Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Murder

Murder: খুন করে আত্মহত্যার নেপথ্যে কি ফ্ল্যাট বিক্রি নিয়ে মতান্তর

পুলিশ জানিয়েছে, গোবর্ধন আগে বেসরকারি বাসের চালক ছিলেন। বছর দশেক আগে বাসেই তাঁর সঙ্গে শান্তির পরিচয়।

ঘটনাস্থল: এই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয় শান্তি সিংহের দেহ।

ঘটনাস্থল: এই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয় শান্তি সিংহের দেহ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২২ ০৬:২৯
Share: Save:

প্রেমিকা কেন সর্বক্ষণ তাঁর সঙ্গে থাকেন না, এই নিয়ে রাগারাগি করতেন প্রায়ই। প্রেমিকার বক্তব্য ছিল, বাড়ি ছেড়ে এত দূর এসে তাঁর পক্ষে সব সময়ে থাকা সম্ভব নয়। তার চেয়ে বরং এখানকার ফ্ল্যাট বিক্রি করে তাঁর সঙ্গেই চলুক প্রেমিক।

এ নিয়ে বচসার জেরেই মঙ্গলবার দুপুরে গরফার শরৎ বসু কলোনির বাসিন্দা, প্রেমিক গোবর্ধন শেঠের হাতে খুন হন বেলেঘাটার বাসিন্দা সেই প্রেমিকা শান্তি সিংহ। ঘটনার এক দিন পরে পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, খুন করা হয়েছে দুপুর তিনটে নাগাদ। ঘটনাটি গোবর্ধন ঝোঁকের মাথায় ঘটান। তাই বছর পঁয়তাল্লিশের প্রেমিকাকে খুন করে ট্রেনের সামনে ঝাঁপিয়ে আত্মঘাতী হন বছর বাষট্টির প্রেমিক। বিকেল চারটে নাগাদ প্রেমিকার বোন মুন্নি সিংহকে ফোন করে শান্তিকে খুন করার কথা তিনিই জানান।

পুলিশ জানিয়েছে, গোবর্ধন আগে বেসরকারি বাসের চালক ছিলেন। বছর দশেক আগে বাসেই তাঁর সঙ্গে শান্তির পরিচয়। বেলেঘাটার বাসিন্দা শান্তি পরিচারিকার কাজ করতেন। তাঁর মা এবং বোন রয়েছেন। গোবর্ধনের স্ত্রী এবং এক মেয়ে আলাদা থাকেন। প্রৌঢ়ের দুই দিদির এক জন বারাণসী এবং অন্য জন গরফায় থাকেন। তাঁদের কারও সঙ্গেই গোবর্ধনের যোগাযোগ ছিল না। আগে একটি দখলি জমিতে থাকতেন তিনি। সেখানে বাড়ি উঠবে বলে জায়গাটি ছাড়তে হয় তাঁকে। বদলে প্রোমোটার শরৎ বসু কলোনির একতলার ফ্ল্যাটটি দেন তাঁকে। কাজে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে সেখানেই প্রতিদিন যেতেন শান্তি।

পুলিশের অনুমান, তিনি কেন ফিরে যাবেন, এ নিয়ে বচসা বাধে। শান্তিকে মারধর শুরু করেন গোবর্ধন। মারের চোটে শান্তির দাঁত এবং গলার হাড় ভেঙে যায়। মৃতদেহে ওড়নার ফাঁসও জড়ানো ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রেমিকা মারা যাওয়ার পরে গোবর্ধন শান্তির বোন মুন্নিকে ফোন করেন। পরে আত্মঘাতী হন। যদিও প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন কোনও মারধরের আওয়াজ শোনেননি তাঁরা।

বুধবার শরৎ বসু কলোনির চারতলা বাড়ির একতলায় গোবর্ধনের এক কামরার ফ্ল্যাটের কাচের জানলা ঠেলে দেখা গেল, তখনও এক জায়গায় লেগে রক্তের দাগ। দোতলারবাসিন্দা এক মহিলা বললেন, ‘‘শান্তি নিজে আমাদের বলেছেন, লোক পেলে ফ্ল্যাটটি তাঁরা বিক্রি করবেন।এখানে গোবর্ধনকে দেখার কেউ নেই, তাই তিনি সঙ্গে করে তাঁকে নিয়েযেতে চান বলেও জানিয়েছিলেন।’’ মহিলার দাবি, ‘‘গোবর্ধন এই ফ্ল্যাট বিক্রি করে যেতে সম্ভবত রাজি ছিলেন না। সেই নিয়েই গোলমাল হয়ে থাকতে পারে।’’

গোবর্ধনের এক দিদির সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখত না। বাবা-মা মারা যাওয়ার পরে বাস চালানোও ছেড়ে দিয়েছিল।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE