রাস্তার কুকুরকে মারার প্রতিবাদ করে সেই মারমুখী জনতার হাতেই নিগৃহীত হলেন এক যুবক। শেষে এক পথচারী ১০০ ডায়ালে ফোন করে পুলিশে খবর দিলে তারা এসে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করেন। এ দিকে, খানিক পরে সেখানেই মৃত্যু হয় কুকুরটির। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রিজেন্ট পার্ক থানার এম আর বাঙুর হাসপাতালের উল্টো দিকে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাত সওয়া ১০টা নাগাদ মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন বেসরকারি এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী স্বপন হালদার। প্রিন্স আনোয়ার শাহ মোড় পেরিয়ে এম আর বাঙুরের কাছে পৌঁছে তিনি দেখেন, রাস্তার ধারে সরু গলির মুখে সাত-আট জনের একটি দল রাস্তার একটি কুকুরকে ধরে বেধড়ক মারধর করছেন। লাঠিসোঁটা নিয়ে এতজন মিলে একটি কুকুরকে মারছেন দেখে স্বপনবাবু মোটরবাইক থামিয়ে নেমে আসেন এবং কুকুরটিকে মারতে বারণ করেন। অভিযোগ, তাঁর কোনও কথা শোনা তো দূর, ওই মারমুখী জনতা কুকুরকে ছেড়ে উল্টে স্বপনবাবুকে ঘিরে ধরে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর শুরু করেন। তিনি প্রতিবাদ করলেও কেউ শোনেনি বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় ফুটপাথে বসে পড়েন তিনি। তখনই এক পথচারী তাঁকে দেখে ১০০ ডায়ালে ফোন করে পুলিশে খবর দেন। এর পরেই রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ গিয়ে স্বপনবাবুকে এম আর বাঙুরে ভর্তি করে। এ দিকে, পুলিশ আসছে বুঝে মারমুখী জনতা এলাকা ছেড়ে পালায়। স্বপনবাবুর দাবি, তিনি দু’জনের নাম শুনেছিলেন যা তিনি এফআইআর-এ লিখেছেন। কিন্তু পুলিশ এখনও কাউকে
ধরতে পারেনি।
প্রশ্ন উঠেছে, এত জন মিলে একটি কুকুরকে ধরে মারার পিছনে কী কোনও কারণ ছিল? কুকুরটি কাউকে কামড়েছিল বলেই কী সেটিকে মারা হচ্ছিল? পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, তাদের কাছে কুকুর সম্পর্কে এ রকম কোনও অভিযোগ নেই। ঘটনার পরে এলাকায় গিয়েও কুকুরের এ ধরনের কোনও খবর তারা পায়নি।
এ দিনের ঘটনার প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। তিনি বলেন, ‘‘কুকুরটিকে নিয়ে কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা তো কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন বা স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানাতে পারতেন। কিন্তু এ ভাবে প্রথমে কুকুরকে মার এবং কেউ বাধা দিলে সেই ব্যক্তিকে মারধর করা মানসিকতা অপরাধপ্রবণ মানুষ ছাড়া কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়।’’ পাশাপাশি, অভিযুক্তেরা কেন গ্রেফতার হয়নি, তিনি তা নিজে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy