—ফাইল চিত্র।
বর্ষবরণের পার্টির মতো বিশেষ দিনে হোটেলে বিপদ ঠেকাতে কী করব? কিংবা হোটেলের হেঁশেলের গ্যাসব্যাঙ্কে স্প্রিঙ্কলার রাখা কি ঠিক হবে?
পরপর প্রশ্ন ধেয়ে আসছিল দমকলকর্তাদের দিকে। শনিবার সন্ধ্যায় দমকলের ডিজি জগমোহন এই প্রশ্নবাণের মুখোমুখি হলেন। পূর্বাঞ্চলীয় হোটেল-রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে বিমানবন্দরের কাছের একটি হোটেলে অগ্নি-সুরক্ষা সংক্রান্ত কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। হোটেল-রেস্তরাঁ সংগঠনের কর্তা সুদেশ পোদ্দারের কথায়, ‘‘প্রধানত মাস দুই আগে দিল্লির করোল বাগে হোটেলে বিধ্বংসী আগুনে ১৭ জনের মৃত্যুর ধাক্কাতেই কিছুটা ঠেকে শিখে এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। সে-যাত্রা, অনেকেই বেরোনোর রাস্তা খোলা না-পেয়ে প্রাণ নিয়ে বেরোতে পারেননি।
দমকলের ডিজি জগমোহনের অভিযোগ, বেশির ভাগ হোটেল-রেস্তরাঁই মক ড্রিল বা সুরক্ষা-মহড়ার ধার ধারে না। কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডো-বাহিনীর ডিসি কর্নেল নেভেন্দ্র সিংহও বলছিলেন, ‘‘বাগড়ি মার্কেটে আগুনের পরেও দেখা গিয়েছিল, অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। কারণ কেউ ব্যবহার করতে জানেন না।’’ হোটেল মালিকদের সংগঠনের তরফে সুদেশবাবুও মানছেন, কলকাতার হোটেলগুলিতে তাও সুরক্ষা-বিধির অনুশীলন হয়। কিন্তু রেস্তরাঁগুলি এখনও মক-ড্রিল সংক্রান্ত অনুশীলনে পিছিয়ে। শেক্সপিয়র সরণির একটি লাউঞ্জ বারে আগুন লেগেছিল মাস দেড়েক আগেই। বড় ক্ষতি হয়নি, কিন্তু ঘটনাটি হুঁশিয়ারি হিসেবেই দেখছেন সুদেশবাবুরা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
হোটেলে বর্ষবরণের পার্টির মতো উৎসব উপলক্ষেও বিশেষ সতর্কতা দরকার বলে মনে করেন দমকলের ডিজি। দমকলের অধিকর্তা অভিজিৎ পাণ্ডে একটি মৌলিক নিয়ম মেনে চলতে বলতে বললেন। তাঁর কথায়, ‘‘এমন যেন না হয়, ৪০০ জন ধরে এমন জায়গায় ঠেসে ৬০০ লোককে ধরানো হল। তা হলে কিন্তু মুশকিল।’’ এবং বার বার হোটেল থেকে বেরোনোর পথগুলি ফাঁকা এবং যথেষ্ট আলোকিত রাখায় তাঁরা জোর দিচ্ছেন।
দমকলের তরফে কয়েকটি মৌলিক সুরক্ষা-বিধি মেনে চলতে বলা হচ্ছে। যেমন, আগুন নেভানোর ব্যবস্থা কতটা কার্যকর, তা বার বার খতিয়ে দেখা। দমকল আইন মেনে, দমকলের নির্দেশ মেনে সুরক্ষার বন্দোবস্ত করতে হবে। বিপদের সময়ে বেরোনোর পথগুলি স্পষ্ট ভাবে চিহ্নিত ও বাধাহীন রাখা। কোথাও অহেতুক দাহ্য পদার্থ যেন পড়ে না-থাকে।
জগমোহন এ দিন দশ বছর আগের আমরি-বিপর্যয়ের কথাও মনে করিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরি-র ক্ষেত্রে ঘটনাটি ঘটেছিল, হাসপাতালের সুরক্ষাকর্মীদের হঠকারিতার জেরে। ছোটখাটো একটি আগুন দমকলকে খবর না-দিয়ে তাঁরা নিজের চেষ্টায় নেভাতে গিয়েছিলেন। এর পরে বিপদ এমন মারাত্মক আকার নেয়, যখন আর সামলানো যায়নি।’’ জগমোহনের কথায়, ‘‘বিপদ হলে আমাদের সঙ্গে-সঙ্গে খবর দিন। ত্রুটি দেখলে বড়জোর আমরা ব্যবস্থা নেব, কিন্তু আখেরে হোটেলের সম্পত্তি বাঁচবে। প্রাণহানি ঠেকানো যাবে।’’
কর্মশালায় ২০০টিরও বেশি হোটেল-রেস্তরাঁ মালিক শামিল হয়েছিলেন। তবে শহরে ক’টি হোটেলে পর্যাপ্ত অগ্নি-সুরক্ষা রয়েছে? দমকলকর্তাদের কাছে এর সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy