Advertisement
E-Paper

ডাক্তারেরা গুরুত্ব দিন পেশাকেই, বলল সভা

ডাক্তারেরা কি চিকিৎসা বিজ্ঞানের তুলনায় আইনকে বেশি গুরুত্ব দেবেন? বিষয়টি নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তনীরা রবিবার আয়োজন করেছিলেন এক বিতর্কসভার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কখনও হাসপাতালের ওয়ার্ডে চড়াও হয়ে চিকিৎসককে হেনস্থা করা, কখনও আবার অপরাধমূলক আইনে অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে গ্রেফতারির হুমকি দেওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া একাধিক ঘটনায় এটাই চিকিৎসক-হেনস্থার পরিচিত ছবি। এই পরিস্থিতিতে পেশায় টিকে থাকতে চাইলে ডাক্তারেরা কি চিকিৎসা বিজ্ঞানের তুলনায় আইনকে বেশি গুরুত্ব দেবেন? বিষয়টি নিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তনীরা রবিবার আয়োজন করেছিলেন এক বিতর্কসভার।

বিতর্কে অংশ নিয়ে সাংসদ সৌগত রায় যুক্তি দিলেন, আইনি স্বীকৃতি ছাড়া চিকিৎসা বিজ্ঞানের পড়ুয়ারা যথার্থ ‘চিকিৎসক’ হয়ে উঠতে পারেন না। তাঁর মতে, মেডিক্যাল কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশন করানোর পদ্ধতি থেকেই আইনের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু হচ্ছে চিকিৎসকদের। কী ভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে, তার আইনি দিক সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হওয়া জরুরি।

যদিও সৌগতবাবুর যুক্তি মানতে নারাজ সভায় অংশগ্রহণকারী আর এক চিকিৎসক কুণাল সরকার। তিনি মনে করেন, রোগী-মৃত্যুতে উত্তেজনার পিছনে থাকে অপর্যাপ্ত পরিকাঠামো। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত হয় না। সেগুলির খেসারতও দিতে হয় চিকিৎসকদের। কুণালবাবুর কথায়, ‘‘চিকিৎসকদের প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য রোগীকে সুস্থ করে তোলা। যে কোনও চিকিৎসকের কাছে নিজের সুরক্ষার তুলনায় রোগীর সুস্থতা অনেক বেশি জরুরি।’’

চিকিৎসকদের তাইকোন্ডো শেখানোর প্রসঙ্গও উঠে আসে আলোচনায়। অংশগ্রহণকারীদের একাংশ জানান, হাসপাতালের পরিকাঠামোর উন্নতি না করে মার্শাল আর্ট শিখিয়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দেওয়া প্রহসন মাত্র। আর এক অংশের আবার প্রশ্ন, কোনও চিকিৎসককে জনা দশেক লোক ঘিরে ধরলে তাইকোন্ডোকে হাতিয়ার করেও তিনি কি আদৌ নিরাপদ থাকবেন?

তবে মার্শাল আর্টকে সুরক্ষার হাতিয়ার না মানলেও আইন জানা জরুরি। তেমনই মনে করেন বিজেপির মুখপাত্র তথা চিকিৎসক সম্বিত পাত্র। এ দিন বিতর্কে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নিজের কর্তব্য এবং অধিকার সম্পর্কে জানার জন্যই আইনের পাঠ থাকা দরকার।’’ সম্বিতবাবুর যুক্তি, ডাক্তারি পেশায় যাঁরা যুক্ত, তাঁদের কাছে সাধারণ মানুষ অনেক আশা করেন। তাই তাৎক্ষণিক কোনও পরিস্থিতিকে সামাল দিতে আইনি দিকও জানতে হবে চিকিৎসকদের।

যদিও আইনজীবী জয় সাহার কথায়, ‘‘যে কোনও পেশার নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দেওয়ার কাজও প্রশাসনের। তাই হেনস্থা রুখতে নিরাপত্তায় জোর দেওয়া হোক।’’

সময়ের সঙ্গে বদলে গিয়েছে রোগী-চিকিৎসক সম্পর্ক। পারিবারিক চিকিৎসকের ধারণারও পরিবর্তন হয়েছে। তাই দুষ্কৃতী-হামলা ঠেকাতে নয়, ন্যায়বিচার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতেই আইনি জ্ঞান রাখতে হবে চিকিৎসকদের। এমনই মত সভায় অংশগ্রহণকারী কিশোর ভিমানীর।

তবে যুক্তি, পাল্টা-যুক্তির শেষেও সভার মত, আইনের বদলে চিকিৎসকদের মন থাক স্টেথোতেই।

Health Doctor National Medical College ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy