতা। সঙ্গে কলকাতার সাবেক সুপ্রিম কোর্টের ছবি, প্রদর্শনী থেকে।

বাণীকুমার

• মহালয়ার আগের সন্ধ্যায়, উন্মোচিত হল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র রচয়িতা বাণীকুমারের দুটি মূর্তি। হাওড়ার ধর্মতলার মূর্তিটি পূর্ণাবয়ব (উদ্যোগ: ‘নমিতা মিত্র স্মৃতিরক্ষা কমিটি’, ভাস্কর: সুধীর মাইতি), বাগবাজারের বোসপাড়ার মূর্তিটি আবক্ষ (উদ্যোগ: ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ক্লাব, ভাস্কর: অসীম পাল)। দুটিই উদ্বোধন করলেন গায়ক দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। বাণীকুমারের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে হাওড়ায়, কর্মজীবনের বেশিটাই বোসপাড়ায়। দুটি অনুষ্ঠানেই বক্তৃতা দিলেন কিছু রাজনৈতিক নেতা, শিল্পী, বাণীকুমারের পরিবারের কয়েক জন সদস্য। অনেকে মনে করিয়ে দিলেন, এই প্রভাতী অনুষ্ঠান ছাড়াও বাণীকুমার বহু গল্প গান কবিতা নাটক লিখেছেন, সিনেমার জনপ্রিয় গানও লিখেছেন। বেতারের বহু অনুষ্ঠানে তাঁর অভিনব ভাবনা ও নির্দেশনা সেই যুগে সাড়া জাগিয়েছিল। দ্বিজেনবাবু বললেন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মুম্বই চলে যাওয়ার পর তাঁর ‘জাগো দুর্গা’ গাইবার সুযোগ পাওয়ার কথা। গান শেষ হলে বাণীকুমার তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। দক্ষ মানুষটির নিবিড় আন্তরিকতার ছবিও ফুটে উঠল। সঙ্গের ছবিটি পরিমল গোস্বামীর তোলা।

থিমপুজো

• দুর্গাপুজোর থিম এ বার ব্রেল-এ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমাজকল্যাণ দফতরের সহযোগিতায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রফেশনালস বা এন আই পি সম্প্রতি রোটারি সদনে প্রকাশ করল দুর্গাপুজোর ব্রেল গাইড। এখানে আছে শহরের শ’তিনেক পুজোর খুঁটিনাটি, যাতে দৃষ্টিহীনরাও সেখানে পৌঁছে যেতে পারেন। সঙ্গে আছে দশটি বড় পুজোর থিম-বিবরণ, যাতে মণ্ডপে পৌঁছে তাঁরা বুঝতে পারেন সেখানকার সাজসজ্জার বৈশিষ্ট্য। এই ভাবে এক দিন গোটা রাজ্যের পুজোকেই দৃষ্টিহীনদের কাছে পৌঁছে দিতে চায় এন আই পি।

ঢাকেশ্বরী

দেশভাগের সময় রেহাই পাননি স্বয়ং ঢাকার ঢাকেশ্বরীও। কয়েক লক্ষ ভিটেমাটি হারা মানুষের মতো উদ্বাস্তু হয়ে তিনিও এলেন কলকাতায়। ঢাকার ঢাকেশ্বরী হয়ে উঠলেন কুমোরটুলির ‘ঢাকেশ্বরী মাতা’। বিশেষ বিমানে ঢাকেশ্বরী দেবীর আসল বিগ্রহটি কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে ১৯৫০ নাগাদ ব্যবসায়ী দেবেন্দ্রনাথ চৌধুরী কুমোরটুলি অঞ্চলে ঢাকেশ্বরী দেবীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে মন্দিরের নিত্য সেবার জন্য কিছু দেবোত্তর সম্পত্তি দান করেছিলেন। দেবীর মূর্তিটির উচ্চতা দেড় ফুটের মতো। পিছনের চালিটি ঢাকা থাকে সামনের রুপোর চালিতে। পাশে লক্ষ্মী সরস্বতী নীচে কার্তিক ও গণেশ। দেবীর বাহন পৌরাণিক সিংহ। দেবীর সামনের দু’টি হাত বড়, পিছনের আটটি হাত কিছুটা ছোট। মানসিংহ নাকি এই বিগ্রহটি প্রতিষ্ঠা করে আজমগড়ের এক তিওয়ারি পরিবারকে সেবায়েত নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালে সেই পরিবারের বংশধরেরাই কলকাতায় এসে পুনরায় সেবায়েত নিযুক্ত হন। আজ পর্যন্ত তাঁরাই দেবীর সেবায়েত। ঢাকেশ্বরী দেবীর পুজো পদ্ধতিও বাংলার প্রচলিত দুর্গাপুজোর পদ্ধতির চেয়ে আলাদা। মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত শক্তিপ্রসাদ ঘোষাল জানালেন, শারদীয় দুর্গাপুজোর সময় এখানে পুজো হয় উত্তর ভারতীয় নবরাত্রিক বিধি অনুসারে। আজও ভিড় করেন পূর্ববঙ্গের বহু মানুষ। হয়তো ফেলে আসা ভিটেমাটির একটু ছোঁওয়া পেতেই।

Kolkatar Karcha কলকাতার কড়চা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy