আধুনিক জীবনযাপন হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ক্রমে কাল হয়ে উঠছে। খাদ্যাভ্যাস ডেকে আনছে বিপদ। কী ভাবে হার্ট ভাল রাখা যায়, তা নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন অ্যাপোলো হাসপাতাল গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান প্রতাপ সি রেড্ডি। রিপোর্টে বলা হয়েছে প্যাকেটজাত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে ধীরেসুস্থে খেতে হবে। তবে নিয়ন্ত্রিত হারে।
রিপোর্ট বলছে, ভারত এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এখন মানুষ যে খাবার খাবেন, তার উপরেই নির্ভর করবে ভবিষ্যতে তাঁর হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। পুষ্টিকর খাবার খেলে হৃদ্রোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে। অবশ্যই ভারসাম্য বজায় রেখে খেতে হবে।
কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালের সিনিয়র কার্ডিওথোরাসিক এবং ভাসকুলার সার্জন সুশান মুখোপাধ্যায় মনে করেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ধীরেসুস্থে বসে খাওয়া খুব দরকার। নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খেতে হবে। এই বিষয়গুলিতে সচেতন হলেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।
রিপোর্ট বলছে, গত এক দশকে নগরায়ন, মানুষের আয়বৃদ্ধি এবং বিশ্বায়নের ছোঁয়ায় আমাদের খাওয়াদাওয়ায় বড়সড় বদল এসেছে। ভাজাভুজি, ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার, চিনি মেশানো পানীয়, প্রক্রিয়াকরণ করা প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। রেস্তরাঁ থেকে খাবার আনিয়ে খাওয়া এখন নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। জীবনযাপনের এই পরিবর্তনের কারণে আমাদের শরীর খেসারত দিচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে হৃদ্যন্ত্রের। অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বৃদ্ধি করে, ধমনি শক্ত করে স্ট্রোক ও হার্ট ফেল করার ঝুঁকি বাড়ায়। বাড়তি চিনি স্থূলতা এবং ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ডেকে আনে, যা ধমনিতে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস ত্বরান্বিত করে। ভাজাভুজি খেলে খারাপ (এলডিএল) কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়। ভাল (এইচডিএল) কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তনালিতে প্রদাহ বাড়িয়ে করোনারি আর্টারি ডিজিজকে ত্বরান্বিত করে। প্রক্রিয়াকরণ করা খাবার ভিটামিনের ঘাটতি তৈরি করে শরীরে। কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে দুর্বল করে। তাই রিপোর্টে বার বার খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের উপরেই জোর দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।