সাংসদ-তহবিলে বরাদ্দ টাকায় তৈরি ঘূর্ণায়মান মুক্তমঞ্চ পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়। কোন পদ্ধতিতে এই মঞ্চ ব্যবহার করা হবে, তার রূপরেখা তৈরি না হওয়ায় ফাঁপরে পড়েছে পুরসভা।
দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পাকের্র নবনির্মিত মঞ্চে গিয়ে দেখা গেল নীল প্লাস্টিক দিয়ে সেটি ঢাকা। রক্ষী এবং এক মালি জানালেন, বেশ কিছুদিন ধরে ও ভাবেই পড়ে আছে। অকুস্থলে দু’টি পাথরের ফলকে খোদাই করা তথ্যে লেখা, ঘূর্ণায়মান মুক্তমঞ্চটি তৈরির জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুব্রত বক্সী ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। ২০১২-র ২১ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজ শুরু হয় ২১ নভেম্বর। ৯০ দিনে তা শেষ করার কথা ছিল। এটি নির্মাণ এবং দেখভালের দায়িত্বে পুরসভার উদ্যান শাখা।
প্রকল্পটি সম্পর্কে খোঁজ করলে সুব্রত বক্সী বলেন, “আমি তো বেশ ক’টি প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ করেছি। আমার পক্ষে সব ক’টির হাল দেখা সম্ভব হয় না। ৮৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই মঞ্চের বিষয়ে পুরসভার বলতে পারার কথা।” মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, “মঞ্চটি নির্দিষ্ট সময়ে তৈরি হয়ে গিয়েছে। সেখানে অনুষ্ঠানও হচ্ছে।” এই সঙ্গে বলেন, সমস্যা একটাই। মঞ্চে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। অনুষ্ঠান করতে গেলে জেনারেটর ভাড়া করতে হবে।
পুরসভার উদ্যান শাখার ডিরেক্টর জেনারেল দেবাশিস চক্রবর্তী আবার বলেন, “গত ২১ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী এটির উদ্বোধন করেছেন। তবে রোদ-জলে ঘূর্ণায়মান মঞ্চের যন্ত্র নষ্ট হয়ে যাবে বলে প্লাস্টিকের আচ্ছাদন দিয়ে রাখা হয়েছে। এটির উপরে ছাউনি তৈরি হবে। এ কারণে অনুষ্ঠান হচ্ছে না।” তিনি জানান, এর জন্য বিদেশ থেকে ‘জিওসিন্থেটিক ফাইবার মেমব্রেন ম্যাট’ আনা হয়েছে। দিল্লি থেকে ওই জিনিস কলকাতায় আনতে একটু সমস্যা হচ্ছে।
পদস্থ এক পুর-ইঞ্জিনিয়ার অবশ্য বলেন, “মঞ্চটির ব্যবহারের শর্ত কী হবে, তার কোনও সরকারি রূপরেখা নেই। অর্থাত্, বৃষ্টি না থাকলে কোনও উদ্যোক্তা ওই মঞ্চে অনুষ্ঠানের অনুমতি পাবেন কি? পেলে কী হার ধার্য করবে পুরসভা?”
কেন এই হাল? ডিজি বলেন, “সিদ্ধান্তটা নেবেন কর্তৃপক্ষ।” মেয়র পারিষদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, “উপরের ছাউনি হয়ে গেলে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
অর্থাত্, সরকারি ভাবে উদ্বোধন হয়ে গেলেও প্রকল্পের আরও কাজ বাকি। কবে সেই কাজ শেষ হবে, নিশ্চিত দিনক্ষণ জানাতে পারছেন না পুরসভার কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy