ব্যাটালিয়নের এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ ওঠায় বিভাগীয় তদন্তের দায়িত্ব পড়েছিল এক পুলিশকর্তার উপরে। তদন্তের শুরুতেই তিনি ওই অফিসারের অতীত রের্ক়ড কী আছে, তা জানার জন্য নিজের মোবাইল ফোনটি অন করলেন। ফোনের স্ক্রিনে ফুটে উঠল ওই অফিসারের চাকরিজীবনের সব তথ্য। ওই অফিসার আগে কোনও শাস্তি পেয়েছেন কি না, বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠেছিল কি না— সব তথ্যই তিনি আঙুলের এক ছোঁয়ায় পেয়ে গেলেন। ফলে অভিযুক্ত ওই অফিসারের দীর্ঘ চাকরিজীবনের বিস্তারিত তথ্য জানতে দফতরের কোনও কর্মীর উপরে নির্ভর করতে হল না তাঁকে।
পুলিশকর্মীদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য মুহূর্তে জেনে নিতে এমনই একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করতে চলেছে লালবাজার। ‘স্বজন’ নামে ওই অ্যাপটি শীঘ্রই চালু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা। পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের মোবাইলে ওই অ্যাপ থাকলে তাঁরা যে কোনও অধস্তন কর্মী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লহমায় পেয়ে যাবেন। অফিসারদের পোস্টিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ওই অ্যাপ কাজে লাগবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, শীর্ষ কর্তাদের পাশাপাশি নিচুতলার কর্মীদের মোবাইলেও ওই সুবিধা দেওয়া হবে। যাতে নিজেদের চাকরিজীবনের ‘সার্ভিস বুক’-এর মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ নথি তাঁরা নিজেরাই দেখে নিতে পারেন। বর্তমানে ট্রায়াল হিসেবে কয়েকটি ডিভিশনের অফিসারদের ফোনে ওই অ্যাপ দেওয়া হয়েছে। তবে তাতে চাকরিজীবনের সমস্ত নথি এখনও দেওয়া হয়নি। সেই কাজ খুব দ্রুত গতিতে চলছে। এ বছরের মধ্যেই কলকাতা পুলিশের প্রত্যেক কর্মীর সমস্ত তথ্য ওই অ্যাপে আপলোড করা শেষ হয়ে যাবে বলে পুলিশকর্তাদের একাংশের দাবি।
কী রয়েছে পুলিশের ‘স্বজন’-এ।
লালবাজার জানিয়েছে, মোট ২৮টি ‘অপশন’ রয়েছে ওই অ্যাপে। যার মধ্যে রয়েছে পুলিশকর্মীদের চাকরিজীবনের সার্ভিস বুক। চাকরি করতে গিয়ে এক জন অফিসার বা কর্মী কোনও পুরস্কার বা শাস্তি পেয়েছেন কি না, সে তথ্যও থাকছে। পাশাপাশি, কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে কখনও বিভাগীয় তদন্ত হয়েছে কি না, জানা যাবে তা-ও। এ ছা়ড়া, পুলিশকর্মীদের ছুটি ও বেতনের বিস্তারিত তথ্যও থাকছে ‘স্বজন’-এর মধ্যে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন নির্দেশিকা বা পুলিশ গেজেটও থাকবে ওই অ্যাপে। যাতে খুব সহজেই শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ জানতে পারেন নিচুতলার কর্মীরা।’’
‘স্বজন’ ব্যবহারকারী বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী জানান, এখন খুব সহজেই তাঁদের স্বাস্থ্য বিমা বা পিএফের মতো বিষয় জানা যাচ্ছে এর মাধ্যমে। কোনও শীর্ষ কর্তা তাঁদের পেশাগত জীবন সম্পর্কে কী মূল্যায়ন করেছেন, তা-ও জানা যাচ্ছে বলে পুলিশকর্মীদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy