Advertisement
E-Paper

অনিয়ন্ত্রিত গতি, সিগন্যাল ভাঙা, আরসালানের জাগুয়ারের বিরুদ্ধে আগেও ৪৮টা অভিযোগ ছিল!

রবিবার আরসালানকে আদালতে পেশ করে পুলিশ তদন্তের জন্য ১৪ দিনের জন্য তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। বিচারক অলকানন্দা সরকার দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে আগামী ২৯ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ১৮:৪৭
ধৃত আরসালান পারভেজ। নিজস্ব চিত্র।

ধৃত আরসালান পারভেজ। নিজস্ব চিত্র।

জাগুয়ারের প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে রাস্তা থেকে ২০ ফুট দূরে ছিটকে গিয়েছিল ব্যবসায়ী অমিত কাজারিয়ার মার্সিডিজ। সেখান থেকেই স্পষ্ট কতটা জোরে গাড়ি চালাচ্ছিল আরসালান পারভেজ, আদালতে রবিবার এমনটাই দাবি করেন সরকারি আইনজীবী।

রবিবার আরসালানকে আদালতে পেশ করে পুলিশ তদন্তের জন্য ১৪ দিনের জন্য তাদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে। বিচারক অলকানন্দা সরকার দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে আগামী ২৯ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের দাবি, জেরার মুখে বেশ কিছু তথ্য লুকোচ্ছেন আরসালান। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ বেকবাগানের বাড়ি থেকে নিজের প্রিয় জাগুয়ার গাড়ি নিয়ে বেরোন আরসালান। সেখান থেকে তিনি কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় যান। বেশ কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গেও দেখা করেন। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসেও তিনি বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। তদন্তকারীদের দাবি, গোটা ঘটনাক্রমের যে বর্ণনা আরসালান দিয়েছেন তদন্তকারীদের তার সঙ্গে প্রকৃত ঘটনার বেশ কিছু ফাঁক রয়ে গিয়েছে। সেই ফাঁকগুলো পূরণের জন্যই ফের জেরা করা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: বার বার সিগন্যাল ভেঙেই ছুটছিল জাগুয়ার, ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে আরসালান​

কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতে শেকসপিয়র সরণি থানার সামনে মার্সিডিজে ধাক্কা মারার পরই গাড়ি ছেড়ে পায়ে হেঁটে ওই এলাকা থেকে চলে যান আরসালান। তার পরিবারের সদস্য মহম্মদ মুস্তাফা বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার পরই আরসালান তার বাবাকে ফোন করেন। বাবা আমাদের জানান। আমরা খবর পেয়ে আরসালানকে গাড়ি করে নিয়ে আসি।’’ পরিবারের সদস্যদের দাবি, আরসালান পরের দিন সকালে নিজেই ডেপুটি কমিশনার (সাউথ)-র অফিসে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

পরিবারের দাবি, আরসালান শুক্রবার রাতে তাদের তারাতলার দোকানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে ওই ঘটনা ঘটেছে। তবে পুলিশ ওই দাবি ‘অসত্য’ বলেই দাবি করেছে। তদন্তকারীদের একাংশের ইঙ্গিত, আরসালানকে জেরা করে গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। সেখান থেকেই জানা যাবে ওই দিন রাতে তিনি মদ্যপান করেছিলেন কি না।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে অমিত শাহকে চিঠি শোভনের, ইমেলে অভিযোগ সিপিকেও​

তদন্তকারীদের দাবি, ওই জাগুয়ারের বিরুদ্ধে এর আগেও সিগন্যাল ভাঙার বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত মোট ৪৮টা ট্রাফিক আইন ভাঙার মামলা হয়েছে ওই জাগুয়ারের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ৪৭টা হচ্ছে বেশি গতিতে গাড়ি চালানো এবং একটি সিগন্যাল ভাঙার মামলা। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই রাতেও, লাউডন স্ট্রিট-শেকসপিয়র সরণি সংযোগস্থলে মার্সিডিজটিকে ধাক্কা মারার আগে জীবনদীপ বিল্ডিংয়ের কাছে আরসালানের গাড়ি একবার সিগন্যাল ভাঙে। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গাড়িটি কেনা হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল।

এ দিন আদালতে ছিলেন ধৃতের স্কুলের বন্ধুরাও। স্নেহল গুপ্ত নামে এক বন্ধু বলেন, তাঁরা দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বাইপাসের ধারে একটি নামি স্কুলে পড়াশোনা করেন। এর পর আরসালান এডিনবরা যান বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের স্নাতক স্তরের ডিগ্রির জন্য। ২০১৮ সালে সে ফিরে আসেন। তারপর স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তিনি । গত রবিবারও বন্ধুদের নিয়ে ওই জাগুয়ারে চেপেই বেরিয়েছিলেন আরসালান। আরসালানের অন্য এক বন্ধু শুভম বালদি বলেন, ‘‘ আমরা ওকে কখনই স্কুলে বেপরোয়া দেখিনি।ওর ব্যবহার খুব ভাল ছিল। গাড়িও চালাতো আইন মেনেই।’’

আরও পড়ুন: এত সোনা নিয়ে কেন চাঁদে যাচ্ছে চন্দ্রযান-২?​

তবে এ দিন সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় আদালতে বলেন, ‘‘অত্যন্ত বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন আরসালান। ওই মার্সিডিজে থাকা দুই যাত্রী অমিত কাজারিয়া এবং তাঁর স্ত্রী কণিকা গুরুতর জখম হন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে।’’ সরকারি আইনজীবী আদালতে অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা এবং সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৮ এবং পিডিপিপি আইন যুক্ত করার আবেদন জানান।

Jaguar Accident Mercedes Arsalan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy