Advertisement
E-Paper

কাউন্সিলর ও মন্ত্রীর দ্বন্দ্ব, প্রচার পিছোল সুদীপের

সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপের ছবি দিয়ে লাগানো প্রচার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫৯
মানিকতলায় এই মঞ্চ থেকেই প্রচার শুরুর কথা ছিল। নিজস্ব চিত্র

মানিকতলায় এই মঞ্চ থেকেই প্রচার শুরুর কথা ছিল। নিজস্ব চিত্র

নীল কাপড়ে ঘেরা মঞ্চ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। তার উপরে লাগানো হয়ে গিয়েছিল দলীয় পতাকাও। কিন্তু, মন্ত্রী বনাম কাউন্সিলরের কোন্দলে মানিকতলার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারই আপাতত পিছিয়ে দিতে হল উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অন্তত উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূল সূত্রে তেমনটাই খবর। ভোটের বাজারে এ নিয়ে টিপ্পনী কাটতে ছাড়ছে না প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলি। একযোগে তাদের বক্তব্য, অন্যদের সঙ্গে লড়বেন কী, তৃণমূল প্রার্থীকে উত্তর কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় লড়তে হচ্ছে নিজের দলের লোকজনের সঙ্গেই!

সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপের ছবি দিয়ে লাগানো প্রচার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদ করে দলের ছেলেদের হাতেই মার খেয়েছেন বলে মানিকতলা থানার পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইএসডি)-র দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই এলাকার এক তৃণমূলকর্মী। একটি গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, ব্যানারে সৌজন্য হিসেবে এলাকার যে দুই তৃণমূল নেতার নাম লেখা ছিল, তাঁদের পছন্দ নয় বলেই বিরোধী গোষ্ঠী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। রাতারাতি সেখানে নিজেদের নাম-সহ ব্যানার টাঙিয়ে দেয় তারা। ক্ষুব্ধ সুদীপ এ ব্যাপারে নিজে খোঁজ নেন।

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে এবং স্থানীয় কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তীর চলতি ‘সম্পর্ক’ সুদীপের অজানা নয়। বিষয়টি দলেও জানান সুদীপ। এর পরেই ওই ওয়ার্ডে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ‘জল মাপতে’ আসরে নামেন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ (ববি) হাকিম এবং সুব্রত বক্সী। সুদীপ ঘনিষ্ঠ এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘ববি আর সুব্রত খোঁজ নিয়েছিল। ঝামেলা দ্রুত মিটিয়ে নিতে বলা হয়েছে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু পরিস্থিতি যে আদৌ বদলায়নি, তা প্রচারের দিন পিছিয়ে দেওয়ার ঘটনাতেই স্পষ্ট বলে অনেকের মত। রবিবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের হরিশ নিয়োগী রোড থেকে একটি মিছিল করার কথা ছিল সুদীপের। তিনি চেয়েছিলেন, সাধনবাবু এবং অমলবাবু দু’জনেই মিছিলে থাকুন। কিন্তু অমলবাবুর অভিযোগ, সাধনবাবু তাঁকে কিছু না জানিয়েই ওই মিছিলের আয়োজন করেছেন। এ নিয়ে সুদীপের কাছেও অনুযোগ করেন অমলবাবু। তার ভিত্তিতেই ক্ষুব্ধ সুদীপ প্রচার বাতিল করেছেন বলে সূত্রের খবর।

এ ব্যাপারে সাধনবাবুর বক্তব্য, ‘‘সুদীপকে আসলে অন্য ওয়ার্ডে যেতে হবে। ৪ বা ৫ মে মিছিল হবে। তবে কোনও ঝামেলার কথা আমি বলতে পারব না।’’ অমলবাবু অবশ্য বললেন, ‘‘রবিবার যে মিছিল হবে, আমায় জানাননি ওঁরা। আমি সুদীপদাকে সেটাই বলেছিলাম। আমি ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রেসিডেন্ট এবং কাউন্সিলর। কিন্তু, সাধনবাবুরা আমায় মানেন না। মন্ত্রী হয়ে যখন তিনি দলকে মানেন না তখন আমি ওঁর সঙ্গে বেরোবো না। সুদীপদাকে বলেছি, সাধনদা আর আমাকে আলাদা ডেট দিন। আপনাকে নিয়ে আমরা দু’জন আলাদা আলাদা ঘুরব।’’

ভরা ভোট মরসুমে এই আলাদা দিন দিতে গিয়েই কি ফাঁপরে পড়েছেন সুদীপ? চার বারের সাংসদের কথায়, ‘‘ওখানে ভোলার (অমলের ডাকনাম) সঙ্গে সাধন পাণ্ডের একটা গোলমাল হয়েছে। ভোলার ছেলেদের নাকি মারধর করা হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম আর সুব্রত বক্সী বিষয়টি দেখছেন। তবে আমি ওখানে অবশ্যই প্রচারে যাব। দিনটা একটু পিছোনো হয়েছে।’’

উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে সুদীপের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিংহ বললেন, ‘‘ধ্বংসের সময় কাছে এলে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। তৃণমূলে সেই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।’’ বাম প্রার্থী কনীনিকা বসু ঘোষের আবার প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূলের লোকই আজ তৃণমূলের হাতে খুন হচ্ছেন। যাঁরা দলের লোককে নিরাপত্তা দিতে পারেন না, তাঁরা রাজ্যের মানুষকে কী করে নিরাপত্তা দেবেন?’’

Sudip Bandyopadhyay Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy