E-Paper

যাদবপুরে ছাত্রী ‘হেনস্থা’, তৎপর সংখ্যালঘু কমিশন

ওই ছাত্রীদের মধ্যেই এক জন পরিদর্শনের সময়ে জনৈক শিক্ষকের ব্যবহারে ব্যথিত হন বলে জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:১৩
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।

পরীক্ষার সময়ে টোকাটুকির সন্দেহে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হিজাব খুলে পরিদর্শনের ঘটনা নিয়ে কিছু অভিযোগ রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়ারপার্সন আহমেদ হাসান ইমরান শিক্ষাঙ্গনে প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।

গত ২২ ডিসেম্বর, সোমবার যাদবপুরে ইংরেজি বিভাগের সিমেস্টার পরীক্ষার সময়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ ইয়ারফোন পরে বসে শুনে শুনে কিছু টুকছিলেন বলে শিক্ষকদের দাবি। তবে হিজাব পরিহিতা যে দু’জনকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তল্লাশি করা হয়, তাঁদের কাছে ইয়ারফোন বা কিছু পাওয়া যায়নি।

ওই ছাত্রীদের মধ্যেই এক জন পরিদর্শনের সময়ে জনৈক শিক্ষকের ব্যবহারে ব্যথিত হন বলে জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘পরীক্ষা শেষের মিনিট ১৫ আগে বিভাগীয় প্রধান আমার সামনে এসে হিজাব খুলে দেখতে চান। তখন অন্য ছাত্রছাত্রীরাই বলেন, এটা প্রকাশ্যে সম্ভব নয়। ওই শিক্ষিকা আমায় প্রথমে শৌচাগারে পরে গবেষকদের ঘরে নিয়ে যান। আর এক জন গবেষক মহিলাও ছিলেন। আমি হিজাব খুলে দেখাই কানে কিছু গোঁজা নেই।’’ ওই ছাত্রীর কথায়, ‘‘হিজাব খোলার আগে ম্যাম (বিভাগীয় প্রধান) অবশ্য আমায় বলেন, এটা করতে হচ্ছে, কিছু মনে করো না! কিন্তু এর পরে অপ্রাসঙ্গিক ভাবেই আমি সব সময়ে বা গরমকালেও হিজাব পরি কী না গোছের নানা প্রশ্ন করতে থাকেন! ওঁর ধারণায়, আমি খুব চাপের মধ্যে হিজাব পরতে বাধ্য হচ্ছি বলে আমার মনে হয়েছে।’’ সময় নষ্টের জন্য পরীক্ষায় তাঁকে মিনিট পাঁচেক বাড়তি সময় দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ছাত্রীটি।

ঘটনার পরের দিন (মঙ্গলবার) ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট একটি সেলে ‘হেনস্থা’র অভিযোগ জানান। উপাচার্যকেও চিঠি লেখেন। কয়েক জন সিনিয়রের পরামর্শে তিনি সংখ্যালঘু কমিশনের দ্বারস্থ হন বলে ছাত্রীটি জানিয়েছেন। যাদবপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সেলিম বক্স মণ্ডল বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু কমিশন এসে কী ঘটেছে, খোঁজখবর করবে। এর পরে প্রয়োজনমতো বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পদক্ষেপ করা হবে।’’

ঘটনাটি নিয়ে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকেরাও বড়দিনের বিকেলেই বৈঠক করেন। জনৈক অধ্যাপকের কথায়, ‘‘বিভাগে হিন্দু, মুসলিম, দলিত, ট্রান্স-কুইয়ার শিক্ষক-শিক্ষিকারা আছেন। কোনওরকম জাতিগত বিদ্বেষের গোঁড়ামি এই পরিবেশে নেই। কোনওভাবে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে।’’ সোমবার ছাত্র-শিক্ষক বৈঠকও ডাকা হয়েছে।

এ বারের সিমেস্টার পরীক্ষায় টোকাটুকির অভিযোগ অবশ্য গুরুতর বলেই শিক্ষকদের একাংশের মত। হুড-দেওয়া সোয়েটার পরা এক ছাত্রী কিছু দিন আগে ধরা পড়েন বলে অভিযোগ। চার জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে টোকার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও গিয়েছে। যাদবপুরের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘হিজাব পরে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, এমন সব ছাত্রীকেই ধরে ধরে হিজাব খুলে দেখা হয়েছে তা নয়। কিছু ক্ষেত্রে সন্দেহের বশে আড়ালে নিয়ে গিয়ে দেখা হয়। এ ছাড়া আরও অনেকের উপরেই নজরদারি চালানো হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Minority Commission Jadavpur University

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy