রাতের কলকাতায় বাজির দৌরাত্ম্য। —ফাইল চিত্র।
দীপাবলির আগের রাতে কলকাতায় ‘শব্দদানব’-এর তাণ্ডব। কসবা থেকে কালিন্দি, সল্টলেক থেকে শোভাবাজার, বাদ গেল না কোনও এলাকাই। রাত যত বাড়ল, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেল শব্দদূষণের মাত্রা। হাসপাতাল চত্বরের সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের তফাৎ রইল না। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিসংখ্যান সে কথাই বলছে।
শনিবার রাতের দিকে কলকাতায় শহরের দিকে দিকে শুরু হয় শব্দবাজির বাড়বাড়ন্ত। সন্ধ্যা থেকে দু’এক জায়গায় শব্দবাজির আওয়াজ কানে আসছিল। রাত যত বেড়েছে, সেই আওয়াজ আরও তীব্র হয়েছে। কালিপটকা থেকে শুরু করে চকলেট বোম, কোনও শব্দবাজিই বাদ যায়নি। দূষণ বেড়েছে রাত ১টার পর।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শনিবার রাত ১২টা নাগাদ নিউ মার্কেট চত্বরে শব্দের পারদ চড়েছিল ৭৭.৭ ডেসিবেলে। ওই সময় ওই এলাকায় যা থাকার কথা ৫৫ ডেসিবেলের নীচে! কসবা শিল্পাঞ্চল। রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেখানে শব্দদূষণের মাত্রা থাকা উচিত ৭০ ডেসিবেল। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ কসবায় দূষণ পৌঁছেছিল ৮৭.৭ ডেসিবেলে। বাগবাজারের মতো নাগরিক বসত এলাকাতেও শনিবার রাতে শব্দদূষণ ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। ৪৫ ডেসিবেলের পরিবর্তে দূষণের মাত্রা পৌঁছেছিল ৬৮.৩ ডেসিবেলে।
শহরের হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকাগুলি বরাবরই ‘সাইলেন্স জ়োন’। রাতে সেখানে শব্দের মাত্রা ৪০ ডেসিবেলের বেশি হওয়ার কথাই নয়। শনিবার রাতে সেখানেও ছন্দপতন। এসএসকেএস হাসপাতালের কাছে রাত ১২টায় শব্দদূষণ ছিল ৫১.৩ ডেসিবেল। আরজি কর এলাকায় তা ৫৫.৪ ডেসিবেলে পৌঁছে গিয়েছিল। রাত ১টার পরেও দূষণ কমেনি। এসএসকেএমে তখনও শব্দদূষণের মাত্রা ছিল ৫১.৩ ডেসিবেলে। আরজি করে দূষণ ছিল ৫৪.৯ ডেসিবেল।
বাগবাজারে রাত ১টায় ৬৮.৪ ডেসিবেল, কসবায় ৮২.৫, নিউ মার্কেটে ৮৩.৮ এবং পাটুলিতে (বসত এলাকা) ৬৮.৩ পর্যন্ত উঠেছিল শব্দদূষণের পারদ। দীপাবলির আগের রাতেই যদি শহরের দূষণ পরিস্থিতি এমন হয়, তবে দীপাবলি এবং তার পরের রাতে শব্দদূষণ কতটা মাত্রাছাড়া হতে চলেছে, তা ভেবে আতঙ্কিত অনেকেই। সরকারি ভাবে শব্দবাজি ফাটানোর অনুমতি নেই শহর এবং শহরতলির অনেক এলাকাতেই। শব্দবাজি কেনাবেচাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও কালীপুজোর আগে শব্দদূষণ ঠেকানো যাচ্ছে না কেন, প্রশাসনের এ ক্ষেত্রে কী ভূমিকা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy