Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
পাইকপাড়া

দম্পতি খুনে ধৃত প্রধান অভিযুক্ত

মেয়ে অসুস্থ শুনেও গ্রামের বাড়িতে যায়নি সে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না-পেরোতেই নন্দীগ্রামের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা। ভাত খেয়ে একদফা ঘুম দিয়ে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। বাড়ি ছাড়ার আগে স্ত্রীর হাতে গুঁজে দিয়েছিল নগদ ৩৫০০ টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৫ ০০:৩৮
Share: Save:

মেয়ে অসুস্থ শুনেও গ্রামের বাড়িতে যায়নি সে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না-পেরোতেই নন্দীগ্রামের শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পা। ভাত খেয়ে একদফা ঘুম দিয়ে আবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। বাড়ি ছাড়ার আগে স্ত্রীর হাতে গুঁজে দিয়েছিল নগদ ৩৫০০ টাকা।

পাইকপাড়ায় ইন্দ্রলোক আবাসনে বৃদ্ধ দম্পতি-খুনের তদন্তে এমনটাই জেনেছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, বাপ্পা বাড়ি ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা পরে নন্দীগ্রামে তার শ্বশুরবাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। বাপ্পার স্ত্রী পূর্ণিমাকে তারা জানায়, পাইকপাড়ায় দম্পতি-খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামীকে খোঁজ করা হচ্ছে। শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পূর্ণিমা। কারণ, ছোটবেলা থেকে ওই দম্পতির কাছেই বড় হয়েছিলেন তিনি। ওই দম্পতিই তাঁর বিয়ে দিয়েছিলেন।

পুলিশ জানাচ্ছে, নন্দীগ্রাম থেকে পালালেও সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পাকে শুক্রবার পাইকপাড়ার বাড়ি থেকেই ধরা হয়। ঘটনার পর বাপ্পার মা-বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। তা শুনেই বাপ্পা কলকাতায় ফিরে আসে। যদিও পুলিশের আর একটি সূত্র জানাচ্ছে, নন্দীগ্রাম থেকে পালানোর পথেই ধরা পড়েছে সে। পুলিশের দাবি, শুক্রবার রাতে জেরায় খুনের দায় স্বীকার করে বাপ্পা। সে জানায়, বুধবার মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রাণগোবিন্দবাবুর কাছে ২০০০ টাকা সাহায্য চেয়েছিল সে। অভিযোগ, প্রাণগোবিন্দবাবু তাকে অপমান করেন। বাপ্পার স্ত্রী-মেয়ের সম্পর্কে কটূক্তি করে টাকা দিতেও অস্বীকার করেন তিনি। মেজাজ হারিয়ে বাপ্পা ঘরের মধ্যে থাকা ভারি পাইপ জাতীয় জিনিস দিয়ে প্রাণগোবিন্দবাবুর মাথায় আঘাত করে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন প্রাণগোবিন্দবাবু। রেণুকাদেবী পাশের ঘরে টিভি দেখছিলেন। খুনের কথা জানলে বিপদ হবে ভেবে রেণুকাদেবীকেও ওই একই অস্ত্র দিয়ে খুন করে বাপ্পা। তার পর ৫০ হাজার টাকা ও সোনা নিয়ে পালায় সে।

পুলিশ জেনেছে, ওই দম্পতির কাছ থেকে বাপ্পা ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে শোধ দেয়নি। সম্প্রতি লাখখানেক টাকা ধার চেয়েছিল সে। পুলিশের দাবি, ওই দম্পতি বাপ্পাকে একটি রিকশাও কিনে দেন। জুয়ায় আসক্ত বাপ্পা রিকশা বিক্রি করে দেয়। বাজারে দেনা হওয়ায় ইদানীং পরিবার নিয়ে ওই ফ্ল্যাটের একটি ঘরেও সে আস্তানা গাড়তে চাইছিল বলে জেনেছে পুলিশ। ঘটনার পরে আলমারিতে প্রচুর গয়নার খালি বাক্স মিলেছে। আবাসনের বাসিন্দারা জানান, রেণুকাদেবী প্রচুর গয়না পরতেন। দেহ উদ্ধারের সময়ে তাঁর গায়ে কোনও গয়না মেলেনি। সম্প্রতি দম্পতি ব্যাঙ্ক থেকে বড় অঙ্কের টাকা বাড়িতে এনেছিলেন কি না, তা-ও দেখা হবে। পুলিশ জেনেছে, বুধবারই বাপ্পার সঙ্গে প্রাণগোবিন্দবাবুকে ব্যাঙ্কের দিকে যেতে দেখা যায়। আজ, শনিবার বাপ্পাকে আদালতে হাজির করানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE