Advertisement
০৭ মে ২০২৪

রাস্তার পোষ্যের অভিভাবকত্ব পেতে পুলিশের দ্বারস্থ দম্পতি

নিউ গড়িয়া হাউজ়িং-এর বাসিন্দা, ওই শিক্ষিকা কবিতা পান রবিবার ফোনে জানান, চার বছরের কালু জন্ম থেকে তাঁদের হাউজ়িং-এ ঘুরে বেড়ায়। তিনি ও প্রতিবেশী সৌমিত্র সরকার কালুর খাওয়া, ওষুধ, চিকিৎসা, টিকাকরণের খরচ সামলান।

দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম কালুর অভিভাবকত্ব নিয়েই চলছে চাপান-উতোর। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম কালুর অভিভাবকত্ব নিয়েই চলছে চাপান-উতোর। নিজস্ব চিত্র

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

হলই বা সে রাস্তায় অবহেলায় বড় হওয়া পুরুষ কুকুর। এ বার তার অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিতে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন এক স্কুলশিক্ষিকা ও তাঁর ব্যবসায়ী স্বামী।

তাঁদের দাবি, ছোট থেকে ওই সারমেয়কে দেখভাল করছিলেন তাঁরা। গত মে মাসে বড়সড় দুর্ঘটনায় আহত হয় কালু নামে সেই সারমেয়। তাঁরাই তাকে ভর্তি করেন বাড়ির কাছে একটি নিরাময় কেন্দ্রে। অভিযোগ, তাঁদের অনুমতি ছাড়া, মিথ্যা কথা বলে তাঁদেরই এক প্রতিবেশী কালুকে নিয়ে দূরের এক প্রতিষ্ঠানে রেখে এসেছেন। দম্পতি চেয়েও ফেরত পাচ্ছেন না কালুকে। পঞ্চসায়র থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা।

নিউ গড়িয়া হাউজ়িং-এর বাসিন্দা, ওই শিক্ষিকা কবিতা পান রবিবার ফোনে জানান, চার বছরের কালু জন্ম থেকে তাঁদের হাউজ়িং-এ ঘুরে বেড়ায়। তিনি ও প্রতিবেশী সৌমিত্র সরকার কালুর খাওয়া, ওষুধ, চিকিৎসা, টিকাকরণের খরচ সামলান। ৩০ মে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত কালুকে কাছেরই গড়িয়া নিরাময় কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা শুরু হয়। ওই ঘটনায় ভেঙে গিয়েছিল তার মেরুদণ্ডও। বেলগাছিয়া পশু হাসপাতাল এবং বাইরের পশু চিকিৎসককে দেখিয়ে শুরু হয় কালুর চিকিৎসা। বাঁ পা বাদ যায়। কবিতাদেবীর দাবি, ১৮ হাজার টাকা খরচ করে কালুর জন্য তিনি হুইলচেয়ার করে দেন।

সব কিছু ঠিক চলছিল। ৮ জুলাই তাঁদেরই হাউজ়িং-এর বাসিন্দা স্বরূপ কর কবিতাদেবীর স্বামী সুব্রত পানের কাছে কালুর খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন দুর্ঘটনার কথা। কবিতাদেবী বলেন, ‘‘১০ জুলাই ওই নিরাময় কেন্দ্র থেকে ফোন করে স্বরূপ বলে, ‘কাকিমা, আমার চেনা জার্মান পশু চিকিৎসক বেলগাছিয়ায় এসেছেন। কালুকে তাঁকে দেখাতে চাই।’ বিদেশি চিকিৎসক দেখলে কালু যদি সেরে ওঠে, এই ভেবে রাজি হয়ে যাই। কিন্তু, বেলগাছিয়ায় না নিয়ে গিয়ে কালুকে বেহালার একটি সংস্থায় রেখে আসে স্বরূপ। কেন? আজও জানি না।’’

কবিতাদেবী পরদিন বেহালা থেকে কালুকে আনতে গেলে তাঁকে জানানো হয়, স্বরূপ বলে কাউকে ওই সংস্থার লোকেরা চেনেন না। শিবাশিস কোলে নামে এক ব্যক্তি কালুকে ভর্তি করেছেন। তিনি না বললে কালুকে ছাড়া যাবে না। কবিতাদেবী ফোনে শিবাশিসবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, কালু ওখানেই ভাল থাকবে। কেন মিথ্যা বলে তাঁকে সেখানে আনা হল, তার উত্তর শিবাশিসবাবু দিতে পারেননি বলে কবিতাদেবীর দাবি।

স্বরূপবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘কালুর আরও ভাল চিকিৎসার জন্য নিয়ম মেনে ওকে বেহালায় নিয়ে গিয়েছি।’’ কিন্তু, জার্মানির চিকিৎসক? স্বরূপবাবুর কথায়, ‘‘এত প্রশ্নের জবাব দিতে বাধ্য নই।’’ শিবাশিসবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যা জানার থানা থেকে জেনে নিন। কিছু বলব না।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্ত চলছে। স্বরূপবাবুকে ডেকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কালু এখনও বেহালাতেই রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Garia Street Dog Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE