এই ফ্ল্যাট নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন বাসিন্দারা। রবিবার, ট্যাংরায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
ফ্ল্যাটের দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষে গোলমালের জেরে শনিবার রাতে উত্তেজনা ছড়াল ট্যাংরায়। অভিযোগ, ওই রাতে ট্যাংরার দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডে একটি ফ্ল্যাট দখল করতে আসে স্থানীয় কয়েক জন যুবক। দখলে বাধা দেওয়ায় ফ্ল্যাটের মালিকের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মহম্মদ জাহিদ নামে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দেবেন্দ্রচন্দ্র দে রোডে একটি বহুতল আবাসনের চারতলায় দু’টি ফ্ল্যাটের দখলকে ঘিরে গোলমালের সূত্রপাত। ওই ফ্ল্যাটের মালিক শেখ হান্নানের অভিযোগ, ‘‘শনিবার রাতে স্থানীয় কয়েক জনকে নিয়ে আমার ফ্ল্যাট দখল করতে আসে জাহিদ। সেই সময়ে আমরা কেউ ছিলাম না। ওরা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ফ্ল্যাট দখলের চেষ্টা করে। ওই বহুতলে আমার আর একটি ফ্ল্যাট জাহিদেরা ইতিমধ্যেই দখল করে নিয়েছে। খবর পেয়ে আমার স্ত্রী ও দুই মেয়ে গিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের মারধর করে জাহিদের সঙ্গীরা। আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’’ গোলমালের খবর পেয়ে ট্যাংরা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।
রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই বহুতলটির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যে ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ ঘিরে গোলমাল, সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ফ্ল্যাটের কোল্যাপসিবল গেটে তালা দেওয়া। কিন্তু ভিতর থেকে লোকজনের গলার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ধৃত জাহিদের শাশুড়ি রহিমা বিবি বলেন, ‘‘আমি এখানেই থাকি। আমার জামাই ও শেখ হান্নান মিলে এই বাড়িটি তৈরি করেছে। যে ফ্ল্যাটটি হান্নান নিজের বলে দাবি করছেন, সেটি আসলে জাহিদের। তার প্রামাণ্য নথিপত্রও রয়েছে।’’ কথা বলতে বলতেই তিনি ওই ফ্ল্যাটের দরজায় জোরে ধাক্কা দিতে ভিতর থেকে দরজা খুললেন জাহিদের স্ত্রী শামিমা খাতুন।
শামিমার পাল্টা অভিযোগ, ‘‘শনিবার রাতে স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি, হান্নান লোকজনকে নিয়ে ফ্ল্যাট দখল করতে এসেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ফ্ল্যাটটি আমার স্বামীর নামে রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন এখানে আছি। হান্নান ফ্ল্যাট দখল করে আমাদের বিরুদ্ধে অপবাদ দিতে চাইছেন।’’ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে হান্নান বলেন, ‘‘শনিবার রাতে জাহিদই ফ্ল্যাট দখল করতে ওর স্ত্রী ও তিন সন্তানকে জোর করে সেখানে ঢুকিয়ে নাটক করছে।’’
হান্নানের পরিবারের সদস্যদের দাবি, শনিবার রাতে জাহিদের সঙ্গে যারা এসেছিল, তারা স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর জীবন সাহার অনুগামী। যদিও জীবনবাবু সেই দাবি উড়িয়ে বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। আমি ওদের কাউকে চিনি না। এটা পুরোপুরি ওই ফ্ল্যাটের আবাসিকদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’ লালবাজারের এক কর্তা জানান, ধৃত মহম্মদ জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দিন তাকে আদালতে তোলা হলে ১২ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy