এসএসকেএম হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বীরবাহাদুর সিংহ। নিজস্ব চিত্র
গার্ডেনরিচের রাস্তায় দিন দুপুরে গুলিতে এফোঁড়- ওফোঁড় হয়ে গেল রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর স্থানীয় এক নেতার বুক। বীরবাহাদুর সিংহ নামে বছর তিরিশের ওই ব্যক্তিকে দুষ্কৃতীরা খুব কাছ থেকে গুলি করে। সেই গুলি পিঠ দিয়ে ঢুকে বীরবাহাদুরের হৃদপিণ্ডের দেড় ইঞ্চি নীচে দিয়ে বেরিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে গার্ডেনরিচ থানা এলাকার মসজিদ তালাও এলাকায়। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখন তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। গুলি পিঠ দিয়ে ঢুকে বুকের কাছ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পর তদন্তকারীদের ধারণা, বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে সংঘাত থেকে এই ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কারণও উড়িয়ে দিতে পারেননি পুলিশ আধিকারিকরা।
মেটিয়াবুরুজ থানা এলাকার লিচু বাগানের বাসিন্দা বীরবাহাদুর পেশায় স্থানীয় একটি স্কুলের কম্পিউটার প্রশিক্ষক। তিনি প্রতিদিন সকালে ওই সময়ে হেঁটে বাড়ি থেকে স্কুলে যান। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়,‘‘হঠাৎ করেই একটা আওয়াজ হয়। তারপরেই দেখি বীরবাহাদুর পড়ে গিয়েছেন। তাঁর পিঠ ও বুক থেকে রক্ত বার হচ্ছে।” এসএসকেএম হাসপাতালে বীরবাহাদুর তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, হঠাৎ তিনি দেখেন তাঁর খুব কাছে এক যুবক চলে এসেছে। তারপরেই একটা আওয়াজ হয় এবং পিঠে কিছু বিঁধে যাওয়ার অনুভূতি হয় তাঁর।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি, প্রথম মামলা রুজু করল জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ
ঘটনার পরেই গার্ডেনরিচ থানার আধিকারিকরা যেখানে গুলি চলেছে সেখানে পৌঁছন। প্রত্যক্ষদর্শী এবং পরে বীরবাহাদুরের সঙ্গে কথা বলে পুলিশের ধারণা আততায়ী হেঁটে এসেছিল। তদন্তে জানা যায়, বীরবাহাদুর যে বাড়িতে ভাড়া থাকেন তার মালিক ওই বাড়ি বহুতল করার জন্য স্থানীয় এক প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তি করেছেন। ওই বাড়িতে বীরাবাহাদুর ছাড়া আরও ১৪ জন ভাড়াটে ছিল। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ১৩ জন মালিক এবং প্রোমোটারের দেওয়া প্রস্তাব মেনে বাড়ি ছেড়ে দেন। কিন্তু বীরবাহাদুর এবং আরও একটি পরিবার বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি। বীর বাহাদুর পুলিশকে অভিযোগ করেছেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে বাড়িওয়ালা এবং প্রোমোটারের সঙ্গে তাঁর ঝামেলা চলছে। অভিযোগ, ওই প্রোমোটার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ। এর আগেও প্রোমোটারের লোকজন তাঁকে মারধর করেছে, হুমকি দিয়েছে, এই অভিযোগ তিনি থানায় করেছিলেন।
আরও পড়ুন: শহরে ফের এটিএম জালিয়াতি, যাদবপুরে একের পর এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরবাহাদুর এবং তাঁর পরিবারের লোকজন অভিযোগ জানিয়েছেন, সম্প্রতি ওই প্রোমোটার এবং তার লোকজন বীরবাহাদুরের আরএসএস যোগ নিয়েও হুমকি দিতে থাকে। বিজেপির দক্ষিণ ২৪ জেলা সভাপতি অভিজিৎ দাস দাবি করেছেন যে, বীরবাহাদুর তাঁদের ওই এলাকার নেতা। তবে বীরবাহাদুর নিজে বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগ অস্বীকার করেছেন। তদন্তকারীদের ধারণা, প্রোমোটিং সংক্রান্ত পুরনো শত্রুতা থেকেই এ দিনের ঘটনা।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে। এক ব্যক্তি আহতও হয়েছেন। তিনি অভিযোগ জানালে স্পষ্ট হবে, কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy