Advertisement
E-Paper

যাত্রী-সুরক্ষায় মাইক এবং ক্যামেরা মেট্রোর নয়া রেকে

ময়দান স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিলেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯ ০২:০৫
আধুনিক: মেট্রোর নতুন রেকে রয়েছে হুইল চেয়ার রাখার জায়গা। (ইনসেটে) চালকের সঙ্গে কথা বলার মাইক রয়েছে এই অংশে। নিজস্ব চিত্র

আধুনিক: মেট্রোর নতুন রেকে রয়েছে হুইল চেয়ার রাখার জায়গা। (ইনসেটে) চালকের সঙ্গে কথা বলার মাইক রয়েছে এই অংশে। নিজস্ব চিত্র

ময়দান স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিলেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।

আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কোনও মেট্রো-যাত্রী চালকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে মাইক্রোফোনের বোতাম টিপলে সঙ্গে সঙ্গে কাছাকাছি থাকা সিসি ক্যামেরা সক্রিয় হয়ে সেই ছবি পৌঁছে দেবে চালকের কাছে। যাত্রীর অভিযোগ শোনার পাশাপাশি তাঁর পারিপার্শ্বিক অবস্থাও নিজের কেবিনে বসে দেখতে পাবেন চালক। এতে তাঁর পক্ষে কর্তব্য স্থির করা অনেক দ্রুত এবং সহজ হবে। পাশাপাশি, প্রতি কামরায় থাকছে ছ’টি করে মাইক্রোফোন এবং তিনটি করে সিসি ক্যামেরা। যেগুলি কাজ করবে একে অন্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে। একাধিক যাত্রী বোতাম টিপলেও যন্ত্র নিজেই ক্রম নির্ধারণ করে নেবে।

নতুন এই ব্যবস্থা থাকছে চিন থেকে সদ্য এসে পৌঁছনো মেট্রোর এসি রেকে। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় ক্যামেরা এবং কামরার মাইক্রোফোনের মধ্যে সমন্বয়ের ব্যবস্থা ছাড়াও তাতে থাকছে আরও একাধিক সুবিধা। মেট্রোকর্তাদের দাবি, নতুন এই রেক যাত্রী পরিবহণে নামলে পরিষেবার মান অনেকটাই উন্নত হবে।

মেট্রো সূত্রের খবর, জরুরি পরিস্থিতিতে চালকের কেবিন দিয়ে যাত্রীদের বার করার প্রয়োজন হলে এখন সামনের বিশেষ দরজা খুলে সিঁড়ি নামাতে প্রায় আট মিনিট সময় লাগে। নতুন কোচে ওই কাজ করতে সময় লাগবে মাত্র ২৫ সেকেন্ড।

এ ছাড়া কোনও কারণে কামরার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে প্রয়োজনে ভিতর এবং বাইরে থেকে দরজা খোলা যাবে। বর্তমানে চালু থাকা এসি রেকে বাইরের দিকে ওই সুবিধা নেই। এ ছাড়া, নতুন কোচগুলির যাত্রী পরিবহণ ক্ষমতাও বর্তমান এসি রেকের থেকে অনেক বেশি। এখনকার এসি রেকে যেখানে এক বারে ৩১০০ যাত্রী উঠতে পারেন, সেখানে চিনা রেকে উঠতে পারবেন প্রায় ৩২০০ যাত্রী। বসার আসনও বেশি থাকছে নতুন রেকে। বর্তমানে মোট আটটি কোচে ৩৯৬ জন বসার সুযোগ পান। সেখানে নতুন এসি রেকে ৪০৮ জন যাত্রী বসতে পারবেন। প্রতি কামরায় এসির ক্ষমতা ২২ টন থেকে বেড়ে হচ্ছে ২৮ টন। ফলে অনেকটাই উন্নত হবে বাতানুকূল ব্যবস্থা। কামরার দরজার পরিসর ১২৮০ মিলিমিটার থেকে বেড়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মতো ১৪০০ মিলিমিটার করা হয়েছে। এতে যাত্রীদের ওঠা-নামা অনেক সহজ হবে। বাড়ছে ভেস্টিবিউলের প্রস্থও।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মতো নতুন কোচে প্রয়োজনে আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থার উপযোগী উপকরণও বসানো যাবে বলে জানিয়েছেন মেট্রোকর্তারা। প্রত্যেক কামরায় ডিসপ্লে বোর্ডের সংখ্যা চার থেকে বেড়ে আট হচ্ছে। ফলে সব যাত্রীই ডিসপ্লে বোর্ড দেখার সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি বাড়ছে অগ্নি-নির্বাপকের সংখ্যা। তা দুই থেকে বেড়ে চার হচ্ছে। প্রতি কোচে থাকবে ফায়ার অ্যান্ড স্মোক অ্যালার্ম।

যাত্রীদের ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিস অনেক সময়েই মেট্রোর দরজার খাঁজে পড়ে আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর ফলে দরজা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়। বিঘ্ন ঘটে মেট্রো চলাচলে। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে নতুন রেকে বদলাচ্ছে দরজার খাঁজের গড়ন। ঘন ঘন ব্রেক ব্যবহারে চাকার ক্ষয় ঠেকাতে বিশেষ ধরনের ডিস্ক ক্যালিব্রেটেড ব্রেক থাকছে এতে। নতুন রেকগুলি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। তবে কলকাতা মেট্রোয় তা প্রতি ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করে মাস তিনেকের মধ্যেই নতুন রেকটি চালানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

Kolkata Metro Metro Rakes Passenger Safety
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy