আপৎকালীন পরিষেবার শীর্ষে তাদের ঠাঁই। যেখানে বিপদ, যত শীঘ্র সম্ভব সেখানে তাদের পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্যের সেই দমকল বিভাগই যেন খুঁড়িয়ে চলছে। যার মূল কারণ কর্মী-অফিসারের অভাব।
শুধু আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত কর্মী ও আধিকারিকের অভাব নয়। এমনকী তিন বছর ধরে দমকলের পাঁচটি ডেপুটি ডিরেক্টরের পদও ফাঁকা। শ্রমশক্তির এই সামগ্রিক ঘাটতির ছায়া পড়ছে দমকলের প্রাত্যহিক কাজকর্মে।
দমকল বিভাগে শীর্ষ স্তরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ খালি থাকায় রাজস্ব আদায়েও ভাটা পড়েছে। ২০১৫ সালে দমকলের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ন’কোটি দু’লক্ষ ৮৮ হাজার ৫২৫ টাকা। ২০১৬ সালে তা কমে হয়েছে ছ’কোটি ৫৬ লক্ষ ৪০ হাজার ১৪২ টাকা। অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কমেছে এক বছরে। দমকলে রাজস্বের উৎস বলতে মূলত নতুন ফায়ার লাইসেন্স দেওয়া আর পুরনো লাইসেন্স নবীকরণ। কর্মী-অফিসারের অভাবে ওই দুই উৎস থেকে সর্বোচ্চ মাত্রায় সেই আদায়ের কাজটাও হচ্ছে না বলে দফতরের অন্দরের খবর।
এক দমকলকর্তা বলেন, ‘‘আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত লোক তো নেই-ই। রাজস্ব আদায়ের জন্য যাঁদের নজরদারি করার কথা, সেই ডেপুটি ডিরেক্টর থেকে শুরু করে স্টেশন অফিসার, সাব-অফিসারের বহু পদও খালি। সব কাজই দেখতে হচ্ছে ডিভিশনাল অফিসারদের।’’
এ ছাড়াও ফাঁকা পড়ে আছে দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি, হাওড়া এবং দমকলের সদর দফতরে (দু’টি) ডেপুটি ডিরেক্টরের পাঁচটি পদ। দমকল সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে গোটা দমকল দফতরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার
পদ খালি।
অথচ কাজের বহর বেড়েই চলেছে। গত পাঁচ বছরে রাজ্যে প্রায় ৩০টি নতুন দমকল কেন্দ্রের উদ্বোধন হয়েছে। একাধিক নতুন দমকল কেন্দ্র উদ্বোধনের অপেক্ষায়। কিন্তু নতুন নিয়োগ তো দূরের কথা, রাজ্যে পুরনো ১০২টি দমকল কেন্দ্রই ধুঁকছে লোকাভাবে।
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন লাগলে অকুস্থলে পৌঁছতে সর্বাগ্রে যাঁদের দরকার, সেই গাড়িচালকেরই প্রায় ৪০০ পদ খালি। আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত ফায়ার অপারেটরের প্রায় ২৫০০ পদেও লোক নেই। ফায়ার অপারেটরদের যিনি লিড করেন, সেই ‘লিডার’ নেই অন্তত ৩০০ জন। স্টেশন অফিসারের প্রায় ৩০টি এবং সাব-অফিসারের প্রায় ২০০টি পদ ফাঁকা। নিয়ম অনুযায়ী আগুন নেভানোর জন্য দমকলের গাড়িতে কমপক্ষে সাত জন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু এখন থাকেন মাত্র ৪-৫ জন।
বাম প্রভাবিত ফায়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ওয়েস্ট বেঙ্গল)-এর সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সেনগুপ্ত জানান, বিভিন্ন শূন্য পদ পূরণের জন্য আগেও ডিজি-র কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, কোনও লাভ হয়নি।
দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘রাজস্ব কমেছে কি না জানা নেই। তবে ডেপুটি ডিরেক্টর-সহ বিভিন্ন পদ যাতে অবিলম্বে পূরণ করা যায়, সেই বিষয়েই আলোচনা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy