Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা: কবির ভূমিকায় সৌমিত্র

সম্প্রতি ভাবনা রেকর্ডস অ্যান্ড ক্যাসেটস থেকে ৭৬টি সিডির একটি সংকলনে প্রকাশিত হল ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠিপত্র’, তাতে বিশ্বভারতী প্রকাশিত চিঠিপত্রের খণ্ডগুলি থেকে রবীন্দ্রনাথের ১৪১৬টি অসম্পাদিত চিঠি পাঠ করেছেন সৌমিত্র।

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৮ ০১:০৬
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শর্মিলা ঠাকুর

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শর্মিলা ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথের চিঠিপত্র না পড়লে তাঁকে পুরোপুরি চেনা যায় না, পড়লে তবেই মানুষটি কী রকম ছিলেন তা বোঝা যায়, নিজের চিঠিপত্রের ভিতর তিনি ধরা পড়েন। তাঁর সাহিত্য ও শিল্পের যে বিপুল বৈভব ও বিস্তার, তার মধ্য দিয়ে যেতে যেতে কখনও কখনও যখন অরণ্যে পথ হারানোর মতো অবস্থা হয়, তখন তাঁর চিঠিপত্র সেখানে যেন আলোও ফেলে। দীর্ঘ কাল ধরে তাঁর চিঠিপত্রের সঙ্গে বসবাস করতে করতে তেমনটাই মনে হয়েছে আমার।’’ বলছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি ভাবনা রেকর্ডস অ্যান্ড ক্যাসেটস থেকে ৭৬টি সিডির একটি সংকলনে প্রকাশিত হল ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠিপত্র’, তাতে বিশ্বভারতী প্রকাশিত চিঠিপত্রের খণ্ডগুলি থেকে রবীন্দ্রনাথের ১৪১৬টি অসম্পাদিত চিঠি পাঠ করেছেন সৌমিত্র। কবির চিঠিপত্রের এই সিডি-সঙ্কলনটিতে প্রাপকের তালিকায় আছেন কেবল মহিলারাই— ২৯ জন— স্ত্রী মৃণালিনী দেবী, পুত্রবধূ প্রতিমা দেবী, জ্যেষ্ঠা কন্যা মাধুরীলতা থেকে কনিষ্ঠা কন্যা, পৌত্রী, দৌহিত্রী থেকে ইন্দিরা দেবী, শান্তা দেবী, সীতা দেবী, লেডি রাণু মুখোপাধ্যায়, হেমন্তবালা দেবী... কে নেই! নির্মলকুমারী মহলানবিশকে লেখা তাঁর চিঠির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যায় শুরুতেই সৌমিত্রর কথাগুলিকে, ‘‘চিঠিতে যা লিখি তা পুরোপুরি আপন কথা। একেই বলে আত্মপ্রকাশ— নিজের অব্যক্তকে ব্যক্ত করে যাওয়া... যখন লিখতে বসি তখন তোমাকে লেখার সঙ্গে নিজেকেই লিখি।’’ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে কোনও কাজে তো বটেই, এমনকি দৃষ্টিশক্তিজনিত কারণে যাঁদের পড়তে অসুবিধা তাঁদেরও কাজে লাগবে এই পাঠ, মনে করেন সৌমিত্র, পাঠের সূত্রে তিনি হয়ে উঠেছেন এখানে কবির অলটার-ইগো। রবীন্দ্রনাথের ভূমিকায় অবশ্য তাঁকে দেখা গিয়েছিল সত্যজিতের ‘রবীন্দ্রনাথ’ তথ্যচিত্রে। ‘বাল্মীকিপ্রতিভা’র একটি দৃশ্যে, যেখানে রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং ছিলেন বাল্মীকির চরিত্রে, সেটি করেছিলেন সৌমিত্র। ষাটের দশকের শুরুতে সে ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে পূর্ণাঙ্গ মেক-আপে তাঁর ছবি (সঙ্গের স্থিরচিত্র) তুলেছিলেন শিল্পনির্দেশক বংশী চন্দ্রগুপ্ত, সৌমিত্রর বাঁ পাশে শর্মিলা ঠাকুর, তিনি শুটিং দেখতে এসেছিলেন। এ সব জানা গেল, ছবিটিও পাওয়া গেল— সন্দীপ রায়ের সৌজন্যে।

চিরকিশোর

নানা চাকরির ডাক এসেছিল নানা সময়ে। তবু নিউ সেক্রেটারিয়েটের সরকারি চাকরি ছেড়ে কোথাও যাননি চিরকিশোর ভাদুড়ি। তার মূল কারণটা বোধ হয় নাটক। নাটক ছিল তাঁর রক্তে। গত শতাব্দীর চল্লিশ দশকের গোড়ায় জন্ম, জ্যাঠামশায় নাট্যাচার্য শিশিরকুমার ভাদুড়ির শ্রীরঙ্গম তখন খ্যাতির তুঙ্গে। একটু একটু করে নাটককেই জীবন করে তোলেন চিরকিশোর। একই সঙ্গে নির্দেশনা, অভিনয় আর নাট্য-গবেষণায় নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। রবীন্দ্রভারতীর নাটক বিভাগ থেকে রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। আজীবন পুরনো দিনের বাংলা নাটক নিয়ে চর্চা করেছেন। ‘শৈশিরিক’ নাট্যসংস্থা প্রতিষ্ঠা করে শিশিরকুমার-অভিনীত পুরনো নাটকগুলি নিয়মিত অভিনয় করতেন। ১৯৫৭-য় মামাতো দাদা নাট্যকার রমেন লাহিড়ীর নির্দেশনায় প্রথম অভিনয়। ২০১১ পর্যন্ত বহু বাণিজ্যিক ও গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয় করেছেন। আকাশবাণী কলকাতা ও নানা পত্রিকায় নাট্যসমালোচনা করতেন। শেষ করে গিয়েছেন পিতা বিশ্বনাথ ভাদুড়ির জীবনী। চলে গেলেন সম্প্রতি।

ম্যানগ্রোভ

সুন্দরী গরান হেঁতাল বাইন-সহ বহু গাছগাছালি ঘেরা প্রত্যন্ত সুন্দরবন অঞ্চলে তাঁদের আশৈশব তারুণ্যের দিনগুলি কেটেছে। উচ্চশিক্ষার জন্য শহরে আসতে তখন সাতসকালে একমাত্র জলযান ভুটভুটির নির্ভরতা, নয়তো পর দিনের অপেক্ষা। সন্দেশখালি নামখানা কাকদ্বীপ গোসাবা ক্যানিং জয়নগর থেকে শিল্পশিক্ষার তাগিদে শহরে এসে প্রাণপাত পরিশ্রমে কেউ সরকারি আর্ট কলেজ থেকে উত্তীর্ণ বা স্বশিক্ষিত শিল্পী, কেউ বা অধ্যাপনায় ব্রতী। এঁরাই দশ জন সদস্য নিয়ে ২০১৫-র ১৫ জানুয়ারি জন্ম দেন ‘ম্যানগ্রোভ’ শিল্পী সংস্থার। ইতিমধ্যেই তাঁদের বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী সুনাম কুড়িয়েছে। এ বার ২৫ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জনের ষাটটি চিত্র ও ভাস্কর্য নিয়ে অ্যাকাডেমির নর্থ গ্যালারিতে ১৭-২৩ জুলাই ‘ম্যানগ্রোভ’ শীর্ষক প্রদর্শনী (৩-৮টা)।

শতবর্ষে

১৯১৮। দক্ষিণ কলকাতার শা’নগর অঞ্চলে দেশসেবার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হল ‘শা’নগর ইনস্টিটিউট’। অনেক ঠিকানা বদলে ১৯৫৬ সালে ২৩বি প্রতাপাদিত্য প্লেসে একতলা নিজস্ব ভবনে লাইব্রেরির পাশাপাশি সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ড চলতে থাকল। ১৯৮২-তে তারা সরকারি স্পনসর্ড লাইব্রেরির মর্যাদা পেল। সুভাষচন্দ্র, সি ভি রামন, হেমচন্দ্র ঘোষ, সত্যরঞ্জন বক্সী, গণেশ ঘোষের মতো বিশিষ্টরা এখানে এসেছেন। সি ভি রামনকে নোবেল প্রাপ্তির পর এই গ্রন্থাগারেই সংবর্ধিত করা হয়। এখানে অনেক পুরনো পত্রিকা, দুষ্প্রাপ্য বই-সহ প্রায় তেরো হাজারের মতো বই আছে। বিপ্লব দাশগুপ্ত, প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ তহবিলের সহায়তায় গ্রন্থাগারের দ্বিতীয় তল নির্মিত হয়। গ্রন্থাগারের উন্নয়নে বর্তমান সভাপতি নির্বেদ রায়ও উদ্যোগী। সম্প্রতি বিড়লা অ্যাকাডেমি সভাঘরে ইনস্টিটিউটের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব পালিত হল।

সমাজসেবক

ছাত্রাবস্থায় তিনি গাঁধীজির আহ্বানে লবণ আন্দোলন, বিদেশি দ্রব্য বর্জন, নেতাজি সুভাষচন্দ্রের ডাকে হলওয়েল মনুমেন্ট বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। যুক্ত হন অনুশীলন সমিতির সঙ্গে। ১৯৪০ সালে তাঁর উদ্যোগেই উত্তর চব্বিশ পরগনার চাতরায় নেতাজির একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিশিষ্ট সমাজসেবক হরেন্দ্রনাথ রায় (১৯১৮-১৯৯১) তৎকালীন যশোহর জেলার শামটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে আই এসসি উত্তীর্ণ হন। বিদ্যাসাগর কলেজের বি কম পড়াকালীন ১৯৪১ সালে কারারুদ্ধ হন। ১৯৪৫ সালে এমএ পাশ করেন। গাঁধীবাদী হরেন্দ্রনাথ ১৯৫৬ সালে সংগঠনী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্থাপন করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় চাতরা নেতাজি বালিকা শিক্ষা নিকেতন, ছাত্রী আবাসন ও ত্রৈলোক্য চক্রবর্তী ছাত্রাবাস, শিশু শিক্ষানিকেতন, কমলাপ্রসন্ন শিশু সংগ্রহালয়, বিবেকানন্দ বুনিয়াদি বিদ্যালয়, আঞ্চলিক পাঠাগার স্থাপিত হয়। কেবল নিজগ্রামেই তাঁর উন্নয়নমূলক কাজ থেমে থাকেনি। আটঘরা, কলসুর, বিড়া বল্লভপাড়া সন্নিহিত অঞ্চলে বুনিয়াদি বিদ্যালয় ও গ্রামীণ পাঠাগার স্থাপন করেন। সম্প্রতি দক্ষিণ চাতরা গ্রামে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাঁর জন্মশতবর্ষ পালিত হল।

বিষয় পর্নোগ্রাফি

‘‘পর্নোগ্রাফির সাধারণ লক্ষণ, আখ্যানগত পৌনঃপুনিকতা। এবং ওই পৌনঃপুনিকতাই তার মুখ্য আকর্ষণ।... থোড়-বড়ি-খাড়া গোছ ধরাবাঁধা মেনু, ফিরে-ফিরে কেবল তা-ই পরিবেশিত পর্নোগ্রাফিতে।... অপর্যাপ্ত তার পসরার বিক্রিবাটা জিইয়ে রাখতে সুচারু বাজারি কৌশল।’’ শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অবশ্যপাঠ্য ‘পর্নোলোকে পর্যটন’ রচনাটির জন্যে ‘গাঙচিল’ পত্রিকাটি হাতে নিয়ে ওল্টাতে হবে, এ বারের বিষয়: পর্নোগ্রাফি। অতিথি সম্পাদক বিজলীরাজ পাত্র জানিয়েছেন সংখ্যাটিতে ‘‘পর্নোগ্রাফির ইতিহাস, সমাজ আর কুশীলবের অন্তরালে রাষ্ট্র বনাম ব্যক্তির যুদ্ধ।... প্রাবন্ধিকেরা সেই যুদ্ধের বয়ান তুলে এনেছেন। আমাদের অস্বস্তি, মেকি নৈতিকতা আর ফেক শৌর্য-বীর্যের বুলিতে পর্নো-পৃথিবী এক অন্তর্ঘাত।’’ প্রবন্ধের পাশাপাশি আছে সাক্ষাৎকার ও প্রয়োজনীয় রচনার পুনর্মুদ্রণ। চমৎকার ছাপা ও বাঁধাই এবং বিষয়বস্তুতে রীতিমতো সামাজিক ইতিহাসের শরিক পত্রিকাটি।

নেশার টানে

এখানে ক্যামেরা আর স্টেথোস্কোপ মিলেমিশে একাকার! আর মিশেছে শল্যচিকিৎসার সঙ্গে মননশীলতা, অস্থিচিকিৎসার সঙ্গে সৃজনশীলতা, দন্তচিকিৎসার সঙ্গে সুচিন্তা বা চক্ষুচিকিৎসার সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গিও— হ্যাঁ, পেশায় এঁরা প্রত্যেকেই চিকিৎসক। এঁরা নেশার টানে সুযোগ পেলেই চলে যান পর্বতমালার উচ্চশিখরে, কী আফ্রিকার গভীর জঙ্গলে— বাঘ সিংহ হরিণ ও হরেক পাখির বিরল মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতে। স্রেফ নেশার টানে কত যে অসাধারণ মুহূর্ত চিকিৎসকদের ক্যামেরাবন্দি হতে পারে তারই নিদর্শনস্বরূপ ‘ফোটোগ্রাফি চর্চা’ নন্দন-৪-এ এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। উপলক্ষ ‘ডাক্তার দিবস’। আজকেই শেষ দিন।

ভুয়ো খবর

ফেক নিউজ়। ভুয়ো খবর। গুজব। সাম্প্রতিক অতীতে আর খুব কম শব্দ নিয়ে এত কথা হয়েছে। শুধু ভারতেই নয়, দুনিয়াজুড়ে। সোশ্যাল মিডিয়া নামক পরিসরটি এখন সর্বব্যাপী। ‘খবর’ এখন আর পেশাদার সাংবাদিকদের একচ্ছত্র অধিকারে নেই, হাতে একটা স্মার্টফোন থাকলেই সবাই খবর দেওয়ার কাজে সমান অধিকারী। গণতন্ত্র? না কি, তার বিপন্নতা? কী ভাবে রাজনীতি জড়িয়ে যায় এই ভুয়ো খবরের জালে, অথবা ভুয়ো খবর হয়ে ওঠে রাজনীতির আয়ুধ, এবং সেই পরিসরে মিডিয়ার ভূমিকা ঠিক কী হওয়া উচিত আর কী হচ্ছে— এই প্রসঙ্গেই ২১ জুলাই সকাল ১১টা থেকে আলোচনা যদুনাথ ভবন মিউজ়িয়াম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে। অষ্টম অঞ্জন ঘোষ স্মারক আলোচনাসভায়। উপস্থিত থাকবেন নিবেদিতা মেনন, সতীশ দেশপাণ্ডে, রবি সুন্দরম, রাজর্ষি দাশগুপ্তের মতো শিক্ষক এবং কয়েক জন বিশিষ্ট সাংবাদিক।

রবিচ্ছায়া

রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত গানের সঙ্কলন রবিচ্ছায়া (১৮৮৫)। প্রকাশক ছিলেন রবীন্দ্রানুরাগী, সিটি কলেজের অধ্যাপক যোগেন্দ্রনারায়ণ মিত্র। বইটিতে ১৯৭টি গান তিনটি ভাগে সাজানো— ‘বিবিধ সঙ্গীত’, ‘ব্রহ্মসঙ্গীত’ ও ‘জাতীয় সঙ্গীত’। পরিশিষ্টে আরও ৪টি গান। অনেক গানই সুর-তাল চিহ্নিত। এর বেশ কয়েকটি গানের নেপথ্যে কবির অল্প বয়সের সুখদুঃখ মেশানো কিছু মুহূর্ত হয়তো বা থেকে গিয়েছে। গানগুলি সেই সব সুখদুঃখের সঙ্গে দু’দণ্ড খেলা করে একদিন কোথায় ঝরে পড়েছিল— এমন কথা রবিচ্ছায়া-র ‘রচয়িতার নিবেদন’-এ লেখেন রবীন্দ্রনাথ। গানের দল ‘পুনশ্চ’ রবিচ্ছায়া-র নির্বাচিত কয়েকটি গান নিয়ে ওঁর অল্প বয়সের তেমনই কিছু সুখদুঃখ মেশানো গল্প শোনাবে ২২ জুলাই সন্ধে সাড়ে ৬টায় রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবনে। অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত।

পুজো-পাঠ

কলকাতার বারোয়ারি পুজো অনেক দিন ধরেই শিল্পের ছোঁয়ায় অনন্য। পুজোর মাঠ এখন বহু তরুণ শিল্পীর কাছেই পরীক্ষানিরীক্ষার ক্ষেত্র। এই শিল্পপাঠ প্রসারের লক্ষ্যে এ বছর ঠাকুরপুকুর স্টেটব্যাঙ্ক পার্ক সর্বজনীন যুক্ত করেছে সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের গুটিকয় ছাত্রছাত্রীকে, যারা সবেমাত্র কলেজপাঠ শেষ করে বৃহত্তর শিল্পপাঠের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। ব্যবস্থা হয়েছে তাদের জলপানি দেওয়ারও। সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ‘মাইহার ব্যান্ড’-এর সঙ্গীতায়োজন। এ সব নিয়েই আজ বিকেল সাড়ে ৪টেয় কলকাতা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত হয়েছে ‘পুজো-পাঠ’ শীর্ষক আলোচনাচক্র। ‘মাইহার ব্যান্ড’-এর দুই শিল্পী ছাড়াও থাকছেন শিল্পী ছত্রপতি দত্ত, বিমল কুণ্ডু, পরাগ রায় ও পার্থ দাশগুপ্ত। সভা পরিচালনায় দেবদত্ত গুপ্ত।

নবীনা

মাত্র ১৮ বছর বয়সেই নাটক পরিচালনা! তা-ও ‘অর্ঘ্য’-র মতো দলে! অর্ঘ্য-র নবতম প্রয়োজনা ‘কঙ্ক ও লীলা’-র পরিচালন ভার ১৮ বছরের মেরি আচার্যের হাতেই তুলে দিয়েছেন দলের কর্ণধার মণীশ মিত্র। ময়মনসিংহ গীতিকার এক পালা এই ‘কঙ্ক ও লীলা’। কঙ্ক ব্রাহ্মণের ঘরে জন্মেও শূদ্রের ঘরে পালিত এবং মুসলমান সান্নিধ্য তাঁকে এক ভিন্ন পরিচয় দেয়। এই টানাপড়েনের প্রেক্ষিতে লীলার সঙ্গে তাঁর প্রেম জীবনেরই আখ্যান শোনায়। নাটকের প্রথম অভিনয় ২২ জুলাই অ্যাকাডেমিতে। ৪০ জনকে নিয়ে এই পালা পরিচালনা করছেন যিনি সেই মেরি এ বার মাধ্যমিক পাশ করে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন কলা বিভাগে। অভিনয়ের স্পৃহা অবশ্য উত্তরাধিকার সূত্রেই— বাবা সঞ্জয় আচার্য ছিলেন ‘সায়ক’-এ। কিন্তু বাবার অকালমৃত্যু সে সময়ে ১০ বছরের মেরি, তার দিদি ও মাকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলে দেয়। মেরি যোগ দেন ‘সায়ক’-এ। দলের জুনিয়র গ্রুপে বছর দুয়েক থাকাকালীনই ‘মিনার্ভা রেপার্টরি’-তে যোগদান। ‘দেবী সর্পমস্তা’, ‘চন্দ্রগুপ্ত’ নাটকে অভিনয়। ‘অর্ঘ্য’-য় মেরির চলার শুরু ২০১৩ সালে। ‘ঊরুভঙ্গম’, ‘শেক্সপিয়ার্স ট্র্যাজিক হিরোজ়’, ‘মহাভারত’, ‘লেডি ম্যাকবেথ’-এ অভিনয়ের পাশাপাশি পাণ্ডবাণী শেখেন শান্তিবাঈয়ের কাছে। শিখেছেন ওড়িশিও। নাট্য প্রযোজনার যাবতীয় কাজের অনুপ্রেরণা ‘মামু’ মণীশ মিত্র। তাঁর কথায়: ‘‘থিয়েটার তো আসলে একটা যাপন। মেরি এই সামগ্রিক যাপনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পৃক্ত। ফলে আমাদের দর্শনটা এই বয়সেই ও অনেকটা বুঝতে পারে।’’ আর প্রকৃত নাট্যকর্মীর মতো মেরি বলছেন, ‘‘শুধু অভিনয় নয়, ব্যাক স্টেজে কাজ করতেও আমার সমান ভাল লাগে।’’

Soumitra Chatterjee সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় Kolkatar Korcha কলকাতার কড়চা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy