Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Russia Ukraine War

Russia-Ukraine crisis: ইউক্রেনে আটকে পুষ্পক, সোনারপুরে বসে ভিডিয়ো কলে ধ্বংসের খবর পাচ্ছেন উদ্বিগ্ন বাবা-মা

পুষ্পক বাড়িতে জানিয়েছেন, টার্নোপিল এলাকায় এখন রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ। তবে রাজধানী থেকে অনেকটা দূরে ওই এলাকাটি।

উদ্বিগ্ন: ছেলে পুষ্পক স্বর্ণকারের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা মা-বাবার। শুক্রবার, সোনারপুরের বাড়িতে।

উদ্বিগ্ন: ছেলে পুষ্পক স্বর্ণকারের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা মা-বাবার। শুক্রবার, সোনারপুরের বাড়িতে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:২৫
Share: Save:

ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই সে দেশে আটকে পড়েছেন সোনারপুরের কামরাবাদের বাসিন্দা পুষ্পক স্বর্ণকার। ওই দেশে মেডিক্যালের পড়ুয়া পুষ্পক নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তন ছাত্র।

ইউক্রেনের টার্নোপিল স্টেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম বর্ষের ছাত্র পুষ্পক। মাসখানেক আগে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তিন-চার বার করে তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন উদ্বিগ্ন বাবা-মা সুজিত ও প্রতিভা স্বর্ণকার। যুদ্ধের আশঙ্কায় মাসখানেক আগেই বাড়ি ফিরে আসার পরিকল্পনা করে বিমানের টিকিট কেটেছিলেন পুষ্পক। শুক্রবারই তাঁর বিমানে ওঠার কথা রয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার তিনি বাড়িতে জানিয়েছেন, সেই টিকিট বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে অনেকটাই।

পুষ্পক বাড়িতে জানিয়েছেন, টার্নোপিল এলাকায় এখন রীতিমতো আতঙ্কের পরিবেশ। তবে রাজধানী থেকে অনেকটা দূরে ওই এলাকাটি। তা-ও যুদ্ধের খবর ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই এলাকার সকলে খাবার ও জল মজুত করছেন। ভিডিয়ো কলে পুষ্পক বলেন, ‘‘আমরা কয়েক জন বন্ধু একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের কয়েক জন গত বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার প্রথম চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওদের বিমানের টিকিট বাতিল হয়েছে। বিমানবন্দর থেকেই ফিরে এসেছে ওরা। স্থানীয়েরা অনেকেই পোল্যান্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেখানে যাওয়ার খরচ অনেকটাই বেশি। তাই অনেকেই পিছিয়ে আসছেন। তা ছাড়া, যুদ্ধনীতি অনুযায়ী এখন আশপাশের দেশে ঢুকে পড়া আদৌ সম্ভব কি না, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।’’

ইউক্রেন থেকে ফোনে পুষ্পক জানাচ্ছেন, যুদ্ধ ঘোষণার পর থেকেই আতঙ্কের পরিবেশে রয়েছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে তাঁদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। জল, শুকনো খাবার, রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে হু হু করে। সকাল থেকে দু’বার এলাকায় সাইরেন বাজিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ‘‘কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। কিন্তু পরিস্থিতি ভাল না।’’— ফোনে সাফ জানাচ্ছেন ওই ছাত্র।

শুক্রবার সকাল থেকে কামরাবাদের বাড়িতে বসে টিভিতে যুদ্ধ সংক্রান্ত খবরে চোখ রেখেছেন পুষ্পকের বাবা-মা। ছেলের বাড়ি ফেরার পথ চেয়ে বসে আছেন মা প্রতিভা। বলছেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সকালে এক জন অফিসার ফোন করেছিলেন। ছেলের সমস্ত নথিপত্র নিয়েছেন।’’ আর পুষ্পকের বাবা বলেন, ‘‘২০১৭ সালে ইউক্রেনের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়ে ও দেশে পড়তে গিয়েছিল পুষ্পক। কয়েক মাস আগেই ওর পড়াশোনা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে কলেজ বন্ধ থাকায় দেরি হয়েছে। গত অগস্টেই বাড়ি ফিরেছিল ছেলে। তখন অবশ্য রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কিছুই আঁচ করা যায়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ফের ও দেশে ফিরে যায়।’’

তবে ভিন্‌ দেশের কঠিন পরিস্থিতিতেও পুষ্পকের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর ভারতীয় সহপাঠীরা— এটাই খানিক স্বস্তি দিচ্ছে ওই দম্পতিকে। সুজিত বলেন, ‘‘রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারই এখন আমাদের ভরসা। ঘণ্টাখানেক অন্তর অন্তর ছেলের সঙ্গে ভয়েস কলে কথা বলছি। আর তো কিছু করার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War Ukraine Student Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE